ঠাকুরগাঁওয়ে সম্পত্তির বিরোধের জেরে ২৩ ঘণ্টা বাবার লাশ আটকে রাখার অভিযোগ

ডিপি ডেস্ক :

ঠাকুরগাঁওয়ের বালিয়াডাঙ্গী উপজেলায় সম্পত্তি নিয়ে পারিবারিক কলহের জেরে মৃত্যুর পর বাবার লাশ ২৩ ঘণ্টা আটকে রাখার অভিযোগ পাওয়া গেছে ছেলে মহসিন আলীর বিরুদ্ধে। উপজেলার দুওসুও ইউনিয়নের পশ্চিম সরলিয়া গ্রামে এ ঘটনা ঘটে।

আজ সোমবার (১ ডিসেম্বর) স্থানীয়দের উদ্যোগ ও থানার পরামর্শে দাফন সম্পন্ন হয়েছে। গতকাল রবিবার সন্ধ্যা সাড়ে ৫টার দিকে নিজের মেয়ে বিউটি আক্তারের বাড়িতে মারা যান ৭০ বছর বয়সী মো. তসলিম উদ্দিন।

মৃত্যুর পর মরদেহ পাঠানো হলে ছেলে মহসিন আলী তা গ্রহণে অস্বীকৃতি জানান এবং থানায় গিয়ে বোনদের বিরুদ্ধে একটি অভিযোগ দাখিল করেন।মহসিন আলীর দাবি, বাবা বোনের বাড়িতে মারা যাওয়ায় সন্দেহ হয়েছিল। অন্য কোনো কারণে মারা যেতে পারে এই কারণেই থানায় অভিযোগ করি। পরে বিষয়টি পরিষ্কার হওয়ায় অভিযোগ তুলে নিয়েছি।সম্পত্তি নিয়ে কোনো বিরোধ নেই।

কিন্তু স্থানীয়দের বক্তব্য ভিন্ন। তারা জানান, তসলিম উদ্দিন জীবদ্দশায় নিজের সম্পত্তির বড় অংশ মেয়েদের নামে লিখে দেন। সেই সিদ্ধান্তেই ক্ষুব্ধ ছিলেন ছেলে মহসিন আলী।
দুওসুও ইউনিয়নের ইউপি সদস্য হবিবুর রহমান বলেন, মৃত্যুর পরপরই জমি ভাগ-বাটোয়ারা নিয়ে ছেলে লাশ আটকে রাখে। পরে দুই পক্ষকে নিয়ে বসে মীমাংসা করা হয়। তারপর আজ দাফন করা হয়েছে।

মরদেহ প্রথমে মেয়ের বাড়িতে রাখা হয়। কিন্তু ছেলে নিতে না চাওয়ায় পরে গ্রামের চাচার বাড়িতে মরদেহ রাখা হয়।প্রায় ২৩ ঘণ্টা লাশ পড়ে থাকা নিয়ে এলাকাবাসীর মধ্যে ক্ষোভের সৃষ্টি হয়।গ্রামেরর বাসিন্দারা জানায়, মরদেহ তো সবার আগে দাফন করা উচিত। কিন্তু ছেলে নিজের বাবার লাশ ঘরে তুলল না, এটা খুব কষ্টের।এ বিষয়ে বাড়ির পাশের প্রতিবেশীরা বলেন, মেয়েরাই বাবাকে দেখাশোনা করত। বাবা মারা গেছেন এমন অবস্থায়ও ছেলের এমন আচরণ দেখা যায়নি আগে কখনো।

এ বিষয়ে স্থানীয় যুবক জাহিদুল ইসলাম বলেন, যে মানুষটা এত দিন মেয়ের বাড়িতে ছিলেন, ছেলের একটু মানবিকতা দেখানোর কথা ছিল। কিন্তু ওরা লাশ পর্যন্ত নেয়নি।

এ বিষয়ে বালিয়াডাঙ্গী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) দুরুল হুদা বলেন, এটি সম্পূর্ণ পারিবারিক সমস্যা। গত রাতে ছেলে একটি অভিযোগ দিয়েছিলেন। আজ তারা কোনো অভিযোগ না থাকায় এবং মৃত্যুর বিষয়ে সন্দেহ দূর হওয়ায় ময়নাতদন্ত ছাড়াই লাশ দাফনের অনুমতি দেওয়া হয়েছে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *