কুষ্টিয়ায় বিষাক্ত এ্যালকোহল পান করে বিকেএসপি’র ছাত্রসহ তিন জনের মৃত্যু, হাসপাতালে অসুস্থ অন্তত তিন জন

কুষ্টিয়া প্রতিনিধি : কুষ্টিয়ায় বন্ধুর জন্মদিনে বিষাক্ত স্পিরিট পানে তিন তরুণের মৃত্যু হয়েছে। এ ঘটনায় অসুস্থ অপর তিনজন কুষ্টিয়ার ২৫০ শয্যা জেনারেল হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। তাঁদের অবস্থাও আশঙ্কাজনক।

মারা যাওয়া তিন তরুণের নাম ফাহিম হোসেন (২৩), জিহাদুর রহমান ওরফে সাজিদ (১৮) ও পাভেল রহমান (২৩)। সাজিদ বিকেএসপির বাস্কেটবল দলের সদস্য ছিলেন।

হাসপাতালে চিকিৎসাধীন থানাপাড়া এলাকার শরিফ আলীর ছেলে সুরুজ আলী (২২), আড়ুয়াপাড়া এলাকার শরিফুল ইসলামের ছেলে আতিকুল ইসলাম (২২) ও কুঠিপাড়া এলাকার রাজুর ছেলে শান্ত (২৩)। মারা যাওয়া ও হাসপাতালে চিকিৎসাধীন সবাই একে অপরের বন্ধু ও পরিচিতজন।

শহরের কোর্ট স্টেশনের সামনের একটি হোমিওপ্যাথি দোকান থেকে স্পিরিট কেনা হয়েছিল বলে ওই দোকানের মালিক রফিকুল ইসলামকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আটক করেছে পুলিশ। একই সঙ্গে ওই দোকান সিলগালা করে দিয়েছে প্রশাসন।

পরিবার, পুলিশ ও হাসপাতাল সূত্রে জানা যায়, বিকেএসপির বাস্কেটবল দলের খেলোয়াড় জিহাদুর রহমান সাজিদের আজ বৃহস্পতিবার জন্মদিন ছিল। এ উপলক্ষে তাঁর বন্ধু ও পরিচিতজনেরা স্পিরিট কিনে আনেন। দুপুরে শহরের ইসলামী কলেজের ভেতরে গিয়ে তাঁরা স্পিরিট পান করেন। এরপর বিকেলের দিকে তাঁরা অসুস্থ হয়ে পড়লে স্থানীয় লোকজন তাঁদের কুষ্টিয়া জেনারেল হাসপাতালের জরুরি বিভাগে নিয়ে যান। পরে সেখানে জিহাদুর, ফাহিম ও পাভেল মারা যান।

কুষ্টিয়ার জেনারেল হাসপাতালের আবাসিক চিকিৎসক (আরএমও) তাপস কুমার সরকার বলেন, বিষাক্ত স্পিরিট পানে গুরুতর অসুস্থ ছয়জনকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। এর মধ্যে তিনজন মারা গেছেন। একজনকে সন্ধ্যায় রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। বাকি তিনজন হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। তাঁদের অবস্থাও ভালো না।

মৃত সাজিদের মামা পিয়াস বলেন, গত মাসে ভাগনে ঢাকা থেকে বাড়িতে এসেছিল। বিকেএসপির বাস্কেট বল খেলোয়াড় সাজিদ। পাশাপাশি নবম শ্রেণির ছাত্র ছিল সে।

তিনি বলেন, শহরের কোর্ট স্টেশনের পেছনের রাফি হোমিও হল থেকে ১০০ টাকায় (এ্যকোনাইড ন্যাপ) কাচের বোতলে থাকা কিছু কিনেছিল তারা ছয় বন্ধু। পরে তা খেয়ে অসুস্থ হয়ে তিন বন্ধুর মৃত্যু হয়েছে।

কুষ্টিয়া মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) গোলাম মোস্তফা বলেন, রাফি হোমিও হল থেকে বন্ধুরা মিলে বিষাক্ত স্পিরিট কিনেছিলেন। জিজ্ঞাসাবাদের জন্য দোকানের মালিক রফিকুল ইসলামকে থানায় নেওয়া হয়েছে। এ বিষয়ে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে।

কুষ্টিয়ার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (প্রশাসন) মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, এরা সবাই তরুণ। তারা অ্যালকোহলজাতীয় দ্রব্য কোথায় পেল বা কে বিক্রি করল বিষয়টি নিয়ে তদন্ত চলছে। একজনকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য থানায় নেয়া হয়েছে।

এরপর কুষ্টিয়া সদর উপজেলা নির্বাহী অফিসার ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট জুবায়ের হোসেন চৌধুরী রাফি হোমিও ফার্মেসী সিলগালা করে দেন।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *