বাংলাদেশ হিন্দু বৌদ্ধ খ্রিস্টান ঐক্য ফ্রন্ট ভারতে নাগরিকত্ব বিল পাসে উদ্বিগ্ন

অনলাইন ডেস্ক : ভারতে নাগরিকত্ব বিল পাস হওয়াতে বাংলাদেশে বসবাসরত ধর্মীয় সংখ্যালঘু সম্প্রদায় গভীরভাবে উদ্বিগ্ন বলে জানিয়েছে বাংলাদেশ হিন্দু বৌদ্ধ খ্রিস্টান কল্যাণ ফ্রন্ট।

বৃহস্পতিবার জাতীয় প্রেসক্লাবে বাংলাদেশ হিন্দু বৌদ্ধ খ্রিস্টান কল্যাণ ফ্রন্ট আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এ কথা বলেন ফ্রন্টের আহ্বায়ক অ্যাডভোকেট গৌতম চক্রবর্তী।
ভারতে নাগরিকত্ব সংশোধনী বিল-২০১৯ পাস হওয়ায় বাংলাদেশের সংখ্যালঘুদের উদ্বিগ্নতার বিষয় শীর্ষক এ সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করা হয়।

এতে লিখিত বক্তব্যে অ্যাডভোকেট গৌতম চক্রবর্তী বলেন, ভারতে নাগরিকত্ব বিল পাস হওয়াতে আমরা বাংলাদেশে বসবাসরত ধর্মীয় সংখ্যালঘু সম্প্রদায় গভীরভাবে উদ্বিগ্ন। এই বিল আইনে পরিণত হওয়ার ফলে বাংলাদেশে সামান্য কোন ঘটনা ঘটলেই দেশ ত্যাগের প্রবণতা বাড়বে বলে আমরা মনে করি। সহজেই ভারতে নাগরিক হওয়া যাবে এই ধারণায় অধিকতর নিরাপত্তার আশার ভারতে আশ্রয় নেবার সম্ভবনা থাকবে। ফলে এক সময় এদেশে হিন্দু সংখ্যা আশঙ্কাজনক হারে কমে যেতে পারে। আর ভারতে নাগরিকত্ব সংশোধন আইনটি ধর্মীয় বিভাজনের ভিত্তিতে করার ফলে উভয় দেশের সংখ্যালঘুরা আতঙ্কিত হবে। একই সাথে ভারতে বসবাসরত নাগরিকত্বহীন সংখ্যালঘু মুসলিমদের মধ্যে আতঙ্ক সৃষ্টি হবে। এজন্য স্বাভাবিকভাবে আমাদের দেশে অনুপ্রবেশের প্রবণতা দেখা দেবে। ইতিমধ্যে কম-বেশি শুরু হয়েছে।

বাংলাদেশ ত্যাগী ভারতে অবস্থাকারী হিন্দুদের লাভ হলেও এদেশে বসবাসকারী হিন্দুদের লাভের সম্ভবনা কম। সুতরাং ভারতে ধর্মীয় বিভাজনের ভিত্তিতে নাগরিকত্ব বিল পাস হবার ফলে উভয় দেশ সংখ্যালঘুদের ক্ষতির আশঙ্কা থাকতে পারে। তাই ভারত এবং বাংলাদেশের উভয় সরকারের উচিত এমন কোন পদক্ষেপ নেওয়া যাতে এই দেশের হিন্দুদের নিরাপত্তা বিঘ্নিত না হয়। কারণ ভারতে নাগরিক পুঞ্জি বাস্তবায়ন হলে এই অঞ্চলে সাম্প্রাদায়িক সম্প্রীতি বিনষ্ট হতে পারে এবং ধর্মীয় বিভাজন সহায়ক হবে।

ভারতে নাগরিকত্ব সংশোধনী বিল-২০১৯ উপস্থানকালে শুধু একটি সরকারের সময় বাংলাদেশ ধর্মীয় সংখ্যালঘুদের উপর নির্যাতন এবং দেশ ত্যাগের কথা বলা হয়েছে। এতে সত্যকে আড়াল করা হয়েছে। ফলে বর্তমান সময়ের চিত্র এবং অতীতের সকল সময়ে ঘটনাসমূহ উল্লেখ না করাতে অপরাধ প্রবণতা ও ঘটে যাওয়া ঘটনাসমূহ বিচার না হওয়ার সম্ভবনা প্রবল থাকবে। আমি পুনরায় বলতে চাই, স্বাধীনতার পর থেকে অদ্যাবধি ধর্মীয় সংখ্যালঘুদের উপর অত্যাচার, সম্পদ দখলের ঘটনা এবং সে কারণে দেশ ত্যাগের প্রবণতা কম-বেশি বিদ্যমান।

এজন্য এদেশের অধিকাংশ অসাম্প্রদায়িক মানুষ দায়ী নয়, দায়ী কিছু সংখ্যক সম্প্রদায়িক, সম্পদ লোভী ও অসাধু ব্যক্তি। আর কোন সময়েই ঘটনাগুলোর প্রতিকার ও বিচার না হওয়াতে এই প্রবণতা বিদ্যমান। আমাদের দুর্ভাগ্য এই যে, কোন ঘটনা ঘটলেই রাজনৈতিক দলসমূহ একে অপরকে দায়ী করে। এর ফলে গুরূত্বপূর্ণ অপরাধগুলো চাপা পড়ে যায়।

সংবাদ সম্মেলনে বাংলাদেশ হিন্দু বৌদ্ধ খ্রিস্টান কল্যাণ ফ্রন্টের উপদেষ্টা ও বিএনপি নেতা অ্যাডভোকেট নিতাই রায় চৌধুরী, বিজয় কান্তি সরকার, ড. সুকোমল বডুয়া, জয়ন্ত কুমার কুন্ডু, তরুন দে, অর্পনা রায় প্রমুখ উপস্থিতি ছিলেন।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *