বেনাপোল দিয়ে পূজার ছুটিতে ভারত ভ্রমণে দ্বিগুণ চাপ, সেবা নিয়ে হতাশ যাত্রীরা

বেনাপোল প্রতিনিধি :

 

হিন্দু সম্প্রদায়ের সবচেয়ে বড় ধর্মীয় উৎসব দুর্গাপূজায় বেনাপোল দিয়ে ভারত ভ্রমণে বেড়েছে পাসপোর্টধারীদের যাতায়াত। টানা পাঁচ দিনের ছুটিতে পরিবার নিয়ে অনেকে পূজা উপভোগ ও দর্শনীয় স্থানে ভ্রমণ করতে যাচ্ছেন। কেউ যাচ্ছেন চিকিৎসা সেবা নিতে ও ব্যাবসায়িক কাজে। আবার অনেকে আসছেন ভারত থেকে বাংলাদেশে।

এদিকে যাত্রীদের ভ্রমণ কর প্যাসেঞ্জার টার্মিনাল চার্জ দিন দিন বাড়লেও কোনো ধরনের সেবার মান বাড়েনি। রয়েছে দালালের হয়রানি ও প্রতারণা। তবে বন্দর কর্তৃপক্ষ বলছে, সেবা বাড়াতে জায়গা অধিগ্রহণসহ বিভিন্ন কার্যক্রম চলমান। 

ইমিগ্রেশন সূত্রে জানা গেছে, গত ৩ দিনে ১৯ হাজার ৬২৭ জন পাসপোর্ট যাত্রী ভারত-বাংলাদেশের মধ্যে যাতায়াত করেছেন।

 শনিবারও ৭ থেকে ৮ হাজার যাত্রী যাতায়াত করবে বলে তাদের ধারনা। এর মধ্যে ১৮ অক্টোবর ভারতে যাতায়াত করেছেন ৫ হাজার ৬৪৮ জন, ১৯ অক্টোবর ৬ হাজার ৫৮৯ জন, ২০ অক্টোবর ৭ হাজার ৩৯০ জন। শনিবার সকাল ১১টা পর্যন্ত প্রায় ৫ হাজার যাত্রী যাতায়াত করেছেন। এখনো চেকপোস্ট এলাকায় দীর্ঘ লাইন দেখা গেছে।
 

পাসপোর্টধারীরা জানান, গত কয়েক বছর করোনা পরিস্থিতির কারণে বিভিন্ন বিধিনিষেধ থাকায় পাসপোর্টধারীরা ইচ্ছেমতো ভারত-বাংলাদেশের মধ্যে যাতায়াত করতে পারেননি। তবে এখন এসব নিষেধাজ্ঞা তুলে নেওয়ায় ভারত ভ্রমণে আর কোনো বাধা নেই। এবার পূজায় বাংলাদেশে ছুটির সময় কম থাকলেও ভারতে টানা ৪ দিন সরকারি ছুটি থাকছে। দুই দেশের মিলে ২০ অক্টোবর থেকে ২৪ অক্টোবর পর্যন্ত টানা ৫ দিন ছুটি পড়েছে। এতে লম্বা ছুটি পেয়ে পরিবার নিয়ে পূজা উপভোগ করতে, দর্শনীয় স্থান ভ্রমণ আবার কেউ চিকিৎসা ও ব্যাবসায়িক কাজে ছুটছেন ভারতে।বাংলাদেশের দর্শনীয় স্থানের উদ্দেশে ভারত থেকেও অনেকে আসছেন।

 

বর্তমানে ভারত ভ্রমণে বাংলাদেশ সরকারকে প্রত্যেক শিশুর জন্য ৫৫৫ টাকা ও বড়দের ১০৫৫ টাকা ভ্রমণ কর ও টার্মিনাল চার্জ এবং ভারত সরকারকে ভিসা ফি বাবদ ৮৪০ টাকা দিলেও সুবিধা বাড়েনি। বন্দরে যাত্রী ছাউনি না থাকায় গভীর রাত থেকে ঠাণ্ডা, রোদ-বৃষ্টি মধ্যে সড়কের ওপর দীর্ঘ লাইন ধরে দাঁড়াতে হয় যাত্রীদের। রয়েছে দালাল চক্রের হয়রানি। দ্রুত কাজ করে দেওয়ার কথা বলে দালালরা টাকা নিয়ে প্রতারণা করছে। এই অবস্থায় সেবা বাড়ানোর দাবি জানিয়েছেন ভুক্তভোগীরা।

 

ভারতগামী যাত্রী শ্যামল রায়, শান্তিবালা বলেন, পূজায় ভারতে যাচ্ছি। তবে ভারত ভ্রমণে ভোগান্তির শেষ নেই। শনিবার ভোর সাড়ে ৩টা থেকে সকাল ৮টা পর্যন্ত লাইনে দাঁড়িয়েও ইমিগ্রেশন শেষ করতে পারিনি। এ ছাড়া দালালদের দৌরাত্ম্য খুব বেশি। সেবা বাড়ানো দরকার বলে মনে করি।

 

ভারত থেকে আসা যাত্রী প্রিয়া মুখার্জি, নমিতা মন্ডল বলেন, ‘বাংলাদেশে এসেছি স্বজনদের সঙ্গে দেখা করতে। এক সাথে পূজার আনন্দ করতে। সময় পেলে দর্শনীয় স্থানগুলো ঘুরব।’

 

বেনাপোল স্থলবন্দরের আর্মড ব্যাটালিয়ন ক্যাম্পের পুলিশ পরিদর্শক সঞ্জিব কুমার বড়ই বলেন, যাত্রীর চাপ বাড়ায় কিছুটা বিশৃঙ্খলা হচ্ছে। তবে সব ধরনের হয়রানি ছাড়া পারাপারে সর্বোচ্চ চেষ্টা করা হচ্ছে।

 

বেনাপোল স্থলবন্দরের ভারপ্রাপ্ত পরিচালক রেজাউল করিম জানান, স্বাভাবিক সময়ে এ পথে যাতায়াতকারী পাসপোর্টধারী যাত্রীর সংখ্যা ৪ হাজার হলেও বর্তমানে পূজার কারণে এই সংখ্যা বেড়ে দ্বিগুণে দাঁড়িয়েছে। তবে সেবা বাড়াতে জায়গা অধিগ্রহণসহ বিভিন্ন কার্যক্রম চলছে। তিনি আরো বলেন, সামনে এমন সময় আসছে যখন কারোর কোনো অভিযোগ থাকবে না। এটা সময়ের ব্যাপার মাত্র।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *