প্রাপ্তবয়স্কদের কনটেন্ট চালু করছে চ্যাটজিপিটি, দুশ্চিন্তায় অভিভাবকরা

অনলাইন ডেস্ক :

বিশ্বজুড়ে আলোচিত কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা (এআই) প্রতিষ্ঠান ওপেনএআই এবার তাদের জনপ্রিয় চ্যাটবট চ্যাটজিপিটি-তে চালু হতে যাচ্ছে প্রাপ্তবয়স্কদের জন্য তৈরি কনটেন্ট। 
প্রতিষ্ঠানটির প্রধান নির্বাহী স্যাম অল্টম্যান মঙ্গলবার এক্স-এ এক পোস্টে বলেন, সামনের সংস্করণগুলোতে চ্যাটজিপিটি আরো মানবসদৃশ আচরণ করতে পারবে তবে কেবল তখনই, যখন ব্যবহারকারীরা নিজেরা তা চাইবেন।

ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসির প্রতিবেদন অনুযায়ী, অল্টম্যানের এই ঘোষণাকে অনেকে ইলন মাস্কের এক্সএআই প্ল্যাটফর্ম গ্রোকের সাম্প্রতিক পদক্ষেপের অনুকরণ বলে মনে করছেন। সম্প্রতি যেখানে দুইটি যৌনবিষয়ক চ্যাটবট চালু করা হয়েছে।

বিশ্লেষকদের মতে, এই সিদ্ধান্ত ওপেনএআইকে আরো বেশি পেইড সাবস্ক্রাইবার আকৃষ্ট করতে সাহায্য করবে।
ওপেনএআই বিষয়টি নিয়ে বিবিসির সঙ্গে কথা বলতে রাজি হয়নি।চলতি বছরের শুরুর দিকে যুক্তরাষ্ট্রে এক কিশোরের আত্মহত্যার ঘটনায় ওপেনএআই-এর বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করার পর এই ঘোষণা এসেছে।

১৬ বছর বয়সী অ্যাডাম রেইন আত্মহত্যা করার আগে চ্যাটজিপিটির সঙ্গে তার মানসিক কষ্টের কথা ভাগাভাগি করেছিলেনএমন কথোপকথনের নথিও মামলায় অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে।তার বাবা-মা অভিযোগ করেন, চ্যাটজিপিটির প্যারেন্টাল কন্ট্রোল ব্যবস্থা যথেষ্ট কার্যকর নয় এবং তাদের ছেলে এ কারণে ক্ষতির মুখে পড়েছে।অল্টম্যান এ বিষয়ে বলেন, আমরা আগেই চ্যাটজিপিটিকে বেশ সীমাবদ্ধ রেখেছিলাম, যাতে মানসিক স্বাস্থ্য সংক্রান্ত ঝুঁকি কমানো যায়। এখন আমাদের হাতে এমন প্রযুক্তি এসেছে, যা ঝুঁকি হ্রাস করে ব্যবহারকারীদের জন্য অভিজ্ঞতাকে আরো বাস্তব ও নিরাপদ করতে পারে।

অল্টম্যান জানান, ডিসেম্বর থেকে প্রাপ্তবয়স্ক ব্যবহারকারীদের তাদের মতো করেই’ বিবেচনা করা হবে।নতুন নীতি অনুযায়ী, যাচাইকৃত প্রাপ্তবয়স্কদের জন্য ইরোটিক (যৌন বিষয়ক) কনটেন্টের সুযোগ দেওয়া হবে।তবে কনটেন্ট ফিল্টার ও বয়স যাচাই প্রক্রিয়া আরো কঠোরভাবে বাস্তবায়ন করা হবে বলে জানান তিনি।

এই সিদ্ধান্তে সমালোচনার ঝড় উঠেছে। আইনজীবী জেনি কিম বলেন, ওপেনএআই কিভাবে নিশ্চিত করবে যে শিশুরা এসব প্রাপ্তবয়স্ক কনটেন্টে প্রবেশ করতে পারবে না? তারা তো ব্যবহারকারীদের গিনিপিগের মতো ব্যবহার করছে।
তিনি আরো বলেন, আমরা এখনো জানি না তাদের বয়স যাচাই ব্যবস্থা আদৌ কার্যকর হবে কি না।এর আগে, এপ্রিল মাসে টেকক্রাঞ্চের এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছিল, কিছু অপ্রাপ্তবয়স্ক ব্যবহারকারীর অ্যাকাউন্ট থেকেও গ্রাফিক ইরোটিকা তৈরি করা সম্ভব হয়েছিল। ওপেনএআই তখন জানিয়েছিল, তারা দ্রুত সেই সমস্যা সমাধানে কাজ করছে।

এদিকে, যুক্তরাষ্ট্রের ফেডারেল ট্রেড কমিশন (এফটিসি) ইতিমধ্যে শিশুরা কিভাবে এআই চ্যাটবটের মাধ্যমে প্রভাবিত হচ্ছে তা নিয়ে তদন্ত শুরু করেছে।এদিকে টিউলেন বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক রব লালকা বলেন, ওপেনএআই দ্রুত ব্যবহারকারী অর্জন করেছে। এখন তারা সেই প্রবৃদ্ধির গতি ধরে রাখতে চাইছে। তবে যত বড় হোক, ওপেনএআই এখনো লাভজনক হয়নি। তাই বাজারে টিকে থাকতে তাদের নতুন পথ খুঁজতেই হবে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *