বিদ্যুতের পর এবার স্পেনে মোবাইল নেটওয়ার্ক বিপর্যয়

অনলাইন ডেস্ক :

 

সপ্তাহখানেক আগে দেশব্যাপী বিদ্যুৎ বিভ্রাটের ধাক্কা সামলে ওঠার পর এবার বড় ধরনের মোবাইল নেটওয়ার্ক সমস্যার সম্মুখীন হয়েছে স্পেন। আজ মঙ্গলবার ভোর (স্থানীয় সময় অনুযায়ী) থেকেই দেশটির শীর্ষস্থানীয় সমস্ত মোবাইল পরিষেবা প্রদানকারী সংস্থার নেটওয়ার্ক ব্যবস্থা বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে। এর ফলে লাখ লাখ গ্রাহক মোবাইল ফোনে কল করতে, টেক্সট পাঠাতে বা ইন্টারনেট ব্যবহার করতে পারছেন না।

নেটওয়ার্ক বিভ্রাটের বিস্তারিত:
স্থানীয় সংবাদমাধ্যম সূত্রে জানা গেছে, স্পেনের বৃহত্তম টেলিকম সংস্থা টেলিফোনিকা’র সঙ্গে যুক্ত পরিষেবা প্রদানকারী সংস্থাগুলোই মূলত এই সমস্যার শিকার হয়েছে। এর মধ্যে রয়েছে মুভিস্টার, অরেঞ্জ, ভোডাফোন, ডিজিমোবিল এবং ও-২। মঙ্গলবার ভোর থেকেই ল্যান্ডলাইন, ইন্টারনেট এবং মোবাইল পরিষেবাগুলো হঠাৎ করেই বন্ধ হয়ে যায়, যা জনজীবনে ব্যাপক ভোগান্তি সৃষ্টি করেছে।

কারণ অনুসন্ধানে ধোঁয়াশা:
এই নেটওয়ার্ক বিভ্রাটের সঠিক কারণ এখনও পুরোপুরি স্পষ্ট নয়। স্থানীয় সংবাদমাধ্যমের প্রাথমিক খবর অনুযায়ী, টেলিফোনিকার নেটওয়ার্ক ‘আপগ্রেড’ করার কাজ চলছিল, যার কারণেই এই বিভ্রাট দেখা দিয়েছে। তবে এই বিষয়ে টেলিকম সংস্থাগুলোর পক্ষ থেকে বিস্তারিত কোনো তথ্য জানানো হয়নি।

জরুরি পরিষেবা ব্যাহত:
এই নেটওয়ার্ক বিপর্যয়ের সবচেয়ে গুরুতর প্রভাব পড়েছে স্পেনের জাতীয় জরুরি নম্বর ১১২-এর ওপর। ১১২ নম্বরে যোগাযোগ করতে না পারায় অনেক জরুরি পরিষেবা থমকে গেছে। কিছু অঞ্চলে বিকল্প নম্বর দেওয়া হলেও, তাতে সমস্যার সমাধান হয়নি। এই ঘটনা জরুরি পরিস্থিতিতে মানুষের জীবন রক্ষায় কতটা ঝুঁকি তৈরি করেছে, তা নিয়ে উদ্বেগ বাড়ছে।

সাম্প্রতিক সংকট:
এই নেটওয়ার্ক বিভ্রাট এমন এক সময়ে ঘটল যখন স্পেন সম্প্রতি একটি বড় ধরনের বিদ্যুৎ বিভ্রাট থেকে সেরে উঠেছে। সপ্তাহ কয়েক আগে সেই বিদ্যুৎ বিভ্রাটের কারণে রাজধানী মাদ্রিদের ট্রাফিক সিগন্যালগুলো অচল হয়ে পড়েছিল, যা ভয়াবহ যানজটের সৃষ্টি করে। বহু বিমান বাতিল করতে হয়েছিল এবং ট্রেন চলাচল বন্ধ থাকায় অসংখ্য যাত্রী স্টেশন ও ট্রেনের ভেতরে আটকা পড়েছিলেন। স্পেন সরকার সেই অবস্থাকে জরুরি অবস্থা বলে ঘোষণা করেছিল এবং এটিকে ইউরোপের অন্যতম বৃহৎ বিদ্যুৎ বিভ্রাট হিসেবে আখ্যা দিয়েছিল। সেই বিভ্রাটের ফলে হাসপাতালগুলোতেও চরম ভোগান্তি পোহাতে হয়েছিল চিকিৎসক, স্বাস্থ্যকর্মী ও রোগীদের। প্রায় ১৮ ঘণ্টা পর পরিস্থিতি ধীরে ধীরে স্বাভাবিক হয়েছিল। শুধু স্পেন নয়, সেই সময় ফ্রান্স ও পর্তুগালও বিদ্যুৎ বিভ্রাটের মুখে পড়েছিল।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *