হোলি উৎসবে মাতোয়ারা বাঙালি সনাতন ধর্মাবলম্বীরা

ডিপি ডেস্ক :

 

দোল পূর্ণিমা উপলক্ষে হোলি উৎসবে মেতে ওঠেন বাঙালি হিন্দু (সনাতন) ধর্মাবলম্বীরা। পরিবারের সদস্য, বন্ধু-বান্ধব ও প্রতিবেশীদের আবির মাখিয়ে উদযাপন করা হয়েছে হোলি উৎসব। আজ সোমবার (২৫ মার্চ) রাজধানী ঢাকাসহ সারাদেশেই ছিল এই উৎসবের আমেজ।

 

রাজধানীর পুরান ঢাকার স্বামীবাগ, লক্ষ্মীবাজার, তাঁতিবাজার, গোপিবাগ, শাঁখারীবাজার এলাকা ঘুরে দেখা যায়, হিন্দু ধর্মাবলম্বী শিশু থেকে বৃদ্ধ সব বয়সী মানুষ আবির খেলায় মেতেছিলেন।

তারা দল বেঁধে থালায় করে আবির ও ফুল নিয়ে মন্দিরে ভগবান শ্রীকৃষ্ণকে আবির মাখিয়ে ও পূজা দিয়েছেন। এরপর তারা মেতে ওঠেন রঙ খেলায়। হোলির আনন্দ সবচেয়ে বেশি শিশু ও কিশোর-কিশোরীদের ছুঁয়েছিল। তাদেরকে দৌঁড়ঝাপ আর আবির মাখানোতে ব্যস্ত থাকতে দেখা গেছে।
 

হোলি ছাড়াও সনাতম ধর্মাবলম্বীদের যেকোনো ধর্মীয় আয়োজনে সবচেয়ে বেশি উৎসবমুখর থাকে পুরান ঢাকায় শাঁখারীবাজার। হোলিতেও তার ব্যতিক্রম হয়নি। প্রতিবছরের মতো এবারও উৎসবের রঙে রেঙেছে শাঁখারী বাজার। ঢাকার বিভিন্ন প্রান্ত থেকে এসে শাঁখারীবাজারে উৎসবে যোগ দিয়েছেন তরুণ-তরুণীরা।

এসেছেন বিদেশিরাও। তবে এবছর পবিত্র রমজান মাস থাকায় উৎসবে মানুষের উপস্থিতি ছিল কম। 

শাঁখারীবাজারের বাসিন্দা সুমন মালাকার বলেন, ‘প্রতিবছর সারা ঢাকা থেকে লোক আসে শাঁখারীবাজারে হোলি খেলতে। সব ধর্মের মানুষ আসে এখানে। ফলে এটি একটি সর্বজনীন উৎসবে পরিণত হয়েছে এবার।

তবে এবার রোজার কারণে উপস্থিতি কম।’ 

রাজধানীর উত্তরা থেকে বন্ধুদের সঙ্গে শাঁখারীবাজারে এসেছিলেন ব্র্যাক বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী রাত্রী বিশ্বাস। তিনি বলেন, ‘প্রতিবছরই হোলিতে পুরান ঢাকা আসি। শাঁখারীবাজারে হোলিতে আলাদা একটা উন্মাদনা থাকে। এ কারণে হোলির দিনে আমি এখানে আসি।’

 

দোলযাত্রা হিন্দু বৈষ্ণবদের উৎসব। বৈষ্ণব বিশ্বাস অনুযায়ী, এ দিন শ্রীকৃষ্ণ বৃন্দাবনে রাধিকা এবং তার সখীদের সঙ্গে আবির খেলেছিলেন। সেই ঘটনা থেকেই দোল খেলার উৎপত্তি। এ কারণে দোলযাত্রার দিন এ মতের বিশ্বাসীরা রাধা-কৃষ্ণের বিগ্রহ আবিরে রাঙিয়ে দোলায় চড়িয়ে নগর কীর্তনে বের হন। এ সময় তারা রং খেলার আনন্দে মেতে ওঠেন।

 

বিশ্বের অনেক স্থানে উৎসবটি শ্রীকৃষ্ণের দোলযাত্রা নামে অধিক পরিচিত হলেও ভারতের পশ্চিমবঙ্গ, মাদ্রাজ, উড়িষ্যা প্রভৃতি স্থানে দোল উৎসব এবং উত্তর, পশ্চিম ও মধ্য ভারত ও নেপালে ‘হোলি’ নামে পরিচিত। কোনো কোনো স্থানে এ উৎসবকে বসন্ত উৎসবও বলা হয়। দ্বাপর যুগ থেকে পুষ্পরেণু ছিটিয়ে রাধা-কৃষ্ণ দোল উৎসব করতেন। সময়ের বিবর্তনে পুষ্পরেণুর জায়গায় এসেছে ‘আবির’।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *