গাজায় ইজরায়েলির হামলায় ১৪০ জন ফিলিস্তিনি নিহত

অনলাইন ডেস্ক :

ইসরায়েলি হামলায় গত ২৪ ঘণ্টায় গাজা উপত্যকায় প্রাণ হারিয়েছেন অন্তত ১৪০ জন। গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের বরাতে বিষয়টি নিশ্চিত করেছে বার্তা সংস্থা রয়টার্স।

গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় জানায়, বুধবার (১৯ জুন) বিমান হামলা ও গুলিতে নিহত হয়েছেন কমপক্ষে ৪০ জন।

ত্রাণের জন্য অপেক্ষারত মানুষের ওপর হামলা চালানোর ঘটনাও ঘটেছে দিনের বিভিন্ন সময়ে।

গাজার মধ্যাঞ্চলে সালাউদ্দিন সড়কে জাতিসংঘের ত্রাণবাহী ট্রাকের অপেক্ষায় দাঁড়িয়ে ছিলেন বহু মানুষ। সেখানেই ইসরায়েলি বাহিনীর গুলিতে প্রাণ হারান অন্তত ১৪ জন। এ ঘটনায় প্রতিক্রিয়ায় ইসরায়েলি প্রতিরক্ষা বাহিনী (আইডিএফ) জানায়, এলাকাটি সক্রিয় যুদ্ধক্ষেত্র হিসেবে বহুবার চিহ্নিত করে সতর্কতা দেওয়া হয়েছিল।

সেনাদের দিকে লোকজন অগ্রসর হওয়ায় তারা ‘সতর্কতামূলক’ গুলি ছোড়ে। তবে এতে হতাহতের বিষয়টি তাদের জানা নেই বলে দাবি করেছে আইডিএফ।

এ ছাড়া বিভিন্ন চিকিৎসাকেন্দ্র থেকে জানানো হয়, মাঘাজি শরণার্থীশিবির, জেইতুন এবং গাজা শহরের কিছু এলাকায় ঘনবসতিপূর্ণ বাড়িঘর লক্ষ্য করে চালানো বিমান হামলায় মারা গেছেন অন্তত ২১ জন। দক্ষিণ গাজার খান ইউনিসের একটি শিবিরেও বোমাবর্ষণে নিহত হয়েছেন ৫ জন।

গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের হিসাব অনুযায়ী, মে মাসের শেষদিক থেকে ত্রাণ সরবরাহ আংশিকভাবে শুরু হলেও, খাবার সংগ্রহ করতে গিয়ে প্রাণ হারিয়েছেন ৩৯৭ জন, আহত হয়েছেন তিন হাজারেরও বেশি মানুষ।

স্থানীয় বাসিন্দারা বলছেন, যারা বোমায় মারা যায়নি, তারা মারা যাচ্ছে ক্ষুধায়। যে বস্তা আটার জন্য মানুষ প্রাণ দিয়েছে, সেখানেই গড়িয়ে পড়ছে তাদের রক্ত।

আদেল নামে এক বাসিন্দা রয়টার্সকে বলেন, মানুষ প্রতিদিন খাবারের খোঁজে বের হচ্ছে, জানে না আর ফিরতে পারবে কি না।

বর্তমানে ইসরায়েল সমর্থিত ‘গাজা হিউম্যানিটারিয়ান ফাউন্ডেশন’ নামের একটি সংগঠনের মাধ্যমে অধিকাংশ ত্রাণ বিতরণ করা হচ্ছে।

মার্কিন কোম্পানিগুলোর সহায়তায় পরিচালিত এসব কেন্দ্র রয়েছে ইসরায়েলি সেনাদের কড়া নজরদারিতে। তেল আবিবের দাবি, এ ব্যবস্থার মাধ্যমে তারা নিশ্চিত করছে যেন ত্রাণ হামাসের হাতে না যায়।

অন্যদিকে, হামাস বলছে, তারা ত্রাণ চুরি করছে না, বরং ইসরায়েলই সাধারণ মানুষের ক্ষুধাকে ‘অস্ত্র’ হিসেবে ব্যবহার করছে।

জাতিসংঘের ফিলিস্তিনি শরণার্থী সংস্থা (ইউএনআরডব্লিউএ)-এর প্রধান ফিলিপ লাজারিনি এক্সে দেওয়া এক পোস্টে গাজায় বর্তমান ত্রাণব্যবস্থাকে ‘অপমানজনক’ আখ্যা দিয়ে এর কড়া সমালোচনা করেন।

এদিকে গাজার সাধারণ মানুষের অভিযোগ—ইরান-ইসরায়েল উত্তেজনার পেছনে ঢাকা পড়ে যাচ্ছে তাদের করুণ বাস্তবতা।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *