অনলাইন ডেস্ক :
নির্বাচন নিয়ে ষড়যন্ত্র হচ্ছে দাবি করে আওয়ামী লীগের সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, অনেক চক্রান্ত-ষড়যন্ত্র আছে। যেহেতু তারা জানে মাথা নত করি না, এজন্য চক্রান্ত আরও বেশি।
২ জানুয়ারি, মঙ্গলবার বিকেলে ফরিদপুরে সরকারি রাজেন্দ্র কলেজ মাঠে আওয়ামী লীগ আয়োজিত নির্বাচনি জনসভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
তিনি বলেন, আমি জাতির পিতার কন্যা, আমি কারো কাছে মাথানত করে, গ্যাস বিক্রির মুচলেকা দিয়ে ষড়যন্ত্র করে ক্ষমতায় আসি নাই। গ্যাস বিক্রি করে খালেদা জিয়া ক্ষমতায় এসেছিল, আমি করতে চাইনি বলেই ষড়যন্ত্র করে আমাকে আসতে দেয়নি।
বিএনপি-জামায়াত ক্ষমতায় আসা মানে দুর্নীতি, সন্ত্রাস, জঙ্গিবাদ আর দুঃশাসন। এই দুঃশাসনে দেশ অচল হয়ে যায়। আসে ইমার্জেন্সি।
উপস্থিত জনতার উদ্দেশে তিনি প্রশ্ন রেখে বলেন, কে ক্ষমতায় থাকলে উন্নয়নশীল দেশ হিসেবে বাংলাদেশ গড়ে উঠবে? তিনি বলেন, শুধু নৌকা মার্কা ভোট পেলেই আমি সরকারে আসতে পারবো আর উন্নয়নশীল দেশ হিসেবে বাংলাদেশকে গড়ে তুলতে পারব।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, একটি বিধ্বস্ত দেশ, ২৪ বছরের পাকিস্তানি শোষণ, ২০০ বছরের ব্রিটিশ উপনিবেশিকদের শোষণ, শাসন। তার মধ্যে যুদ্ধে বিধ্বস্ত দেশ। তিনি মাত্র তিন বছর ৭ সাত মাসের মধ্যে স্বল্পোন্নত দেশ হিসেবে জাতিসংঘ স্বীকৃত দেয়। পৃথিবীর আর অন্য কোন দেশ পারেনি। একমাত্র বাংলাদেশ পেয়েছিল বঙ্গবন্ধুর নেতৃত্বে। তার স্বপ্ন ছিল দুঃখী মানুষের মুখে হাসি ফোটাবে। আর কোন মানুষ ভূমিহীন থাকবে না, দরিদ্র থাকবে না, কোন মানুষ চিকিৎসাহীন থাকবে না তিনি সেভাবে দেশকে সাজিয়েছিলেন।
শেখ হাসিনা বলেন, যে আদর্শ নিয়ে জাতির পিতা দেশ স্বাধীন করেছে। মুক্তিযুদ্ধের সে চেতনা ও আদর্শকে সমুন্নত রেখে বাংলাদেশের উন্নয়ন করবো। আপনাদের প্রতি আমার কৃতজ্ঞতা, আমার কৃতজ্ঞতা আওয়ামী লীগের কর্মীদের প্রতি যে আমাকে তারা সব সময় সহযোগিতা করেছেন। নৌকা মার্কায় ভোট দিয়েছেন বলেই দেশের সরকার গঠন করে সেবা করার সুযোগ পেয়েছি।
তিনি বলেন, বিদ্যুৎ নাই, পানি নাই, দেশের মানুষের শিক্ষা নাই, চিকিৎসা নাই। প্রথমবার সরকারে এসেই সর্বপ্রথম খাদ্য নিরাপত্তা, খাদ্য উৎপাদন বৃদ্ধি কতি। দেশ খাদ্যে স্বয়ংসম্পূর্ণ হয়। বিদ্যুৎ উৎপাদন ১৬শ মেগাওয়াট ছিল সেই বিদ্যুৎ ৪ হাজার মেগাওয়াটে উন্নীত করি। স্বাক্ষরতার হার ৪৫ ভাগ ৬৫ ভাগে উন্নীত করি। আমরা সব ধরনের প্রচেষ্টা চালাই দেশকে এগিয়ে নিয়ে যাবার জন্য। মানুষের জীবনে স্বস্তি ফিরে আসে। কিন্তু সে সুখ বেশি দিন টিকে নাই। এরপর বিএনপি ক্ষমতায় আসে।
টাকা দিয়ে ফরিদপুরের মানুষকে কেনা যাবে না জানিয়ে সরকারপ্রধান বলেন, আমরা সরকারে এসে ব্যবসা-বাণিজ্য করার সুযোগ দিয়েছি। এতে অনেকে টাকাওয়ালা হয়েছে। এখন তারা টাকা ছড়ায়। মনে করে টাকা দিয়েই কেনা যাবে। তবে একটা কথা বলতে চাই, টাকা দিয়ে মানুষ কেনা যায় না। টাকা দিয়ে ফরিদপুরের জনগণকে কেনা যায় না। ফরিদপুরের মাটি বঙ্গবন্ধুর ঘাঁটি।
নির্বাচনি জনসভায় প্রধানমন্ত্রী ফরিদপুর ও রাজবাড়ীর বিভিন্ন আসনের প্রার্থীদের পরিচিত করিয়ে দিয়ে নৌকা প্রতীকে ভোট প্রার্থনা করেন। এ সময় মাগুরা-১ আসনের প্রার্থী তারকা ক্রিকেটার সাকিব আল হাসানকেও পরিচিত করিয়ে দেন এবং তাকে রত্ন হিসেবে উল্লেখ করেন।
এর আগে দুপুর ১টা ৫৫ মিনিটে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ফরিদপুর পৌঁছে সার্কিট হাউসে আসেন। সেখানে মধ্যাহ্নভোজ ও বিশ্রাম শেষে বিকেল ৩টা ১৩ মিনিটে রাজেন্দ্র কলেজের জনসভায় যোগ দেন।