অনলাইন ডেস্ক : পুরীর রথযাত্রা বন্ধের সিদ্ধান্ত হয়েছিল আগেই। এবার কলকাতার অদূরে মাহেশের রথযাত্রা স্থগিতের সিদ্ধান্ত নিল মন্দির কর্তৃপক্ষ। শনিবার হুগলির জেলাশাসক ওয়াই রত্নাকর রাও মন্দিরের ট্রাস্টি বোর্ডের সদস্যদের সঙ্গে বৈঠক করেন। তারপরেই জানিয়ে দেওয়া হয় এবার আর রথ উত্সব হবে না।
সাহিত্যসম্রাট বঙ্কিমচন্দ্রের ‘রাধারানি’ উপন্যাসে মাহেশে রথের মেলার উল্লেখ আছে। বহু বিশিষ্টজন এবং রাজার স্মৃতিধন্য এই রথযাত্রা। প্রতিবছর হাজার হাজার মানুষের জমায়েত হয় মাহেশে। মন্দিরে জগন্নাথ বলরাম সুভদ্রার দারু কাঠের মূর্তিতে পূজা দিতে ভিড় উপচে পরে ভক্তদের।
আগামী ২৩ জুন রথযাত্রা উত্সব। পুরীর পরেই ভারতের দ্বিতীয় প্রাচীনতম মাহেশের রথ। এবার ৬২৪ বছরে পদার্পন করবে এই ঐতিহ্যের রথ। তবে করোনা পরিস্থিতিতে সমস্ত ধর্মীয় উত্সব ও জমায়েত বন্ধ রাখার নির্দেশ দিয়েছে ভারতের কেন্দ্রীয় সরকার। সেই নির্দেশ মেনেই পুরীর মন্দির কর্তৃপক্ষের পরে মাহেশের জগন্নাথ মন্দির কর্তৃপক্ষও রথযাত্রা বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত নিল।
মাহেশের সঙ্গে জড়িয়ে রয়েছে হরেক গল্পকথা। ইতিহাস বলে পুরীতে যাওয়ার পথে মাহেশের জগন্নাথ মন্দিরে এসেছিলেন স্বয়ং মহাপ্রভু চৈতন্যদেব। পুরীকে বলা হয় নীলাচল। চৈতন্যদেব মাহেশকে ‘নব নীলাচল’ বলে আখ্যা দেন। শুধু মাহেশের রথই নয়। পয়লা জুন থেকে মন্দির না খোলার সিদ্ধান্তও নিয়েছেন দক্ষিণেশ্বর বেলুড়মঠ ও তারকেশ্বরের মন্দির কর্তৃপক্ষ।
শুক্রবার মুখ্যমন্ত্রী মমতা ব্যানার্জি জানান, মন্দির মসজিদ গির্জা খুললেও কোনো রকমে জমায়েত করা যাবে না সেখানে। মন্দিরের ভেতরে ১০ জনের বেশি ঢোকানো যাবে না। ধর্মীয় স্থানে কোনো রকমের জমায়েত বা অনুষ্ঠান করা যাবে না। এর পাশাপাশি ধর্ম স্থানগুলোতে প্রবেশের পথে কর্তৃপক্ষের স্যানিটাইজারের ব্যবস্থা করতে হবে।
এরপরই বেলুড় মঠ ও দক্ষিণেশ্বরের কর্তৃপক্ষরা জানান, সোমবার থেকে মঠ ও মন্দিরের প্রাঙ্গণ সকলের জন্য খুলে দেওয়া কোনোমতেই সম্ভব নয়।