গুপ্তধনের লোভ দেখিয়ে প্রবাসীর স্ত্রীর থেকে ১৪ লাখ টাকা হাতিয়ে নেওয়ার অভিযোগে,নারী তান্ত্রিক গ্রেফতার

ডিপি ডেস্ক :

বগুড়ার ধুনটে মেয়েদের মৃত্যুর হাত থেকে বাঁচানো এবং গুপ্তধনের লোভ দেখিয়ে প্রবাসীর স্ত্রীর কাছ থেকে ১৪ লাখ টাকা হাতিয়ে নেওয়ায় অভিযোগে সাথী বেগম (২৬) নামের এক নারী তান্ত্রিককে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। এ সময় তার কাছ থেকে তান্ত্রিক কাজে ব্যবহৃত তাবিজ, ঝাড়ফুঁক, যাদুটোনার বই ও পাঁচটি নকল মূর্তি জব্দ করা হয়।

শনিবার (২৮ জুন) বিকেল ৩টায় তাকে আদালতের মাধ্যমে বগুড়া জেলা কারাগারে পাঠানো হয়েছে। এর আগে একই দিন সকালে উপজেলার মথুরাপুর ইউনিয়নের হোসেনপুর গ্রাম থেকে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়।

অভিযুক্ত সাথী বেগম গাইবান্ধা গোবিন্দগঞ্জ উপজেলার শ্রীগতিপুর জামাইপাড়ার বাসিন্দা আনোয়ার হোসেন মোল্লার স্ত্রী।
মামলা সূত্রে জানা যায়, উপজেলার হোসেনপুর গ্রামের প্রবাসী সেলিম রেজার স্ত্রী খালেদা বেগম প্রায় ৬ মাস আগে বগুড়া পপুলার ডায়াগনস্টিক সেন্টারে চিকিৎসার জন্য যান। সেখানে তান্ত্রিক সাথী বেগম ও তার সহযোগী আনোয়ার মোল্লার সঙ্গে খালেদা বেগমের পরিচয় হয়। সেই পরিচয়ের সূত্রে ধরে তারা খালেদা বেগমের বাড়িতে আসেন।

এ সময় নিজেদের কবিরাজ পরিচয় দিয়ে তারা ভুক্তভোগী নারীর হাত দেখে জানান, তার দুই মেয়ে মারা যাবে। মৃত্যুর হাত থেকে তাদের বাঁচাতে পাঠা ও মোরগ বলিদানের কথা বলে তার কাছ থেকে ৫০ হাজার টাকা হাতিয়ে নেয় তারা।

এ ঘটনার পনেরো দিন পর ফের খালেদার বাড়িতে এসে গুপ্তধন পাইয়ে দেওয়ার কথা বলে গরু, চাল ও মসলা কেনা বাবদ আরো ৫ লাখ টাকা হাতিয়ে নেয় তারা। এরপর থেকে বিভিন্ন সময়ে মসজিদ, মাজার এবং মৃত্যুর ভয় দেখিয়ে খালেদার কাছ থেকে তারা মোট ১৪ লাখ টাকা হাতিয়ে নিয়েছেন।

এরই ধারাবাহিকতায় গতকাল শুক্রবার সাথী বেগম প্রবাসীর বাড়িতে এসে ঘরের মেঝেতে আসন পেতে বসে মন্ত্রপাঠের মাধ্যমে আরো ৫ লাখ টাকা দাবি করেন। কিন্তু খালেদা টাকা দিতে অস্বীকার করলে সাথী বেগম বলেন যে, তোরা ধ্বংস হয়ে যাবি, তোরা মারা যাবি, তোদের অমঙ্গল হবে। এসব বলে দৌড়ে পালানোর সময় বাড়ির লোকজন সাথী বেগমকে আটক করে থানায় সোপর্দ করে। এ ঘটনায় সেলিম রেজা বাদি হয়ে সাথী বেগম ও আনোয়ার মোল্লার বিরুদ্ধে থানায় মামলা দায়ের করেছেন।

নারী তান্ত্রিককে গ্রেপ্তারের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন ধুনট থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সাইদুল আলম।তিনি বলেন, এ মামলার অন্য আসামিকে গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে। এরা আন্তঃদেশীয় প্রতারক চক্রের সক্রিয় সদস্য। এ ঘটনার সাথে আর কেউ জড়িত আছে কি না তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *