অনলাইন ডেস্ক :
বাংলাদেশে করোনাভাইরাসের ভারতীয় ধরন পাওয়া গেছে বলে জানিয়েছে রোগতত্ত্ব, রোগ নিয়ন্ত্রণ ও গবেষণা ইনস্টিটিউট (আইইডিসিআর)।
শনিবার (৮ মে) এই তথ্য জানানো হয়েছে। সংস্থার পক্ষ থেকে এর প্রধান বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা ডা. এস এম আলমগীর জানান, রাজধানীর বেসরকারি এভারকেয়ার হাসপাতালে নেওয়া এক স্যাম্পল পরীক্ষা করে এই ধরন মিলেছে।
করোনায় প্রতিবেশী ভারতের অবস্থা ভয়াবহ। মৃত্যু ও শনাক্তে নতুন নতুন রেকর্ড হচ্ছে প্রতিদিন। দেশটিতে এবারের পরিস্থিতির জন্য বিশেষভাবে দায়ী করা হচ্ছে কভিডের ‘ডাবল’ বা ‘ট্রিপল মিউটেশন’ ভেরিয়েন্টকে। অত্যন্ত বিপজ্জনক এই ধরন বাংলাদেশে যাতে আসতে না পারে, সে জন্য ভারতের সঙ্গে সীমান্ত দুই সপ্তাহের জন্য বন্ধ করে দিয়েছে সরকার। তবে আমদানি-রপ্তানি বাণিজ্যের স্বার্থে পণ্যবাহী যানবাহন চলাচল অব্যাহত থাকবে। আর আকাশপথে গত ১৪ এপ্রিল থেকে ভারতের সঙ্গে যোগাযোগ বন্ধ রয়েছে।
গত ২৫ এপ্রিল রাতে ঢাকায় পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, আন্ত মন্ত্রণালয় সভার সিদ্ধান্ত অনুযায়ী ২৬ এপ্রিল সকাল ৬টা থেকে ৯ মে সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত স্থলবন্দরগুলো দিয়ে মানুষের চলাচল বন্ধ থাকবে। চিকিৎসার জন্য ভারতে অবস্থান করছে এবং ভিসার মেয়াদ ১৫ দিনের কম আছে- এমন বাংলাদেশি নাগরিকরা বেনাপোল, আখাউড়া ও বুড়িমারী স্থলবন্দর দিয়ে দেশে ফিরতে পারবে। তবে তাদের অবশ্যই নয়াদিল্লি, কলকাতা বা আগরতলায় বাংলাদেশ মিশনের অনুমতি এবং বাংলাদেশে প্রবেশের আগে ৭২ ঘণ্টার মধ্যে আরটি-পিসিআর পরীক্ষায় ‘কভিড নেগেটিভ’ সনদ থাকতে হবে। বাংলাদেশে প্রবেশের পর তাদের অবশ্যই দুই সপ্তাহ প্রাতিষ্ঠানিক কোয়ারেন্টিনে থাকতে হবে।
পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় জানায়, ভারত থেকে পণ্যবাহী যানবাহন বাংলাদেশে প্রবেশের আগে সীমান্তে অবশ্যই পুরোপুরি জীবাণুমুক্ত করতে হবে। চালক ও তাঁর সহকারীদের কঠোরভাবে কভিড-১৯ সংক্রান্ত স্বাস্থ্যবিধি অনুসরণ করতে হবে। স্থলসীমান্তগুলো বন্ধ থাকার সময় দুই দেশের মধ্যে রেলপথে পণ্য আমদানি-রপ্তানিকে উৎসাহিত করতে হবে। ভারতের সঙ্গে বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্কের আলোকে নয়াদিল্লি, কলকাতা ও আগরতলায় বাংলাদেশ মিশন ভারতের সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে বিষয়টি জানাবে।
আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যমগুলোর প্রতিবেদনে বলা হচ্ছে, ভারতে কভিডে মৃতের সংখ্যা এতই বাড়ছে যে শ্মশানে চিতার আগুন নিভছেই না। কভিডের ‘ডাবল’ বা ‘ট্রিপল মিউটেশন’ ভেরিয়েন্টের কারণে দেশটিতে পরিস্থিতি ভয়াবহ আকার ধারণ করেছে। বাংলাদেশেও কভিডের দ্বিতীয় ঢেউয়ে সংক্রমণ ও মৃত্যু বেড়েছে। কিন্তু এর পরও পরিস্থিতি ভারতের মতো গুরুতর নয়। এমন প্রেক্ষাপটে ভারতের মতো বিপর্যয়ে না পড়তে কভিডের ডাবল বা ট্রিপল মিউটেশন ভেরিয়েন্ট বা করোনার ভারতীয় ধরন ঠেকানোর ওপর জোর দিচ্ছেন স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা।