খাবার ও পরিচর্যার অভাবে কাঁটাবনে মারা যাচ্ছে পোষা প্রাণী ও অ্যাকুরিয়ামের মাছ

নিউজ ডেস্ক:

করোনার আগ্রাসী আক্রমণ ঠেকাতে চলছে কঠোর বিধিনিষেধ। বিপণি বিতানসহ বিভিন্ন মার্কেটও বন্ধ । তবে সীমিত আকারে হাট-বাজার চালু রয়েছে। আর পুরোপুরি চালু রয়েছে জরুরি সেবা। কিন্তু দোকানপাট বন্ধ থাকায় বিপাকে পড়েছে পোষা পাখি ও প্রাণী পালকরা। করোনা পরিস্থিতির কারণে তাদের আদরের পাখি ও প্রাণীদের জন্য প্রয়োজনীয় ওষুধ ও খাদ্য সংগ্রহ করতে পারছেন না। অন্যদিকে রাজধানীর কাঁটাবনে চলতি লকডাউনে প্রশাসনের কঠোর নজরদারিতে পশু-পাখির দোকান খুলতে পারছেন না দোকান মালিকরা। এ কারণে খাদ্য, পানি ও বাতাসের অভাবে শ্বাসরুদ্ধ হয়ে প্রতিদিনই পশু-পাখি ও মাছ মারা যাচ্ছে। লকডাউনে স্টাফ, কর্মচারী না থাকায় ব্যবসায়ীরা পশু-পাখির পরিচর্যার জন্য দোকান খুললেই আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর লোকেরা এসে ধরে নিয়ে যাচ্ছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। এতে দোকান-সংশ্লিষ্টদের মধ্যে আটক আতঙ্ক বিরাজ করছে।

কাঁটাবনস্থ পাখির দোকান “ড্রিম বার্ডস” এর মালিক ও বিশিষ্ট ব্যবসায়ী নুরে আলম লিটন বলেন, গত ১২ এপ্রিল মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের সচিব বরাবর কাঁটাবনস্থ অ্যাকুয়া অ্যান্ড পেট অ্যাসোসিয়েশনের পক্ষ থেকে লকডাউনের মাঝে অবলা পশু ও মাছের জরুরি খাবার সরবরাহ ও পরিচর্যার উদ্দেশ্যে দোকান খোলার জন্য একটি মানবিক আবেদন জানানো হয়। এরই প্রেক্ষিতে পোষা প্রাণী ও অ্যাকুরিয়ামের মাছের জরুরি খাদ্য, ওষুধ, আলো-বাতাস সরবরাহ এবং পরিচর্যার জন্য দৈনিক দুই ঘণ্টা করে দুই দফায় কাঁটাবনের পশু-পাখি মার্কেটের দোকানসমূহ খোলা রাখার নির্দেশনা দিয়েছিলেন মৎস্য ও প্রাণিসম্পদমন্ত্রী শ ম রেজাউল করীম। কিন্তু সমস্যা হলো, এক ঘণ্টা পর পর তাদের পরিচর্যা করতে হয়। দোকানের শাটার বন্ধ করলেই তাদের মারা যাওয়ার সম্ভাবনা থাকে। এ পর্যন্ত বেশ কিছু পশু-পাখি-মাছ মারা গেছে। লকডাউনে স্টাফ, কর্মচারী না থাকায় পশু-পাখির পরিচর্যার জন্য ব্যবসায়ীরা দোকান খুললেই আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর লোকেরা এসে ধরে নিয়ে যাচ্ছে। যদিও তাদের দীর্ঘক্ষণ আটক রেখে ছেড়ে দেওয়া হয়। এ পরিস্থিতিতে পশু-পাখি ও মাছের জীবন বাঁচাতে দোকান খোলা রাখতে প্রধানমন্ত্রীর হস্তক্ষেপ কামনা করছি।

ডিএমপির রমনা বিভাগের উপ-কমিশনার (ডিসি) মো. সাজ্জাদুর রহমান জানান, জীবন্ত পশু-পাখি বা মাছের দোকান প্রতিদিন বিকাল ৪টা থেকে ৫টা পর্যন্ত খোলার নির্দেশনা দেওয়া আছে। এর মধ্যে কেউ দোকান খুলতে বাধা দিলে বা কাউকে হয়রানি করলে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। এর বাইরেও যদি কাঁটাবন দোকান মালিকদের আরও কোনো সুবিধার প্রয়োজন হয় তবে আলোচনা করতে পারেন। ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের সঙ্গে কথা বলে তাদের প্রয়োজন পূরণের চেষ্টা করব।

এমন পরিস্থিতিতে মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রী শ ম রেজাউল করিম বলেন, ‘এরই মধ্যে আমি কাঁটাবন মার্কেট পরিদর্শন করে বলেছি যে, পোষা পাখি ও প্রাণীর প্রতি কোনো ধরনের নিষ্ঠুর আচরণ করা যাবে না। তাদের খাদ্য সরবরাহ নিশ্চিত করতে কাঁটাবনের মার্কেট প্রতিদিন ২ ঘণ্টা করে খোলা রাখার নির্দেশ দিয়েছি।’

প্রসঙ্গত, এর আগে গত ৬ এপ্রিল রাজধানীর কাঁটাবনে ফিশ ও পেট এনিমেল মার্কেট পরিদর্শনে গিয়ে মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রী শ ম রেজাউল করিম বলেন, ‘করোনা পরিস্থিতিতে পোষা পাখি ও প্রাণীর প্রতি কোন ধরণের নিষ্ঠুর আচরণ করা যাবে না। পোষা পাখি ও প্রাণির প্রতি নিষ্ঠুর আচরণ করা ফৌজদারী অপরাধ। এই সময়ে পোষা পাখি ও প্রাণীর প্রতি যত্নবান হতে হবে।’

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *