‘তোমরা বলো না, আমার আত্মা দূষিত হয়েছে বা পচে গেছে

ইসলামী ডেস্ক : উম্মুল মুমিনিন আয়েশা (রা.) থেকে বর্ণিত, নবী কারিম (সা.) বলেছেন, ‘তোমরা বলো না, আমার আত্মা দূষিত হয়েছে বা পচে গেছে। বরং বলো আমার আত্মায় ময়লা পড়েছে।’ (আল আদাবুল মুফরাদ, হাদিস : ৩১০)

ইমাম খাত্তাবি (রহ.) বলেন, হাদিসে ব্যবহৃত ‘খাবুসাত’ হওয়া ও ‘লাকিসাত’ শব্দদ্বয়ের অর্থ এক। কিন্তু প্রথম শব্দটি অধিক নিন্দার্থক। রাসুলুল্লাহ (সা.) মন্দের ভালো বেছে নিতে এই নির্দেশ দিয়েছেন। তবে অন্যান্য হাদিসবিশারদের মতে, দ্বিতীয় শব্দটি (লাকিসাত) কোনো কিছুর বৈশিষ্ট ও সৌন্দর্য হারানো বোঝায়। দ্বিতীয় শব্দের অর্থ যা-ই হোক না কেন রাসুলুল্লাহ (সা.) নিজেকে মন্দ অভিধায় অভিধিত করতে নিষেধ করেছে। এটাই হাদিসের মূল শিক্ষা। তবে এই আদেশ শিষ্টাচার হিসেবে গণ্য। আদেশসূচক নয়। যদি কেউ নিজের ব্যাপারে মন্দ শব্দ ব্যবহার করে তাহলে শিষ্টাচারবহির্ভূত কাজ করল। হারাম কাজ করল না।

আল্লামা ইবনে বাত্তাল বলেন, রাসুলুল্লাহ (সা.)-এর এই নির্দেশের কারণ আল্লাহ কর্তৃক মানুষকে সম্মানিত করা। আল্লাহ তাআলা মানুষ সম্মানিত করার ঘোষণা দিয়েছেন। সুতরাং কোনো মানুষ নিজেকে অসম্মানিত করবে না। এমন কোনো শব্দ ব্যবহার করবে না যা মানুষের সম্মানের পরিপন্থী। আল্লাহ কর্তৃক সম্মানিত হওয়ার ক্ষেত্রে যেহেতু সব মানুষ সমান তাই কারো ব্যাপারেই মন্দ শব্দ ব্যবহার করবে না।

আল্লামা ইবনে আবি জামরা (রহ.) বলেন, আলোচ্য হাদিসে ব্যবহৃত দুটি শব্দের একটি (খাবুসাত) চূড়ান্ত স্তরের দূষণকে বোঝায় আর দ্বিতীয় শব্দ (লাকিসাত) দূষণের প্রথম স্তরকে বোঝায়। শ্রুতিকটুও বটে। রাসুলুল্লাহ (সা.) দ্বিতীয় শব্দ ব্যবহারের নির্দেশ দিয়ে বুঝিয়েছেন কারো মন্দ বৈশিষ্ট্য বোঝাতে ‘উদ্দেশ্য’ আদায় হয় এমন সর্বনিম্ন স্তরের (হালকা) শব্দ ব্যবহার করতে হবে। চূড়ান্ত পর্যায়ের মন্দ বোঝায় এমন শব্দ ব্যবহার করা উচিত নয়।

তিনি আরো বলেন, এই হাদিসের আরেকটি শিক্ষা হলো, মানুষ নিজের ব্যাপারে ভালো শব্দ ব্যবহার করবে, যেন আল্লাহ তার ভেতর ভালো গুণ সৃষ্টি করে দেন। মন্দ শব্দ পরিহার করবে, যেন আল্লাহ তা দূর করে দেন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *