ভেজাল মানুষের রক্তে ?

কুষ্টিয়া প্রতিনিধি :
ভেজাল বলতে আমরা কি বুঝি ? কোনো পন্য বা জিনিস গুনগত মানের থেকে যদি নিন্ম মানের হয় বা আসল পন্যের ন্যয় নকল হয় তা হলো ভেজাল।তার মানে ভেজাল ঔষুধ যদি মানুষ খাঁই তবে ভেজাল রক্তে মিশে যায়।


কুষ্টিয়া জেলার বিভিন্ন গ্রাম থেকে গরীব দুঃখি অসুস্থ মানুষ একটু উন্নত সেবার আশায় শহরের নামিদামি ডাক্তারের কাছে আসে। কেউ বা মা বাবাকে সুস্থ্য করতে আবার কেউবা আত্মীয় বা বন্ধুদের রোগ নিরাময়ের আশায় অনেক পথ পাড়ি দিয়ে ছুটে চলে আসে শহরে। আর যে সব ডাক্তারের কাছে সেবা নিতে যাওয়া হচ্ছে তারা অধিকাংশ রোগীদের প্রেসক্রিপশনে নিম্নমানের কোম্পানীর ঔষূধ লিখে দিচ্ছে। কিন্তু দেখা যায়, যে রোগের জন্য নিম্নমানের ঔষূধ লেখা হচ্ছে, সে রোগের উন্নত মানের ঔষূধ বাজারে পাওয়া যায়। তারপর কেনও এই নিম্নমানের ঔষুধ রোগীদের সেবনের জন্য সম্মানিত কিছু ডাক্তার পরামর্শ দেয়? এই প্রশ্নের উত্তর খুজতে গিয়ে দেখা যায় যে, শহরে কর্তব্যরত কিছু ফার্মাসিটিক্যালের কর্মকর্তা ডাক্তারদের সঙ্গে কমিশন ভিত্তিতে তাদের কোম্পানির নিম্নমানের ঔষূধ রোগীদের প্রেসক্রিপশনে লিখাচ্ছে। ডাক্তাররা কোম্পানীর কমিশনের আশায় ঔষুধের মান বিবেচনা না করেই তা রোগীকে সেবনের পরামর্শ দিচ্ছে।

এবার আসুন মূল বিষয়ে:
কুষ্টিয়ার মিডফোর্ডখ্যাত মার্কেট রাজ্জাক সুপার মার্কেট নিম্নমানের ঔষধে সয়লাব হয়ে আছে। কুষ্টিয়ার বিভিন্ন ফার্মেসীতে অবাধে বিক্রয় হচ্ছে ভেজাল ঔষূধ। এসব ঔষুধ অতি সহজে কুষ্টিয়া শহরের কলেজ মোড়, হাসপাতাল মোড়, হাসপাতালের সামনের নামি-দামী ফার্মেসিসহ এনএস রোডের শাপলা চত্বরসহ বড়বাজারের রাজ্জাক সুপার মার্কেটে পাওয়া যায়। সন্ধ্যার পর থেকে গভীর রাত পর্যন্ত এই সব ফার্মেসীতে ঔষুধ কোম্পানীর প্রতিনিধির ভিড় ব্যাপকহারে লক্ষ করা যায়। ভালো ঔষুধের আড়ালে এই সব প্রতিনিধিরা তাদের পকেট ভারী করার আশায় অনুমোদন বিহীন ঔষুধ সরবরাহ করে থাকে। আর ফার্মেসীর মালিক অধীক লাভের আশায় গুনগত মান বিবেচনা না করেই ইচ্ছাকৃত বা অনিচ্ছাকৃত এই সব ঔষুধ বিক্রী করছে। অবৈধ ঔষুধ সম্পর্কে তথ্য অনুসন্ধানে গেলে আরো জানা যায় যে, কুষ্টিয়াতে নিযুক্ত ঔষুধ বিক্রয়ের প্রতিনিধির অনেকেই কোম্পানীর চাকুরীর পাশাপাশি নিজে বাইরের দেশের নিম্নমানের ঔষুধ আমদানী করে এবং তা বাজারজাতকরন করছে। এসব কোম্পানির কোন বৈধতা নেই তারা চাকরির পাশিপাশি সু কৌশলে ঐ কোম্পানির স্টিকার ও লোগো ব্যবহার করে নিম্নমানের ঔষুধ বিভিন্ন ডাক্তারের কমিশনের ভিত্তিতে তা বাজারে চালিয়ে যাচ্ছে। আর এসব ঔষুধ বিক্রয়ের কাজে সহযোগিতা করছে ফর্মেসীগুলো। কয়েক জন ফার্মেসি মালিক জানায়, বাজারে অনেক ভালো কোম্পানির ঔষুধ থাকতেও শুধু মাত্র কমিশনে কারনে ডাক্তাররা এসব নাম সর্বস্ব কোম্পানির ঔষুধ লিখে বাজারে চলার সুযোগ করে দিচ্ছে। এর জন্য তারা দায়ি করেন ঔষুধ প্রশাসনকে। প্রশাসনের নিয়মিত নজর দারি করার কথা থাকলেও একাধিক কর্মকর্তা নিজেই এই কোম্পানির সাথে জড়িত বলে অভিযোগ উঠেছে। তাই এসব নিয়ে তাদের মাথা ব্যাথা নেই। ঔষুধ প্রশাসন নিয়মিত মার্কেট পরিদর্শন করলেও কেন অবৈধ ও ভেজাল ঔষুধ বিক্রয় বন্ধ হচ্ছে না এমন প্রশ্ন সবার। কুষ্টিয়ার সুযোগ্য জেলা প্রশাসক মো:আসলাম হোসেনের কাছে কুষ্টিয়া বাসীর দাবী এই সব ঔষুধ যারা বিক্রয় করে ও সেবনের জন্য পরামর্শ দেয় তাদের বিরুদ্ধে দ্রুত কঠোর ব্যবস্থা নেয়া হোক।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *