কুষ্টিয়ার কুমারখালীতে বিপ্লবী বাঘা যতীনের ভাস্কর্য ভাংচুর

নিজস্ব প্রতিবেদক : কুষ্টিয়ার কুমারখালী উপজেলার কয়া গ্রামে নির্মিত একটি ব্রিটিশ বিরোধী বিপ্লবী যুগান্তরের অদ্বিতীয় নেতা যতীন্দ্রনাথ মুখোপাধ্যায় (বাঘা যতীন) এর ভাস্কর্য ভাংচুর করেছে দূর্বৃত্তরা । শুক্রবার দুপুরে স্থানীয়রা দেখতে পান বাঘা যতীনের ভাস্কর্য ভাংচুর করা হয়েছে ।

বাঘা যতীনের জন্মভিটা তার মামার বাড়ির আঙ্গিনায় নির্মান হয়, “কয়া মহাবিদ্যালয়” । ঐ স্কুল মাঠেই ২০১৫ সালের ১০ই সেপ্টেম্বর বিপ্লবী বাঘা যতীনের মৃত্যু শত বার্ষিকী পালন করা হয় এবং সেখানে উপজেলা পরিষদের অর্থায়নে একটি ভাস্কর্য নির্মান করা হয় ।

২০১৬ সালে ভারতের ত্রিপুরার গভর্নর তথাগত রায় চৌধুরী সেখানে একটি স্মৃতিফলক উন্মোচন করেন । শুক্রবার ভোরে দূর্বৃত্তরা এই ভাস্কর্য ভাংচুর করেছে বলে স্থানীয়রা ধারনা করছে ।

১৯১৫ সালে ভারতের উড়িষ্যার বালেশ্বরে পুলিশের সাথে সম্মুখ যুদ্ধে বাঘা যতীন আহত হন । ১০ ই সেপ্টেম্বর বালেশ্বর হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তিনি মৃতুবরণ করেন । ভারতে বাঘা যতীনের নামে অনেক কিছু থাকলেও কুষ্টিয়ায় তার জন্মভূমি কয়া গ্রামের মামার বাড়ির সামনে এই ভাস্কর্য তার একমাত্র স্মৃতি ।

কুষ্টিয়ার পুলিশ সুপার এস.এম. তানভীর আরাফাত জানান, “বিপ্লবী বাঘা যতীনের ভাস্কর্যে আঘাত করা হয়েছে তাতে মুখ এবং নাকে কিছুটা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে । ঘটনাটি জেনেছি কিছুক্ষন আগে, তদন্ত সাপেক্ষে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে ।”

এ ব্যাপারে কুষ্টিয়ার ৩ আসনের সংসদ সদস্য বাংলাদেশ আওয়ামীলীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহবুব উল আলম হানিফ এক বিবৃতিতে বলেন, ” জাতির পিতার ভাস্কর্য ভাংচুর এবং বিপ্লবী বাঘা যতীনের ভাস্কর্য ভাংচুর একই সূত্রে গাঁথা । মৌলবাদী প্রতিক্রিয়াশীল গোষ্ঠী এই ন্যাক্কারজনক ঘটনা ঘটিয়েছে , তাদেরকে দেশের জনগনকে সাথে নিয়ে প্রতিহত করা হবে ।”

ভাস্কর্য ভাংচুরের বিষয়ে কুষ্টিয়ার জেলা প্রশাসক মোঃ আসলাম হোসেন বলেন, “মৌলবাদী গোষ্ঠির সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি নষ্ট করার জন্য ভাস্কর্যের ওপরে আঘাত হানছে, এটার বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে ।”

যতীন্দ্রনাথ মুখোপাধ্যায় ছিলেন একজন ব্রিটিশ-বিরোধী বিপ্লবী নেতা। তিনি ‘বাঘা যতীন’ নামেই সকলের কাছে সমধিক পরিচিত। ভারতে ব্রিটিশ-বিরোধী সশস্ত্র আন্দোলনে তিনি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা গ্রহণ রেখেছিলেন।

১৮৭৯ সালে কুষ্টিয়া জেলার কুমারখালী থানার কয়া গ্রামে তিনি জন্মগ্রহণ করেন । মাত্র ৩৫ বছর বয়সে ১৯১৫ সালে তিনি মৃত্যুবরণ করেন।

৬ ডিসেম্বর ২০১৬ সালে ব্রিটিশ-বিরোধী বিপ্লবী নেতা বাঘা যতীনের ভাস্কর্যটি উদ্বোধন করা হয়।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *