অনলাইন ডেস্ক : করোনার টিকা নিতে গেলে নিবন্ধন করতে হবে অনলাইনে। এসময় জাতীয় পরিচয়পত্র বা জন্মনিবন্ধন সনদের তথ্য যাচাই করা হবে। করোনার টিকা কেন্দ্র স্থাপনের জন্য আলাদা ১৫ ধরনের প্রতিষ্ঠান নির্ধারণ করা হয়েছে। এই টিকার জন্য প্রচলিত টিকা কেন্দ্র ব্যবহার করা হবে না।
গত সপ্তাহে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের কোভিড-১৯ টিকা বিতরণ ও প্রস্তুতি কমিটি জাতীয় পরিকল্পনা চূড়ান্ত করে জমা দিয়েছে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ে। করোনার টিকাবিষয়ক জাতীয় পরিকল্পনায় এসব কথা বলা হয়। কোভিড-১৯ টিকা বিতরণ ও প্রস্তুতি কমিটির প্রধান স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের অতিরিক্ত মহাপরিচালক (পরিকল্পনা ও উন্নয়ন) মীরজাদী সেব্রিনা ফ্লোরা গত সপ্তাহে এক সেমিনারে সাংবাদিকদের বলেন, কোভিড-১৯ টিকা বিতরণের জাতীয় পরিকল্পনা চূড়ান্ত হয়েছে। পরিকল্পনা অনুযায়ী কাজ শুরু হয়েছে। অনলাইনে নিবন্ধনের ব্যাপারে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের এটুআই কর্মসূচি ও আইসিটি বিভাগ সঙ্গে আলোচনা চলছে। তবে কীভাবে এই নিবন্ধনের কাজ হবে, তা এখনো চূড়ান্ত হয়নি।
জাতীয় পরিকল্পনায় বলা হয়েছে, সরকার সব মানুষকে একসঙ্গে টিকা দিতে পারবে না। এজন্য টিকা গ্রহণকারীদের অগ্রাধিকার তালিকা চূড়ান্ত করা হয়েছে। তালিকায় নাম অন্তর্ভুক্তির তত্ত্বাবধান করবে জেলা/সিটি করপোরেশন/পৌরসভা/উপজেলা কোভিড-১৯ কমিটি। সেই নাম ধরে নিবন্ধন করবে এটুআই কর্মসূচি। নিবন্ধনের সময় জাতীয় পরিচয়পত্র অথবা জন্মনিবন্ধন সনদ বা পাসপোর্টের দরকার হবে। পাশাপাশি কর্মকর্তা বা কর্মচারীর নিজস্ব প্রতিষ্ঠানের পরিচয়পত্র ব্যবহার করা হবে।
স্বাস্থ্য অধিদপ্তর বলছে, অনলাইনে কী পদ্ধতি বা প্রক্রিয়ায় নিবন্ধন হবে, এবং মাঠপর্যায়ে অগ্রাধিকারের তালিকা কে কীভাবে করবে, তা এখনো চূড়ান্ত হয়নি। স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের সম্প্রসারিত টিকাদান কর্মসূচির তথ্য মতে, করোনা টিকার জাতীয় পরিকল্পনায় নতুন কার্ড তৈরি করার কথা বলা হয়েছে। কার্ডে প্রথম ডোজ ও দ্বিতীয় ডোজের জন্য আলাদা রং ব্যবহারের কথা বলা আছে। প্রথম ডোজের মতো টিকার দ্বিতীয় ডোজ গ্রহণের সময় এই কার্ড সঙ্গে রাখতে হবে। কার্ডে ব্যক্তির মৌলিক তথ্যের (নাম, ঠিকানা, বয়স, পেশা) পাশাপাশি যক্ষ্মা, ক্যান্সার, এইচআইভি, কিডনি রোগ আছে কিনা সেই তথ্য জানার ব্যবস্থা থাকবে।
যেসব স্থানে টিকা দেওয়া হবে
সম্প্রসারিত টিকাদান কর্মসূচিতে ব্যবহৃত কেন্দ্রগুলো করোনা টিকা দেওয়ার কাজে ব্যবহার করা হবে না। কোভিড-১৯ টিকা দেওয়া জন্য বেশ কিছু স্থান নির্ধারন করা হয়েছে। সেগুলো হলো- উপজেলা স্বাস্থ্যকেন্দ্র, ইউনিয়ন পরিষদ কার্যালয়, জেলা সদর ও জেনারেল হাসপাতাল, সরকারি-বেসরকারি মেডিকেল কলেজ ও বিশেষায়িত হাসপাতাল, সংক্রামক ব্যাধি হাসপাতাল, সিটি করপোরেশন হাসপাতাল, ওয়ার্ড কাউন্সিলর কার্যালয়, আরবান প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্র, সরকারি ডিসপেনসারি, সরকারি ১০-২০ শয্যার হাসপাতাল, মা ও শিশু হাসপাতাল, পুলিশ হাসপাতাল, বন্দর হাসপাতাল, সচিবালয় ক্লিনিক ও জাতীয় সংসদ স্বাস্থ্যকেন্দ্র।
করোনার টিকার জাতীয় পরিকল্পনায় বলা আছে, সব টিকাগ্রহিতা টিকা নেওয়ার সময় সমান সুযোগ পাবেন। বৃদ্ধ ও দীর্ঘস্থায়ী রোগে আক্রান্ত ব্যক্তিদের টিকা নেওয়ার ক্ষেত্রে কোনো সমস্যা না হয় এমন কথা মাথায় রেখে টিকাকেন্দ্র স্থাপনের কথা ভাবা হয়েছে। টিকাকেন্দ্রে বসবার জন্য পর্যাপ্ত আসন থাকবে। টিকাদানের কক্ষগুলোতে পর্যাপ্ত আলো–বাতাসের ব্যবস্থা থাকবে। বৃদ্ধ ও দীর্ঘস্থায়ী রোগে ভোগা ব্যক্তিদের দেখভাল করার জন্য প্রতি কেন্দ্রে একজন করে স্বেচ্ছাসেবক রাখা হবে বলেও জানানো হয়।