‘বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তিতে গুচ্ছ পদ্ধতির পরীক্ষা যেভাবে হবে’

অনলাইন ডেস্ক : দেশের পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে কেন্দ্রীয়ভাবে ভর্তি পরীক্ষার সিদ্ধান্ত শেষ পর্যন্ত বাতিল করেছে বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশন। তবে এখন এক ধরনের ‘গুচ্ছ’ পদ্ধতির পরীক্ষা কথা বলছে কমিশন। এক সংবাদ সম্মেলনে আজ এই সিদ্ধান্ত ঘোষণা করা হয়েছে।

‘গুচ্ছ’ পরীক্ষার পদ্ধতি কেমন হবে?
আজকে দেশের বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যের সাথে বৈঠকে বসেছিল বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশন। সেখানে সিদ্ধান্ত হয় কেন্দ্রীয় পরীক্ষা পদ্ধতি বাতিল করে চারটি ‘গুচ্ছ’ পরীক্ষা নেয়ার।

ইউজিসির চেয়ারম্যান অধ্যাপক কাজী শহীদুল্লাহ বিবিসি বাংলাকে বলেন, ‘এটা হচ্ছে যেমন বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় সেগুলো একসাথে ভর্তি পরীক্ষা নেবে। কৃষি, সাধারণ এবং প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয় তারাও এরকম একসাথে নেবে। এইভাবে চারটি গুচ্ছ পরীক্ষা হবে। এই চারটা ভাগের মধ্যে সাধারণ বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে যে বিজ্ঞান, বাণিজ্য ও সামাজিক বিজ্ঞান এগুলোর জন্য তিনটি পরীক্ষা হবে।’

কেন সমন্বিত পরীক্ষা পদ্ধতি বাস্তবায়ন হলো না?
দেশের সকল কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়গুলো ইতিমধ্যেই এই পদ্ধতিতে একসাথে পরীক্ষা নিয়েছে।

জানুয়ারি মাসের শেষের দিকে সিদ্ধান্ত হয়েছিল দেশের সকল পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে কেন্দ্রীয় ভর্তি পরীক্ষা নেয়া হবে এবং এই বছর থেকেই সেটি চালু হবে।

কিন্তু শুরু থেকেই এই উদ্যোগ দেশের বড় পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর বিরোধিতার মুখে পড়ে।

প্রথমে বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়, তারপর ধারাবাহিকভাবে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় সহ পাঁচটি গুরুত্বপূর্ন বিশ্ববিদ্যালয় জানিয়ে দেয় যে তারা কেন্দ্রীয় পদ্ধতিতে অংশ নিচ্ছে না।

অধ্যাপক শহীদুল্লাহ বলছেন সেই কারণেই তারা কেন্দ্রীয় পরীক্ষার সিদ্ধান্ত থেকে সরে এসেছেন।

মার্চে পূর্ণ চিত্র পাওয়া যাবে
বাংলাদেশে বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি, কৃষি, প্রকৌশল ও সাধারণ শিক্ষার জন্য সবমিলিয়ে ৪৬ টি পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয় রয়েছে।

অধ্যাপক শহীদুল্লাহ বলছেন, এখন ভর্তি পরীক্ষার আবেদন করতে হবে অনলাইনে।

একবার অকৃতকার্য হলে একের অধিক বছর ভর্তি পরীক্ষা দেয়া যাবে কিনা সে বিষয়সহ গুচ্ছ পদ্ধতির পরীক্ষা সম্পর্কে একটি পরিপূর্ণ চিত্র পাওয়া যাবে মার্চের মাঝামাঝি সময়ের মধ্যে।

সেজন্য একটি কমিটি সকল ধরনের বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর সাথে আলাদাভাবে বসবে। অধ্যাপক শহীদুল্লাহ বলছেন, ‘যে গ্রুপে যে বিশ্ববিদ্যালয় রয়েছে তারাই সবকিছু ঠিক করবে। প্রশ্নপত্রও তারাই ঠিক করবে। সেখানে তাদের মধ্যে থেকে একটি বিশ্ববিদ্যালয় নেতৃত্ব দেবে।’

তিনি বলছেন, ‘দেশে কত শিক্ষার্থী তার উপর নির্ভর করে কোথায় পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হবে, কার কোথায় সিট পড়বে সেগুলোও নির্দিষ্ট গ্রুপই ঠিক করবে। যেমন ধরুন বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি যেরকম, তারা হয়ত তাদের বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ে পরীক্ষা নেবে।’

কমিশনের হতাশা প্রকাশ
সমন্বিত ভর্তি পরীক্ষার ব্যাপারে কমিশনের যুক্তি ছিল দেশের গুরুত্বপূর্ণ বিশ্ববিদ্যালয়গুলো বিভিন্ন শহরে অবস্থিত।

শিক্ষার্থীরা ভর্তি নিশ্চিত করতে একের অধিক বিশ্ববিদ্যালয়ে পরীক্ষা দেয়ার চেষ্টা করেন। যার ফলে তাদের বিভিন্ন শহরে যেতে হয় এবং পছন্দের বিশ্ববিদ্যালয়ের জন্য আলাদা প্রস্তুতি নিতে হয়।

আলাদা ফর্ম ও যাওয়ার খরচ মিলিয়ে তাদের অনেক অর্থ খরচ করতে হয়। অনেক সময় একই তারিখে একাধিক বিশ্ববিদ্যালয়ের ভর্তি পরীক্ষা পড়ে যায়।

এসব বিবেচনায় শিক্ষার্থীদের ঝামেলা কমিয়ে আনার জন্য সমন্বিত পরীক্ষার কথা বলা হয়েছিল। তবে বড় বিশ্ববিদ্যালয়গুলো কেন্দ্রীয় পরীক্ষা পদ্ধতিতে অংশ না নেয়ায় তিনি হতাশা প্রকাশ করেছেন ইউজিসির চেয়ারম্যান।সূত্র:বিবিসি বাংলা

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *