ভিডিও কনফারেন্সে কাল থেকে জামিন শুনানি শুরু

অনলাইন ডেস্ক : তথ্য-প্রযুক্তি ব্যবহার করে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে মামলার শুনানির জন্য প্রস্তুত করা হয়েছে দেশের অধস্তন আদালতসমূহ।

গত রবিবার (১০ মে) সুপ্রিমকোর্টের আদেশের পরিপ্রেক্ষিতে নিম্ন-আদালত শুনানি গ্রহণের প্রস্তুতি নিতে শুরু করে।
এ কারণে ঢাকার মুখ্য মহানগর হাকিম আদালত চারজন মহানগর হাকিমকে দায়িত্ব দিয়ে চারটি ভার্চুয়াল কোর্ট গঠন করেছেন।

সোমবার দুপুরের দিকে মুখ্য মহানগর হাকিম এ এম জুলফিকার হায়াত এই আদেশ জারি করেন।

মহানগর হাকিম সরাফুজ্জামান আনছারী ভার্চুয়াল কোর্ট-১ এর বিচারক হিসেবে দায়িত্ব পালন করবেন। ভার্চুয়াল কোর্ট-২ এর বিচারক হিসাবে সাদবীর ইয়াছির আহসান চৌধুরী, ভার্চুয়াল কোর্ট-৩ এর বিচারক হিসাবে দেবদাস চন্দ্র অধিকারী ও ভার্চুয়াল কোর্ট-৪ এর বিচারক হিসাবে রাজেশ চৌধুরী দায়িত্ব পালন করবেন।

ঢাকা মহানগরের থানাগুলোকে চারভাগে ভাগ করে চারজন বিচারককে দায়িত্ব দেয়া হয়েছে। থানা অনুযায়ী মামলার আসামিদের পক্ষে জামিন শুনানির আবেদন করতে চারটি ই-মেইল ও ই-ফাইলিং লিংক দেয়া হয়েছে যার মাধ্যমে জামিন আবেদন করতে হবে।

একইভাবে ঢাকার মুখ্য বিচারিক হাকিম সৈয়দ মাসফিকুল ইসলাম ঢাকা জেলার থানাগুলোতে দায়ের করা মামলার আসামিদের জামিন শুনানির জন্য দুটি ভার্চুয়াল কোর্ট গঠন করেছেন। বিচারিক হাকিম মো. মনিরুজ্জামান সিকদার ও রাজিব হাসান যথাক্রমে ভার্চুয়াল কোর্ট-১ ও ভার্চুয়াল কোর্ট-২ এর দায়িত্ব পালন করবেন বলে অধ্যাদেশে বলা হয়েছে।

ঢাকা জেলার থানাগুলোকে দুই ভাগে ভাগ করে এই আদালত গঠন করা হয়েছে। এই আদালতেও শুনানির জন্য ই-ফাইলিং ও ই-মেইলে আবেদন করতে হবে। দুটি লিংকই আদেশে উল্লেখ করা হয়েছে।

একইভাবে মহানগর দায়রা জজ এবং ঢাকা জেলা ও দায়রা জজও জরুরি জামিন আবেদনের ওপর শুনানি গ্রহণ করবেন। একই প্রক্রিয়ায় জামিনের আবেদন করতে হবে। তবে এসব আদালতে আপাতত শুধুমাত্র হাজতে থাকা আসামিদের জামিন শুনানি গ্রহণ করা হবে। কোনো আসামির আত্মসমর্পণ বা মামলার সাক্ষ্যগ্রহণ, যুক্তিতর্ক, রায় এসব গ্রহণ করা হবে না। দেওয়ানি মামলার কোনো শুনানি আপাতত হবে না।

করোনাভাইরাসের প্রাদুর্ভাবের কারণে সরকারি, বেসরকারি, অফিস আদালত ছুটি ঘোষণা করা হয় গত ২৬ মার্চ থেকে। দেড় মাসেরও বেশি সময় ধরে আদালতও ছুটি। এই অবস্থায় আইনজীবীদের বিভিন্ন সমিতি নিম্ন আদালতে ভিডিও কনফারেন্সে শুনানির নির্দেশনা দাবি করে। সীমিতি আকারে আদালত চালুর সিদ্ধান্তও একবার দেয়া হয়। কিন্তু করোনার বর্তমান পরিস্থিতি বিবেচনায় নিয়ে আবার ওই সিদ্ধান্ত স্থগিত করা হয়।

পরে রবিবার প্রধান বিচারপতি সৈয়দ মাহমুদ হোসেনের নির্দেশক্রমে সুপ্রিম কোর্টেও রেজিস্ট্রার জেনারেল মো. আলী আকবর নিম্ন আদালতসমূহে জামিন শুনানি গ্রহণের জন্য নির্দেশনা জারি করেন।

এর আগে গত শনিবার শনিবার (৯ মে) আদালতে তথ্য-প্রযুক্তি ব্যবহার অধ্যাদেশ-২০২০-এর খসড়া নীতিগত ও চূড়ান্ত অনুমোদন দিয়ে অধ্যাদেশ জারি করেন রাষ্ট্রপতি মো. আব্দুল হামিদ। ফলে ভিডিও কনফারেন্সসহ ভার্চুয়াল মাধ্যমে আদালত পরিচালনার পথ খুলে যায়। এতে মামলার বিচার, বিচারিক অনুসন্ধান, দরখাস্ত বা আপিল শুনানি, সাক্ষ্যগ্রহণ, যুক্তিতর্ক গ্রহণ, আদেশ বা রায় প্রদানকালে বিভিন্ন পক্ষেও প্রতিনিধিরা ভার্চুয়াল মাধ্যমে উপস্থিত থাকতে পারবেন।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *