খালেদা জিয়াকে বিদেশে চিকিৎসার সুযোগ দিতে সাংবাদিকদের আহ্বান

অনলাইন ডেস্ক :

 

দেশের দুই হাজার পাঁচ শত বিরাশি (২৫৮২) জন সাংবাদিক সাবেক প্রধানমন্ত্রী বিএনপি চেয়ারপার্সন বেগম খালেদা জিয়াকে মুক্তি দিয়ে বিদেশে উন্নত চিকিৎসার সুযোগ দেয়ার জন্য সরকারের কাছে দাবি জানিয়েছেন। বুধবার এক বিবৃতিতে তারা এই দাবি জানান।

বিবৃতিতে সাংবাদিকরা বলেন, বেগম খালেদা জিয়া গুরুতর অসুস্থ অবস্থায় বর্তমানে রাজধানীর এভারকেয়ার হাসপাতালের সিসিইউতে চিকিৎসাধীন রয়েছেন। ডাক্তাররা জানিয়েছেন, তিনি এখন জীবন মৃত্যুর সন্ধিক্ষণের মত অবস্থানে চলে গেছেন। দেশে তাঁকে চিকিৎসা দেওয়ার মতো আর কিছু বাকি নেই। খালেদা জিয়াকে বাঁচাতে হলে বিদেশে অ্যাডভানস সেন্টারে নিয়ে ট্রিটমেন্ট প্রয়োজন। তাই আমরা সরকারকে রাজনীতির ঊর্ধ্বে উঠে মানবিক দিক বিবেচনা করে তাকে অবিলম্বে বিদেশে চিকিৎসা নেওয়ার সুযোগ দেওয়ার আহ্বান জানাই।

সাংবাদিকরা বিবৃতিতে বলেন, সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়ার বয়স এখন ৭৬ বছর। প্রবীণ বয়সেও তিনি জেলবন্দি। অবশ্য সরকারের বিশেষ অনুমতিতে শর্তযুক্ত মুক্তিতে তিনি এখন নিজ বাসভবনে অবস্থান করছেন। তবে নানা রোগে আক্রান্ত হয়ে তিনি অত্যন্ত অসুস্থ।

দীর্ঘ চার বছর তার যথাযথ কোনো চিকিৎসা হয়নি। কারাগারে অমানবিক পরিবেশেও তিনি অনেক নতুন রোগে আক্রান্ত হয়েছেন। হার্টের সমস্যা, লিভারের সমস্যা, কিডনি ও চোখের সমস্যা ছাড়াও পুরনো আর্থ্রাইটিস এবং নতুন করে কভিড-১৯ আক্রান্ত হওয়া ও কভিড পরবর্তী জটিলতায় তার শারীরিক অবস্থা খুবই ঝুঁকিপূর্ণ।

ব্যক্তিগত চিকিৎসক সাংবাদিকদের কাছে তার অসুস্থতার যে বিবরণ দিয়েছেন, তা খুবই উদ্বেগজনক। আমরা মনে করি, দেশের একজন শীর্ষ রাজনীতিক, একজন সাবেক প্রধানমন্ত্রী, বয়োজেষ্ঠ নাগরিক, একজন নারী হিসেবে উপরন্তু একজন জেলবন্দি ব্যক্তির যথাযথ সুচিকিৎসা পাওয়া ন্যূনতম মানবাধিকারের অংশ। তার মৌলিক অধিকার ও ন্যায়বিচার নিশ্চিত করা জাতি হিসেবে আমাদের দায়িত্ব ও কর্তব্য। আমরা তাই আদালতের মাধ্যমে তাকে স্থায়ী জামিনে মুক্তি দিয়ে বিদেশে উন্নত চিকিৎসার সুযোগ দেওয়ার জন্য সরকারের প্রতি আহ্বান জানাই।

সাংবাদিকরা আরো বলেন, খালেদা জিয়া দেশের তিনবারের নির্বাচিত প্রধানমন্ত্রী। তিন যুগেরও বেশি সময় ধরে তিনি এদেশের রাজনীতির সঙ্গে জড়িত। বিএনপির মতো দেশের অন্যতম বড় এবং জনপ্রিয় রাজনৈতিক দলের তিনি চেয়ারপারসন।

তারা বলেন, বাংলাদেশের স্বাধীনতা, সার্বভৌমত্ব, বহুদলীয়, গণতন্ত্র, বিচার বিভাগের স্বাধীনতা, সংবাদপত্রের স্বাধীনতা এবং এদেশের উন্নয়নে খালেদা জিয়ার অসামান্য অবদান রয়েছে। ১৯৭৪ সালের বিশেষ ক্ষমতা আইনে সরকার কর্তৃক সংবাদপত্র বন্ধ করে দেওয়ায় সরকারি ক্ষমতা প্রত্যাহারসহ পত্রিকার ডিক্লারেশন প্রাপ্তিকে সহজ করে দিয়েছিলেন। আকাশ-সংস্কৃতির দরজা খুলে দেওয়ার পাশাপাশি জাতীয় প্রেস ক্লাবের জন্য সরকারি জমির বরাদ্দ চিরস্থায়ী করে দিয়েছিলেন।

বিবৃতিতে স্বাক্ষরকারীদের মধ্যে রয়েছেন রিয়াজ উদ্দিন আহমেদ (সম্পাদক, ফাইন্যান্সিয়াল হেরাল্ড, সাবেক সভাপতি জাতীয় প্রেস ক্লাব), আলমগীর মহিউদ্দিন (সম্পাদক, দৈনিক নয়া দিগন্ত), আমানউল্লাহ (সাবেক প্রধান সম্পাদক, বাসস), আবুল আসাদ (সম্পাদক, দৈনিক সংগ্রাম), শওকত মাহমুদ (সাবেক সভাপতি, জাতীয় প্রেস ক্লাব), ড. রেজোয়ান সিদ্দিকী (সম্পাদক, দৈনিক দিনকাল), মোস্তফা কামাল মজুমদার (সম্পাদক, দ্য নিউ নেশন), সালাহ উদ্দিন মোহাম্মদ বাবর (ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক, নয়া দিগন্ত), সৈয়দ মেজবাহ উদ্দিন আহমেদ (উপদেষ্টা সম্পাদক, বাংলাদেশ খবর), কবি আবদুল হাই শিকদার (সাংবাদিক ও কবি), এরশাদ মজুমদার (সাংবাদিক ও কবি), আমিনুর রহমান সরকার (সাবেক ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক, দৈনিক দিনকাল), আল মুজাহিদি (সাংবাদিক ও কবি), এম আবদুল্লাহ (সভাপতি, বাংলাদেশ ফেডারেল সাংবাদিক ইউনিয়ন), নুরুল আমিন রোকন (মহাসচিব, বাংলাদেশ ফেডারেল সাংবাদিক ইউনিয়ন), এমএ আজিজ (সাবেক মহাসচিব, বাংলাদেশ ফেডারেল সাংবাদিক ইউনিয়ন), কাদের গনি চৌধুরী (সভাপতি, ঢাকা সাংবাদিক ইউনিয়ন), কামাল উদ্দিন সবুজ (সাবেক সভাপতি, জাতীয় প্রেস ক্লাব), সৈয়দ আবদাল আহমদ (নির্বাহী সম্পাদক দৈনিক আমার দেশ, সাবেক সাধারণ সম্পাদক জাতীয় প্রেস ক্লাব), মাসুমুর রহমান খলিলী (উপ সম্পাদক, দৈনিক নয়া দিগন্ত), ইলিয়াস খান (সাধারণ সম্পাদক, জাতীয় প্রেস ক্লাব), শহিদুল ইসলাম (সাধারণ সম্পাদক, ঢাকা সাংবাদিক ইউনিয়ন), মুরসালিন নোমানী (সভাপতি, ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটি), মুনশী আবদুল মান্নান (সাবেক সাধারণ সম্পাদক, ঢাকা সাংবাদিক ইউনিয়ন), বাকের হোসাইন (সাবেক সাধারণ সম্পাদক, ঢাকা সাংবাদিক ইউনিয়ন), জাহাঙ্গীর আলম প্রধান (সাবেক সাধারণ সম্পাদক) প্রমুখ।

সূত্র :কালের কণ্ঠ

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *