আজ মহাষষ্ঠীর মাধ্যমে শুরু শারদীয় দুর্গোৎসব

নিজস্ব প্রতিবেদক : সনাতন ধর্মাবলম্বীদের সবচেয়ে বড় ধর্মীয় উৎসব দুর্গাপূজার সব প্রস্তুতি শেষ।বুধবার দুর্গতিনাশিনী দশভুজা দেবীর বোধন। আজ বৃহস্পতিবার মহাষষ্ঠীর মধ্য দিয়ে শারদীয় দুর্গাপূজার মূল আনুষ্ঠানিকতা শুরু। ঢাকের বোল, কাঁসর ঘণ্টা, শাঁখের ধ্বনিতে মুখর হয়ে উঠবে দেশের পূজামণ্ডপ। তবে এবার করোনা পরিস্থিতির কারণে পূজার জৌলুস থাকবে কম।

হিন্দু সম্প্রদায়ের বিশ্বাস অনুযায়ী, প্রতি শরতে শান্তি প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে স্বর্গলোক কৈলাস ছেড়ে মর্তে আসেন দেবী দুর্গা। ছেলে-মেয়েদের নিয়ে নির্দিষ্ট তিথি পর্যন্ত বাবার বাড়িতে কাটিয়ে আবার ফিরে যান দেবালয়ে। দেবীর অবস্থানকালে পাঁচ দিন পৃথিবীতে ভক্তরা দেবী মায়ের বন্দনা করে। এই বন্দনাকে কেন্দ্র করে দেশবাসী মেতে ওঠে উৎসব আনন্দে। চলমান করোনা পরিস্থিতিতে সুন্দর ও শান্তিপূর্ণভাবে দুর্গাপূজা উদযাপনে পর্যাপ্ত নিরাপত্তা ব্যবস্থা নিয়েছে আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী। পূজামণ্ডপগুলোতে অতিরিক্ত পুলিশ, আনসার, র্যাবসহ সাদা পোশাকের পুলিশ নিয়োজিত থাকবে। এ ছাড়া মন্দির কমিটির পক্ষ থেকে নিরাপত্তা ও স্বাস্থ্যবিধি নিশ্চিত করতে স্বেচ্ছাসেবক বাহিনী কাজ করবে।

পঞ্জিকা মতে, মহালয়া, বোধন ও সন্ধিপূজা—এই তিন পর্ব মিলে দুর্গোৎসব। দেবীপক্ষের শুরু হয় যে অমাবস্যায়, সেদিন হয় মহালয়া। সনাতন ধর্মাবলম্বীদের বিশ্বাস, সেদিন ‘কন্যারূপে’ মর্তে আসেন দেবী দুর্গা। গত ১৭ সেপ্টেম্বর মহালয়ার মধ্য দিয়ে দুর্গাপূজার আনুষ্ঠানিকতা শুরু হয়েছে। আজ বুধবার পঞ্চমী তিথিতে দেবীর বোধন হবে। আগামীকাল বৃহস্পতিবার মহাষষ্ঠী তিথিতে ষষ্ঠীপূজার মাধ্যমে শুরু হবে শারদীয় দুর্গোৎসবের মূল অনুষ্ঠান। আগামী সোমবার মহাদশমীতে প্রতিমা বিসর্জনে শেষ হবে দুর্গোৎসবের আনুষ্ঠানিকতা।

করোনার কারণে এবার পূজার অনুষ্ঠানমালা শুধু ধর্মীয় রীতি-নীতি অনুসরণ করে পূজা-অর্চনার মাধ্যমে মন্দির বা মণ্ডপ প্রাঙ্গণে সীমাবদ্ধ রাখার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। এরই মধ্যে পূজার সব প্রস্তুতি শেষ। কঠোর স্বাস্থ্যবিধি মেনে পূজার আয়োজন চলছে। করোনা পরিস্থিতির কারণে এবার পূজামণ্ডপের সংখ্যাও কিছু কমছে। এবার ৩০ হাজার ৮১টি মণ্ডপে পূজার আয়োজন চলছে। এরই মধ্যে পূজামণ্ডপে যাওয়া সবার জন্য করোনা স্বাস্থ্যবিধি অনুসরণে একটি গাইডলাইন প্রণয়ন করেছে স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়। মণ্ডপ ও ভক্ত পুজারিদের নিরাপত্তায় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকেও নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। নির্দেশনায় পূজাকে কেন্দ্র করে শোভাযাত্রা, প্রসাদ বিতরণ ও আলোকসজ্জা থেকে বিরত থাকতে বলা হয়েছে।

বাংলাদেশ পূজা উদযাপন পরিষদের সাধারণ সম্পাদক নির্মল কুমার চ্যাটার্জি বলেন, করোনা পরিস্থিতিতে কঠোর স্বাস্থ্যবিধি মেনে পূজা উদযাপনের জন্য দেশজুড়ে মন্দির ও পূজা কমিটির কাছে ২৬ দফা নির্দেশনা পাঠানো হয়েছে। এ ছাড়া স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয় এবং স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় পৃথকভাবে নির্দেশনা দিয়েছে। সব নির্দেশনা মেনে চলার মাধ্যমে সুষ্ঠু ও শান্তিপূর্ণভাবে উৎসব উদযাপন করা সম্ভব হবে বলে আশা করছি।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *