নিচ্ছিদ্র নিরাপত্তায় ছেঁউড়িয়ায় আজ শুরু হচ্ছে লালন স্মরণোৎসব

নিজস্ব প্রতিবেদক : কুষ্টিয়ার কুমারখালীর ছেঁউড়িয়ায় আজ রোববার ৮মার্চ থেকে শুরু
হচ্ছে ফকির লালন সাঁইজির তিনদিনের স্মরণোৎসব ও গ্রামীণ মেলা। এ উপলক্ষ্যে
গতকাল বিকালে লালন আখড়াবাড়িতে জেলা প্রশাসক মো: আসলাম হোসেন ও পুলিশ
সুপার এসএম তানভীর আরাফাত পিপিএম (বার) সাংবাদিকদের সাথে প্রেস ব্রিফিং
করেন। এসময় জেলা প্রশাসক মো: আসলাম হোসেন বলেন, “লালন স্মরণোৎসব ও
গ্রামীন মেলাকে কেন্দ্র করে মাজার প্রাঙ্গন ও তার আশেপাশের এলাকায়
নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার করা হয়েছে। পুরো মাজার এলাকা সিসি ক্যামেরার
আওতায় থাকবে। জেলা পুুলিশ, র‌্যাব, গোয়েন্দা পুলিশ এর পাশাপাশি সাদা
পোশাকে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্য মোতায়েন থাকবে। সেই সাথে আমাদের
নির্বাহী ম্যাজিষ্ট্রেটগণ সেখানে দায়িত্বে থাকবে।

পুলিশ সুপার এমএম তানভীর আরাফাত পিপিএম (বার) বলেন, লালন স্মরনোৎসবকে
ঘিরে নিচ্ছিদ্র নিরাপত্তা বলয় গড়ে তোলা হয়েছে। নির্মিত হয়েছে ওয়াচ
টাউয়ার। কালিগঙ্গায় থাকছে নিরাপত্তা ট্রলার। পোশাকে এবং সাদা পোশাকে
আইনশৃংখলা বাহিনী সার্বক্ষনিক দায়িত্ব পালন করছে। সেই সাথে থাকছে মেটাল
ডিটেকটর।

প্রেস ব্রিফিংকালে উপস্থিত ছিলেন এনএসআই’র যুগ্ম পরিচালক ইদ্রিস আলী,
অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক ও রাজস্ব) মুহাম্মদ ওবায়দুর রহমান,
অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (ডিএসবি) গোলাম সবুর, আতিকুল ইসলাম আতিক, কুমারখালী
ইউএনও রাজিবুল ইসলাম খান, এনডিসি মুছাব্বেরুল ইসলাম, কুষ্টিয়া প্রেসক্লাব
কেপিসি’র সভাপতি হাজী রাশেদুল ইসলাম বিপ্লব, লালন একাডেমির এ্যাডহক
কমিটির সদস্য সেলিম হক, মুক্তিযোদ্ধা জাহিদুল ইসলাম, কুমারখালী থানার ওসি
জাহাঙ্গীর হোসেন প্রমুখ।

দোল পূর্ণিমায় ফকির লালন সাঁইজির তাঁর জীবদ্দশায় অষ্ট প্রহরব্যাপী ৫ঘরের
শিষ্যদের নিয়ে করতেন এই সাধু সঙ্গ। এখনও সেই ধারা অব্যাহত রয়েছে। লালন
সাঁইয়ের ভক্ত অনুসারীরা দোল পূর্ণিমার রাতে পালন করে আসছেন এই উৎসব।
এরই মধ্যে উৎসবের সকল প্রস্তুতি সম্পন্ন হয়েছে। ছেঁউড়িয়ায় কালীগঙ্গা নদীর
তীরে লালন আঁখড়া বাড়িতে এখন সাজ সাজ রব।

স্মরণোৎসব চলবে আগামী ১০মার্চ মঙ্গলবার পর্যন্ত। প্রতি বছরের মত এবারও চলবে স্মরণ উৎসবে আলোচনা সভা,
লালন মেলা ও সঙ্গীত অনুষ্ঠানের আয়োজন থাকবে। সংস্কৃতি বিষয়ক মন্ত্রণালয় ও
জেলা প্রশাসনের সহযোগিতায় এবং লালন একাডেমির আয়োজনে চলবে এ স্মরণ উৎসব।
প্রতিদিন সন্ধ্যা সাড়ে ৬টা থেকে আলোচনা সভার শুরু হবে, আলোচনা সভা শেষে
রাতভর চলবে লালন সংগীতানুষ্ঠান। এ উৎসবে প্রথম দিন প্রধান অতিথি হিসেবে
উপস্থিত থাকবেন সাংস্কৃতিক প্রতিমন্ত্রী কে এম খালিদ এমপি, ২য় দিন প্রধান
অতিথি হিসাবে উপস্থিত থাকবেন খুলনা বিভাগীয় কমিশনার ড. মু: আনোয়ার হোসেন
হাওলাদার, শেষ দিনে প্রধান অতিথি হিসাবে উপস্থিত থাকবেন জনপ্রশাসন
প্রতিমন্ত্রী ফরহাদ হোসেন এমপি। প্রথম দিন রাতে লালনভক্ত সাধুদের জন্য
প্রচলিত নিয়ম অনুযায়ী অধিবাস সেবা, দ্বিতীয় দিন সকালে বাল্যসেবা ও দুপুরে
পূর্ণ সেবা প্রদান করা হবে। আসন্ন লালন স্মরণোৎসব উপলক্ষে লালনের আখড়ায়
দেশ বিদেশ থেকে হাজার হাজার ভক্ত, সাধু ও দর্শনার্থীদের আগমন শুরু হয়েছে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *