‘যুগান্তকারী আবিষ্কার জ্বালানি নয়, বাতাসেই যে গাড়ি চলবে ৪০০ কিমি’

অনলাইন ডেস্ক : যেভাবে প্রত্যেকদিন পেট্রল-ডিজেলের ভান্ডার খালি হচ্ছে, তাতে জ্বালানি হিসাবে ক্রমশ অন্য শক্তিকে বেছে নিচ্ছেন অনেকেই।  বিশেষ করে বিশ্বের বড়বড় গাড়ি প্রস্তুতকারী সংস্থাগুলি ব্যাটারিচালিত শক্তির ব্যবহারের দিকে ঝুকছে! কিন্তু এবার একধাপ এগিয়ে বাজারে আসতে চলেছে ‘হাওয়া গাড়ি’ অর্থাৎ ‘হাইড্রোজেন কার’!

বিশ্বাস হচ্ছে না তো? ভাবছেন তো বাতাসেই গাড়ি কখনও চলে নাকি! হ্যাঁ, এটাই বড় সত্যি।  অশ্মীভূত জ্বালানি থেকে পরিত্রাণ পাবার এও একটা উপায়৷ বিশেষজ্ঞরা বলছেন, কালে এই হাইড্রোজেন খনিজ তেল ও প্রাকৃতিক গ্যাসের মতো প্রতিদ্বন্দ্বীদের ছাড়িয়ে যাবে৷ এখনই ‘তেল’ ভরা যায়, তবে গাড়িটি কিনতে পাওয়া যাবে আগামী বছর থেকে৷ দাম পড়বে ৬০ হাজার ইউরো – একটা সাধারণ গাড়ির দামের প্রায় দ্বিগুণ৷
হাইড্রোজেনের জয়যাত্রা 
‘টোটাল’ তেলের কোম্পানির মানুয়েল ফুক্স বলেন, হাইড্রোজেন কার, অর্থাৎ হাইড্রোজেনে চলে এমন গাড়ি ইতিমধ্যে অফিস কার হিসেবে ব্যবহার করা চলে।  কেননা তার জ্বালানি নেওয়ার সময় যেমন কম, তেমনই একবার ট্যাংক ভরলে বহুদূর যাওয়া যায়৷ এছাড়া অফিস কার মানেই প্রাইভেট কাস্টমাররাও শীঘ্রই সেদিকে ঝুঁকবেন৷
এই গাড়ির একজস্টে কোনও ধোঁয়া নেই, শুধু ফোঁটা ফোঁটা জল ঝরে৷ গাড়ির প্রায় কোনও আওয়াজ নেই৷ একবার ট্যাংক ভরলে ৪০০ কিলোমিটার যেতে পারে৷ এই যাবৎ সারা দেশে খুব বেশি হাইড্রোজেন ভরার কেন্দ্র নেই৷ আর দশ বছরের মধ্যে দেশজোড়া একটা নেট তৈরি হয়ে যাওয়ার কথা৷ হাইড্রোজেন এভাবে খনিজ তেল ও প্রাকৃতিক গ্যাসকে পিছনে ফেলে দিতে পারে৷
‘লিন্ডে’ কোম্পানির টিম হাইস্টারকাম্প বলেন, আমরা যদি ধরে নিই যে, মাঝারি বা দীর্ঘমেয়াদি সূত্রে আমরা নবায়নযোগ্য জ্বালানি থেকে হাইড্রোজেন সৃষ্টি করতে পারব, তাহলে আমরা অশ্মীভূত জ্বালানি আমদানি থেকে অনেকটা সরে আসতে পারব৷
জটিল প্রযুক্তি
হাইড্রোজেন উৎপাদনের ক্ষেত্রে ‘লিন্ডে’ কোম্পানি অন্যতম।  বহু বছর যাবৎ তারা এই নতুন প্রযুক্তিতে বিনিয়োগ করে আসছে৷ কারখানার ম্যানেজার জানেন যে, চাহিদা একদিন বাড়বেই৷ তখন ‘লিন্ডে’-র প্রতিযোগীরা এই ধরনের কারখানা বানাতে হিমশিম খেয়ে যাবে৷
গ্যাসের আগুন চুল্লিটিকে ১,০০০ ডিগ্রি সেন্টিগ্রেড অবধি উত্তপ্ত করে৷ সেই উত্তাপে জল হাইড্রোজেনে পরিণত হয়, যা ওই জ্বালানি শক্তিকে ধরে রাখে৷ কারখানার পরিচালক রেনে ম্যুলার বলেন: এই দক্ষতায় পৌঁছাতে বহু বছর কেন, বহু দশক লেগে যায়৷ এই পাইপের জঙ্গল দেখলে বোঝা যায় যে, এটা একটা খুব জটিল প্রযুক্তি।
কোটি কোটি ইউরো-র এক অনাবিষ্কৃত বাজার এবং ব্যবসা, যার জন্য ‘লিন্ডে’ ইতিমধ্যেই একটি ‘ফিলিং প্ল্যান্ট’ তৈরি করে ফেলেছে৷ আর কয়েক বছরের মধ্যেই এখান থেকে ট্যাংকেরে করে জ্বালানি যাবে খরিদ্দারদের কাছে৷ সূত্র : কলকাতা টোয়েন্টিফোর।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *