গাজায় ৬৬২ দিনে ইসরায়েলি হামলায় নিহত ফিলিস্তিনির সংখ্যা ছাড়াল ৬০ হাজার

অনলাইন ডেস্ক :

গাজা উপত্যকায় ইসরায়েলি বাহিনীর নির্বিচার হামলায় নিহত ফিলিস্তিনির সংখ্যা ক্রমশই বাড়ছে। ৬৬২ দিন ধরে চলা এই আগ্রাসনে নিহতের সংখ্যা ৬০ হাজার ছাড়িয়ে গেছে বলে জানায় গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়। অর্থাৎ প্রতিদিন গড়ে ৯০ ফিলিস্তিনিকে হত্যা করেছে দখলদার ইসরায়েলি বাহিনী। 

মঙ্গলবার (২৯ জুলাই) মন্ত্রণালয়ের সর্বশেষ দৈনিক আপডেটে বলা হয়েছে, গত ২৪ ঘণ্টায় গাজার বিভিন্ন হাসপাতালে ইসরায়েলি হামলায় ‍নিহত ১১৩ জন ফিলিস্তিনির মরদেহ এবং আহত অবস্থায় ৬৩৭ জন আনা হয়েছে।

এতে ২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর থেকে ইসরায়েলের হামলায় মোট নিহতের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৬০ হাজার ৩৪ জন, যাদের বেশির ভাগই নারী ও শিশু। এছাড়াও আহতের সংখ্যা বেড়ে ১ লাখ ৪৫ হাজার ৮৭০ জনে দাঁড়িয়েছে।

এতে আরও বলা হয়েছে, অনেক ভুক্তভোগী এখনও ধ্বংসস্তূপের নিচে এবং রাস্তায় আটকা পড়েছেন, ইসরায়েলি হামলা অব্যাহত থাকার কারনে উদ্ধারকারীরা তাদের কাছে পৌঁছাতে পারছেন না। 

গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের তথ্য অনুযায়ী, গাজা উপত্যকার হাসপাতালগুলোতে গত ২৪ ঘণ্টায় দুর্ভিক্ষ ও অপুষ্টির কারণে নতুন করে ১৪ জনের মৃত্যুর খবর পাওয়া গেছে। এ নিয়ে ২০২৩ সালের অক্টোবরে যুদ্ধ শুরুর পর ক্ষুধাজনিত কারণে নিহত ফিলিস্তিনির সংখ্যা ১৪৭ জনে দাঁড়িয়েছে, যার মধ্যে ৮৮ জনই শিশু।

অন্যদিকে গাজার সরকারি মিডিয়া অফিস জানিয়েছে, গত ২৬ মে গাজা হিউম্যানিটেরিয়ান ফাউন্ডেশন (জিএইচএফ) ত্রাণ বিতরণ শুরু করার পর থেকে প্রায় প্রতিদিনই তাদের খোলা চারটি ত্রাণ কেন্দ্রের কাছে প্রাণহানির ঘটনা ঘটেছে। ইসরায়েলি বাহিনীর এই ‘মৃত্যুর ফাঁদে’ এখন পর্যন্ত  ১ হাজারের বেশি ফিলিস্তিনি নিহত এবং ৬ হাজারের বেশি মানুষ আহত হয়েছেন। এছাড়াও এখনো নিখোঁজ রয়েছেন বহু ফিলিস্তিনি।

এদিকে জাতিসংঘের বিশ্ব খাদ্য কর্মসূচি (ডব্লিউএফপি) জানিয়েছে, গাজা উপত্যকা বর্তমানে তার ইতিহাসের সবচেয়ে খারাপ মানবিক সংকটের মধ্য দিয়ে যাচ্ছে। বিশেষ করে চলতি বছরের ২ মার্চ থেকে গাজার সব সীমান্ত ক্রসিং সম্পূর্ণরূপে বন্ধ করে খাদ্য, চিকিৎসা সরবরাহ এবং মানবিক সাহায্যের প্রবেশ ইসরায়েলি অবরোধের কারণে পরিস্থিতি আরও ভয়াবহ রুপ নিয়েছে। 

ডব্লিউএফপির অনুমান অনুসারে, ইসরায়েলি অবরোধের কারণে গাজার জনসংখ্যার এক-তৃতীয়াংশ একটানা বেশ কয়েক দিন ধরে কিছু না খেয়ে আছে। এরমধ্যে ১ লাখ নারী ও শিশু তীব্র অপুষ্টিতে ভুগছে। 

ফিলিস্তিনি কর্মকর্তা এবং অধিকার গোষ্ঠীগুলো উপত্যকাজুড়ে ক্ষুধার কারণে মৃত্যুর সংখ্যা ক্রমেই আরও বাড়তে পারে বলে সতর্ক করেছেন, বিশেষ করে শিশু, অসুস্থ এবং বয়স্কদের মধ্যে চরম অপুষ্টি দেখা দিয়েছে সূত্র: আলজাজিরা

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *