

কুষ্টিয়া প্রতিনিধি :
বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর অভিযানে কুষ্টিয়া জেলার ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় (ইবি) থানার শীর্ষ সন্ত্রাসী জাহাঙ্গীর কবির লিপটন সহ ৪ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে।
এক বিবৃতিতে এ তথ্য জানিয়েছে আন্তঃবাহিনী জনসংযোগ পরিদপ্তর-আইএসপিআর।
এই বিবৃতিতে বলা হয়, ‘আজ শুক্রবার আনুমানিক ভোর চারটায় বাংলাদেশ সেনাবাহিনী পরিচালিত অভিযানে কুষ্টিয়া জেলার ইবি থানাধীন দুর্বাচারা গ্রাম থেকে শীর্ষ সন্ত্রাসী জাহাঙ্গীর কবির লিপটন ও তার ঘনিষ্ঠ ৩ জন সহযোগীকে গ্রেফতার করা হয়। অভিযানকালে ৬ টি বিদেশি পিস্তল, ১টি লং ব্যারেল বিদেশি গান, ১০ টি পিস্তল ম্যাগাজিন, ৩৩ রাউন্ড ৯ এমএম পিস্তল এ্যাম্যুনিশন, ৫০ রাউন্ড ৭.৬২ এমএম এ্যাম্যুনিশন, ৩৬ রাউন্ড ১২ বোর এ্যাম্যুনিশন, ২১ রাউন্ড খালি কার্তুজ, ১০ টি দেশীয় ধারালো অস্ত্র, ৩ টি অস্ত্রের ক্লিনিং কীট, ১ টি পিস্তল কভার, ৮ টি শীল্ড ও ০৬ টি বল্লম উদ্ধার করা হয়।’
বিবৃতিতে আইএসপিআর আরও জানিয়েছে, ‘গ্রেফতারকৃতদের নামে বিভিন্ন থানায় অপরাধের অভিযোগ রয়েছে এবং তারা পেশীশক্তি প্রদর্শন, মারামারি ও সন্ত্রাসী কার্যক্রমসহ বিভিন্ন অপরাধ কর্মকান্ডের মাধ্যমে এলাকায় ত্রাসের রাজত্ব কায়েম করেছিল। সুনির্দিষ্ট গোয়েন্দা তথ্যের ভিত্তিতে আজ ভোর আনুমানিক ৪ টায় অভিযানটি পরিচালনা করা হয়। অভিযান দলের দক্ষতায় কোন প্রকার ক্ষয়ক্ষতি ও নাশকতা ছাড়াই অপরাধীদের গ্রেফতার করা সম্ভব হয়।’
গ্রেপ্তার লিপটনের অপর তিন সহযোগী হচ্ছেন দুর্বাচারা গ্রামের রফিকুল ইসলামের ছেলে মো: রাকিব (৩৮), একই এলাকার জহির ইসলামের ছেলে মো: লিটন (২৬) এবং আব্দুল মজিদের ছেলে সনেট হাসান (৪৫)।
কুষ্টিয়া ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মেহেদি হাসান জানান, সেনাবাহিনীর অভিযানে জাহাঙ্গীর কবির লিপটনকে তিন সহযোগীসহ আটক হয়েছে। তিনি আরো জানান, একসময় পুলিশের তালিকাভুক্ত শীর্ষ সন্ত্রাসী ছিলেন লিপ্টন। তার বিরুদ্ধে কুষ্টিয়ার বিভিন্ন থানায় একাধিক হত্যাসহ বেশ কিছু জিডি রয়েছে।
জেলা গোয়েন্দা পুলিশের একটি সূত্র জানায়, ৯০ দশকে কুষ্টিয়া সরকারি কলেজে ছাত্রলীগের রাজনীতিতে নাম লেখান জাহাঙ্গীর কবির লিপটন। সে সময় প্রকাশ্যে অস্ত্র হাতে নিয়ে বিরোধী রাজনৈতিক দলের নেতা-কর্মীদের লক্ষ্য করে গুলি ছুঁড়তেও দেখা গেছে তাকে। ছাত্র রাজনীতিতে সক্রিয় থাকা অবস্থায় এক পর্যায়ে লিপ্টন নিষিদ্ধ ঘোষিত চরমপন্থী সংগঠন শ্রমজীবী মুক্তি আন্দোলনের সামরিক শাখা গণমুক্তিফৌজে দেন।
চরমপন্থী সংগঠনের হয়ে একাধিক হত্যা, মুক্তিপণের দাবিতে অপহরণ, টেন্ডারবাজি, চাঁদাবাজি, অস্ত্র ব্যবসাসহ আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর কাছে একের পর এক অভিযোগ আসতে থাকে লিপটনের বিরুদ্ধে।
পুলিশের অপরাধ শাখার তথ্যানুযায়ী চরমপন্থী নেতা জাহাঙ্গীর কবির লিপটনের বিরুদ্ধে প্রায় দুই ডজন হত্যকান্ডে সরাসরি অংশগ্রহণ করা ছাড়াও পার্শ্ববর্তী ঝিনাইদহ, চুয়াডাঙ্গা ও মেহেরপুর জেলার সব মিলিয়ে প্রায় অর্ধ শতাধিক হত্যাকান্ডের সাথে সক্রিয় অংশগ্রহণ করার অভিযোগ রয়েছে।
একের পর হত্যাকান্ডের মধ্য দিয়ে অল্প দিনের মধ্যেই জাহাঙ্গীর কবির লিপটন নিষিদ্ধ ঘোষিত চরমপন্থী সংগঠন শ্রমজীবী মুক্তি আন্দোলনের সামরিক শাখা গণমুক্তিফৌজের থার্ড ইন্ড কমান্ড বনে যান। ওই সংগঠনের প্রধান মুকুল, সেকেন্ড ইন কমান্ড শাহিন। তার পরের নামটিই ছিল লিপটনের।











