

অনলাইন ডেস্ক :
পেশাদার কোনো সাংবাদিকের বাসায় বল প্রয়োগ করে অবৈধভাবে প্রবেশ, তল্লাশি বা সম্পদ জব্দ করা যাবে না—এমন বিধানসহ ‘সাংবাদিকতার অধিকার সুরক্ষা অধ্যাদেশ, ২০২৫’-এর খসড়া চূড়ান্ত করেছে তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয়। একই সঙ্গে সাংবাদিককে সহিংসতা, হুমকি বা হয়রানির শিকার করলে সর্বোচ্চ পাঁচ বছরের কারাদণ্ড ও ন্যূনতম এক লাখ টাকা জরিমানা বা উভয় দণ্ডের প্রস্তাব রাখা হয়েছে।
তথ্য মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে, অংশীজনদের মতামত নেওয়ার পর খসড়াটি অনুমোদনের জন্য উপদেষ্টা পরিষদের বৈঠকে উপস্থাপন করা হবে। এর আগে গণমাধ্যম সংস্কার কমিশন ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে সাংবাদিকদের ওপর সহিংসতা ও হয়রানির ঘটনা বিবেচনায় নিয়ে এই অধ্যাদেশ প্রণয়নের প্রস্তাব দেয়।
খসড়ায় বলা হয়েছে, সাংবাদিকদের সহিংসতা, হুমকি ও হয়রানি থেকে সুরক্ষা দেওয়া সরকারের দায়িত্ব। কোনো ব্যক্তি বা সংস্থা সাংবাদিকের ব্যক্তিগত বা পেশাগত জীবন, সম্পদ কিংবা নিরাপত্তায় ক্ষতি সাধন করতে পারবে না। জনস্বার্থে তথ্য সংগ্রহ বা প্রকাশের কারণে সাংবাদিককে গ্রেপ্তার, আটক বা ভয়ভীতি প্রদর্শন নিষিদ্ধ থাকবে।
অধ্যাদেশের ৪(২) ধারায় উল্লেখ রয়েছে, বলপ্রয়োগ করে সাংবাদিকের বাসায় প্রবেশ, তল্লাশি বা সম্পদ জব্দ করা যাবে না এবং আইন ছাড়া এমন কোনো পদক্ষেপ নেওয়া যাবে না যাতে তাঁর ব্যক্তিগত জীবন, পরিবার, সুনাম বা সম্পত্তির ক্ষতি হয়। এছাড়া কোনো ব্যক্তি, সরকারি কর্মচারী বা আইনশৃঙ্খলা বাহিনী সাংবাদিককে শারীরিক বা মানসিক চাপ দিয়ে তথ্যসূত্র প্রকাশে বাধ্য করতে পারবে না।
খসড়ার ৫(১) ধারায় বলা হয়েছে, সাংবাদিক যেন ভয়ভীতি বা চাপমুক্ত পরিবেশে স্বাধীনভাবে দায়িত্ব পালন করতে পারেন—এটি নিশ্চিত করবে সরকার ও সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ। যৌন হয়রানি প্রতিরোধেও বিশেষ উদ্যোগ নেওয়ার কথা উল্লেখ রয়েছে। গণমাধ্যম প্রতিষ্ঠানের মালিক বা ব্যবস্থাপনা কর্তৃপক্ষেরও দায়িত্ব থাকবে সাংবাদিককে অভ্যন্তরীণভাবে সুরক্ষা দেওয়ার।
এছাড়া ৭ নম্বর ধারায় বলা হয়েছে, সরল বিশ্বাসে প্রকাশিত কোনো প্রতিবেদনের কারণে কেউ ক্ষতিগ্রস্ত হলেও ভিন্ন উদ্দেশ্য প্রমাণিত না হলে সাংবাদিকের বিরুদ্ধে মামলা করা যাবে না।
সহিংসতার শিকার হলে সাংবাদিক সরাসরি প্রথম শ্রেণির জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে অভিযোগ করতে পারবেন, যা ৩০ কার্যদিবসের মধ্যে তদন্ত করে রিপোর্ট দাখিলের নির্দেশ দেওয়া হবে।
তবে মিথ্যা অভিযোগ দিলে সংশ্লিষ্ট সাংবাদিকের জন্য অনধিক এক বছর কারাদণ্ড বা ৫০ হাজার টাকা জরিমানা বা উভয় দণ্ডের বিধানও রাখা হয়েছে।















