‘চাঞ্চল্যকর দাবি, নিম-হলুদ-তুলসীই ঠেকাতে পারে করোনাভাইরাস’

অনলাইন ডেস্ক : সারা বিশ্ব কাঁপছে এক অদৃশ্য ভাইরাসে। মারণভাইরাস করোনায় হাজার হাজার মানুষ আক্রান্ত হয়ে মারা যাচ্ছে। এখনো কোনো ভ্যাকসিন সফলতার মুখ দেখেনি। তবে জানানো হয়েছে, কয়েক মাসের মধ্যে বাজারে পাওয়া যেতে পারে করোনার কাঙ্ক্ষিত ভ্যাকসিন। এমন অবস্থায় ভারতের একটি গবেষণাপ্রতিষ্ঠান জানিয়েছে, নিম-হলুদ-তুলসীই ঠেকাতে পারে করোনাকে।

দেশটির স্থানীয় গণমাধ্যমের খবরে বলা হয়, সম্প্রতি লখনৌয়ের কিং জর্জ মেডিক্যাল ইউনিভার্সিটির গবেষকরা দাবি করেছেন, দেশীয় আয়ুর্বেদিক উপাদান যেমন- নিম, হলুদ, তুলসী, গুলঞ্চ, অশ্বগন্ধার সংমিশ্রণ শুধু রোগ প্রতিরোধ শক্তি বাড়াতেই নয়, করোনাভাইরাসের শরীরে ঢুকে সংক্রমণ ছড়ানোর ক্ষমতাকেও আটকে দিতে পারে। এসব ভেষজ উপাদানে রয়েছে এমন বায়োঅ্যাকটিভ কম্পাউন্ড, যা ভাইরাল স্ট্রেনের মোকাবেলা করতে পারে।
করোনা সারাতে ভরসা হতে পারে ভারতীয় আয়ুর্বেদ, বলছেন গবেষকরা। কিং জর্জ মেডিক্যাল ইউনিভার্সিটির গবেষকরা বলছেন, পুরোপুরি বৈজ্ঞানিক গবেষণায় দেখা গেছে, আয়ুর্বেদিক উপাদানের ভাইরাসনাশক ক্ষমতা রয়েছে। কী কী উপাদান এবং তাদের কী কী কম্বিনেশনে ওষুধ তৈরি হতে পারে তা নিয়ে গবেষণা ও ট্রায়াল চলছে। এই গবেষণার রিপোর্ট ‘স্প্রিঙ্গার নেচার জার্নাল অব ভাইরাল ডিজিজ’ সায়েন্স জার্নালে প্রকাশিত হয়েছে।

নিম, তুলসী, হলুদসহ ভেষজ উপাদানের কী কী কম্বিনেশনে ট্রায়াল চলছে তার বিস্তারিত তথ্য এখনো সামনে আনেননি গবেষকরা। বলা হয়েছে, আয়ুর্বেদিক উপাদান খুব ভালো ইমিউন বুস্টার হিসেবে কাজ করতে পারে। পাশাপাশি শরীরের ভেতরে ভাইরাল স্ট্রেনকেও থামিয়ে দিতে পারে। যেমন অশ্বগন্ধার মূল, পাতা, গাছের ডাল, ছাল- সবই ওষুধ তৈরিতে লাগে। অশ্বগন্ধার মূলের হাইড্রো-অ্যালকোহলিক এক্সট্র্যাক্টের অ্যান্টি-ভাইরাল ক্ষমতা আছে। ক্রনিক ব্রঙ্কাইটিস, সর্দি-কাশি, প্রদাহজনিত রোগের চিকিত্‍সায়ও লাগে। আর করোনা সংক্রমণে এই উপসর্গগুলোই বেশি দেখা দিচ্ছে।

গবেষকরা জানান, মুলেঠি বা যষ্টিমধুতে রয়েছে অনেক বায়োঅ্যাক্টিভ কম্পাউন্ড ও গ্লাইসিরাইজিক অ্যাসিড। হাঁপানি, ব্রঙ্কাইটিস, প্রদাহজনিত রোগ, খাদ্যনালির সংক্রমণ কমাতে কাজে লাগে। নিম, তুলসীর অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট রোগনাশক হিসেবে কাজ করে। গুলঞ্চের অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট, অ্যান্টি-হাইপার গ্লাইসেমিক, অ্যান্টি-অ্যালার্জিক, অ্যান্টি-নিওপ্লাস্টি, অ্যান্টি-ইনফ্লামেটরি উপাদান টিউবারকিউলোসিস, প্রদাহজনিত রোগ, এমনকি আর্থ্রাইটিসের চিকিত্‍সায়ও কাজে লাগে। সংক্রমণজনিত নানা রোগের উপশম হয় গুলঞ্চ বা গুড়ুচি পিপলিতে।

করোনার চিকিত্‍সায় যেসব ওষুধের পরীক্ষামূলক প্রয়োগ হচ্ছে, তার বাইরে গিয়েও আয়ুর্বেদ, যোগ, ইউনানি, সিদ্ধা ও হোমিওপ্যাথির ট্রিটমেন্টের জন্য অনুমোদন দিয়েছে ভারতের কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়। আয়ুষ মন্ত্রণালয়ের শীর্ষ কর্মকর্তা বৈদ্য রাজেশ কোটেচা বলেছেন, আয়ুর্বেদ এবং হোমিওপ্যাথির র‍্যান্ডোমাইজ়ড ক্লিনিক্যাল ট্রায়াল চলছে। প্রাথমিক ট্রায়ালের রিপোর্ট সন্তোষজনক। আরো বেশিসংখ্যক রোগীর ওপর প্রয়োগ এবং পর্যবেক্ষণের পরেই সেই রিপোর্ট সামনে আনা হবে।সূত্র : দ্য ওয়াল।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *