‘শান্তিপূর্ণ ভোটে বাধা দিলে সর্বোচ্চ ব্যবস্থা’

অনলাইন ডেস্ক :

 

দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের ভোটগ্রহণের দিন হরতাল ডেকেছে বিএনপি। দলটির নতুন কর্মসূচি অনুযায়ী, আগামী শনিবার (৬ জানুয়ারি) সকাল ৬টা থেকে ৮ জানুয়ারি সোমবার সকাল ৬টা পর্যন্ত ৪৮ ঘণ্টার হরতাল পালন করবে তারা। এর মধ্যে রোববার (৭ জানুয়ারি) দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের ভোটগ্রহণ হবে।

 

তবে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী বলছে, ভোটের দিন ভোট দিতে বাধা দেওয়ার চেষ্টা কিংবা ভোট দিতে নিরুৎসাহিত করা হলে আইন অনুযায়ী সর্বোচ্চ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

 

সার্বিক আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি মোকাবিলায় গত ২৯ ডিসেম্বর থেকে সারাদেশে মাঠে নেমেছে পুলিশ, র‌্যাব, বিজিবি, ব্যাটালিয়ন আনসার, এপিবিএন এবং কোস্টগার্ড। আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর এ সংস্থাগুলো নিরাপত্তা রক্ষায় স্ট্রাইকিং ফোর্স হিসেবে দায়িত্ব পালন করবে। এছাড়া গতকাল ৩ জানুয়ারি থেকে মাঠে নেমেছে সশস্ত্র বাহিনী।

 

ভোটের দিন হরতালের বিষয়ে জানতে চাইলে র‌্যাবের লিগ্যাল অ্যান্ড মিডিয়া উইংয়ের পরিচালক কমান্ডার খন্দকার আল মঈন জানান, ‘সুষ্ঠু ও শান্তিপূর্ণ ভোটাধিকারে যারা বাধা দেবে তাদের বিরুদ্ধে আইন অনুযায়ী সর্বোচ্চ ব্যবস্থা নেওয়া হবে। এছাড়া যারা ভোটদানে নিরুৎসাহিত করবে, গোয়েন্দা তথ্যের ভিত্তিতে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

 

তিনি বলেন, জাতীয় সংসদ নির্বাচন অবাধ, সুষ্ঠু ও শান্তিপূর্ণ অনুষ্ঠানের লক্ষ্যে শান্তি-শৃঙ্খলা রক্ষায় রাজধানীসহ সারাদেশে র‌্যাব মোতায়েন করা হয়েছে। নির্বাচন কমিশনের নির্দেশনা অনুযায়ী র‌্যাব ফোর্সেস ২৯ ডিসেম্বর থেকে ১০ জানুয়ারি পর্যন্ত মোবাইল ও স্ট্রাইকিং ফোর্স হিসেবে সব নির্বাচনী এলাকায় দায়িত্ব পালন করছে। আইনশৃঙ্খলা নিয়ন্ত্রণে প্রয়োজনে হেলিকপ্টার ও ডগ স্কোয়াড নিয়োগ করা হবে।

 

জানতে চাইলে ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) অতিরিক্ত কমিশনার (ক্রাইম অ্যান্ড অপস) ড. খ. মহিদ উদ্দিন জাগো নিউজকে বলেন, ‘এখন পর্যন্ত নির্বাচনের পরিবেশ শান্তিপূর্ণ রয়েছে। সব আসনের প্রার্থী তাদের প্রচার-প্রচারণা চালাচ্ছেন। ভোটার ও প্রার্থীদের মধ্যে উৎসবমুখর পরিবেশ বিরাজ করছে। এরমধ্যে একটি রাজনৈতিক দল হরতালের ডাক দিয়েছে। ভোট দেওয়া একজন নাগরিকের গণতান্ত্রিক অধিকার। সেই অধিকার যারা খর্ব করবে অথবা ভোটদানে বাধা দেবে তাদের বিরুদ্ধে পুলিশ ব্যবস্থা নেবে। এরই মধ্যে নির্বাচন কমিশন থেকে যে নির্দেশনা দেওয়া হচ্ছে পুলিশ সেই মোতাবেক কাজ করছে। ভোটের দিন হরতাল দিয়ে ভোট বাধাগ্রস্ত করতে চাইলে বরদাশত করা হবে না।

 

জানা যায়, জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ভোটকেন্দ্র, প্রার্থী, ভোটার, প্রিসাইডিং অফিসার ও রিটার্নিং অফিসারসহ সবার নিরাপত্তা দিতে এরই মধ্যে নির্বাচনী ছক তৈরি করেছে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী। নির্বাচন সুষ্ঠু করতে মাঠে মোতায়েন করা রয়েছে সাড়ে সাত লাখের বেশি আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্য। যা গত একাদশ সংসদ নির্বাচনের চেয়ে এক লাখ ৩০ হাজার বেশি।

 

পুলিশ সদরদপ্তর সূত্রে জানা যায়, নির্বাচনে সেনাবাহিনী, র‌্যাব, বিজিবি, আনসার ও কোস্টগার্ডের সদস্যরা মাঠে থাকলেও নিরাপত্তার মূল দায়িত্বে থাকবে পুলিশ। নির্বাচনে পুলিশের প্রায় ৮০ শতাংশ সদস্য ভোটের মাঠে মোতায়েন থাকছে। নির্বাচনী দায়িত্ব পালনের জন্য অধিকাংশ জায়গায় বিরতিহীনভাবে ডিউটি থাকবে পুলিশ সদস্যদের। আবার কিছু জায়গায় থাকবে শিফটিং ও মোবাইল টহল। নিশ্ছিদ্র নিরাপত্তা দিতে পুলিশ সদস্যরা নিজেদের ও অন্য বাহিনীর সঙ্গে সমন্বয় করে কাজ করছে।

 

ঝুঁকিপূর্ণ কেন্দ্রে পুলিশের বাড়তি ফোর্স মোতায়েন রয়েছে। কোনো কোনো দুর্গম এলাকার কেন্দ্রও ঝুঁকিপূর্ণ। সেগুলোর জন্য থাকছে বাড়তি ফোর্স। নির্বাচনী এলাকা থেকে পুলিশ যে কোনো অভিযোগ পেলে তা গুরুত্বের সঙ্গে আমলে নিয়ে নিরপেক্ষভাবে তদন্ত করছে। পুলিশের কাছে সব প্রার্থী সমান। প্রচার-প্রচারণার ক্ষেত্রে সব প্রার্থী যেন সমান সুযোগ পান, এর নির্দেশনা দেওয়া আছে।

 

সার্বিক আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি মোকাবিলায় সারাদেশে এরই মধ্যে মাঠে নেমেছে র‌্যাব, বিজিবি, ব্যাটালিয়ন আনসার, এপিবিএন এবং কোস্টগার্ড। আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর এ সংস্থাগুলো নিরাপত্তা রক্ষায় স্ট্রাইকিং ফোর্স হিসেবে দায়িত্ব পালন করবে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *