

নিজস্ব প্রতিবেদক, কুষ্টিয়া :
আজ ১১ ডিসেম্বর, কুষ্টিয়া মুক্ত দিবস। ১৯৭১ সালের এ দিনে মুক্তিযুদ্ধের সূতিকাগার কুষ্টিয়া জেলা পাক হানাদার বাহিনী মুক্ত হয়।
পাক হানাদার বাহিনীর অত্যাচার-নির্যাতন, আক্রমণ এ জেলায় ছিল সবচেয়ে বেশি। তবে এ জেলায় হানাদার বাহিনী শুরুতেই মুক্তিবাহিনীর প্রতিরোধের মুখে পড়ে।
১৯৭১ সালের ৩০ মার্চ ভোরে মুক্তিবাহিনী কুষ্টিয়া জিলা স্কুলে পাকিস্তানি হানাদারদের ক্যাম্পে হামলা চালান।
এতে অসংখ্য পাকিস্তানি সেনা নিহত হয়। ১ এপ্রিল পাকিস্তানি বাহিনী কুষ্টিয়া ছেড়ে পালিয়ে যায়। প্রথমবারের মতো মুক্ত হয় কুষ্টিয়া।
পরবর্তীতে ১০ এপ্রিল মুজিবনগর সরকার গঠন করা হয়। এরপর দফায় দফায় বিমান হামলা চালিয়ে ১৬ দিন পর আবারও কুষ্টিয়া দখল করে নেয় পাকবাহিনী। বংশীতলা, দুর্বাচারা, আড়পাড়া, মঠবাড়িয়া, মিরপুরের কাকিলাদহ, কুশলীবাসা, কুমারখালীর ঘাসখালিসহ জেলার বিভিন্ন স্থানে ছোট-বড় ১২৭টি রক্তক্ষয়ী যুদ্ধ হয়।
মুক্তি ও মিত্রবাহিনীর যৌথ আক্রমণে ৯ ডিসেম্বর শহর ছাড়া অন্য এলাকা মুক্ত হয়। ১০ ডিসেম্বর রাতে পাক বাহিনী ভেড়ামারা পাকশী ঘাট হয়ে ঢাকার উদ্দেশ্যে কুষ্টিয়া ছেড়ে চলে যায়। ১১ ডিসেম্বর পুরোপুরি মুক্ত হয় কুষ্টিয়া।
এ দিন হাজার হাজার মানুষ বিজয়ের স্লোগান দিতে দিতে রাস্তায় নেমে আসেন। পথে প্রান্তরে গড়ে তোলা হয়েছিল ব্যারিকেট। লাঠি-সড়কি, ঢাল-তলোয়ার নিয়ে উপজেলার হরিপুর-বারখাদা, জুগিয়া, আলামপুর, দহকোলা, জিয়ারুখী, কয়া, সুলতানপুর, পোড়াদহ, বাড়াদিসহ বিভিন্ন গ্রাম থেকে সেদিন মানুষ ছুটে এসেছিলেন কুষ্টিয়া শহরে। মুক্তির আনন্দে মাতোয়ারা হয়েছিলেন তারা।
তবে স্বাধীনতার ৫৪ বছর পার হলেও আজও অবহেলিত কুষ্টিয়ার মুক্তিযুদ্ধের স্মৃতিবিজড়িত স্থানগুলো। নেওয়া হয়নি কোনো সংস্কার বা সংরক্ষণের উদ্যোগ।
এ বিষয়ে কুষ্টিয়ার অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক জাহাঙ্গীর আলম বলেন, কোথায়ও কোনো সংস্কারের প্রয়োজন হলে তারা (মুক্তিযোদ্ধারা) আমাদের কাছে তথ্য পাঠালে আমরা সেটি সংস্কারের জন্য মন্ত্রণালয়ে পাঠিয়ে দেবো। পরবর্তীতে সরকারের পক্ষ থেকে চেষ্টা করব দ্রুত কিভাবে সংস্কার করা যায়।
এদিকে দিবসটি উদযাপন উপলক্ষে আজ বৃহস্পতিবার জেলা প্রশাসন, জেলা মুক্তিযোদ্ধা কমান্ড ইউনিটসহ বিভিন্ন সংগঠন দিনব্যাপী নানা কর্মসূচির আয়োজন করেছে।









