নাটোরে ভুয়া নিয়োগপত্র দিয়ে লাখ লাখ টাকা হাতিয়ে নিয়েছেন রাজু

নাটোর প্রতিনিধি :

 

নাটোরের বাগাতিপাড়ায় চাকরির ভুয়া নিয়োগপত্র দিয়ে প্রতারণার মাধ্যমে লক্ষ লক্ষ টাকা হাতিয়ে নেওয়ার অভিযোগে এক ব্যক্তিকে গ্রেপ্তার করেছে র‍্যাব। গতকাল বৃহস্পতিবার রাত সাড়ে ৮টায় বাগাতিপাড়া উপজেলার নন্দী কুজা দয়ারামপুর নিজ বাড়ি থেকে তাকে আটক করা হয়। আটক ব্যক্তি একই উপজেলার নন্দিকুজা দয়ারামপুর গ্রামের কফির উদ্দিনের ছেলে মনিরুল ইসলাম ওরফে রাজু (৩০)।

 

এ সময় র‍্যাব সদস্যরা ভুয়া নিয়োগপত্র উদ্ধারসহ দুটি পেনড্রাইভ, বিভিন্ন ব্যাংকের ১৬টি চেক বই ও ৭টি এটিএম কার্ড, একটি ভুয়াসহ ৩টি এনআইডি কার্ড, চাকরির চুক্তিনামা স্ট্যাম্প ৩টি, জুডিশিয়াল স্ট্যাম্প ১২টি, অর্থ লেনদেনের রেজিস্ট্রার আটটি, ভুয়া নিয়োগপত্র ২টি, ১৭টি চাকরির আবেদনপত্র এবং প্রতারণার নগদ ৫৮ হাজার ১৪০ টাকা এবং ৮০০ ভারতীয় রুপি উদ্ধার করা হয়।

 

আজ শুক্রবার সকালে নাটোর র‍্যাব ক্যাম্প কম্পানী কমান্ডার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মো. ফরহাদ হোসেন এক প্রেস ব্রিফিংয়ে জানান, প্রতারক মনিরুল ইসলাম রাজু এসএসসি পর্যন্ত লেখাপড়া করেছেন। তিনি পেশায় একজন ওষুধ বিক্রেতা হলেও নিজেকে সেনাবাহিনীর সিএমএইচ ঢাকায় করণিক পদে কর্মরত বলে পরিচয় দিতেন। এই পরিচয় ব্যবহার করে বিভিন্ন পদ যেমন সৈনিক, অফিস সহায়ক, মেস ওয়েটার, স্টোরম্যান পদে চাকরি দেয়ার প্রলোভন দেখিয়ে দেশের বিভিন্ন জেলা হতে তৃতীয় পক্ষের মাধ্যমে চাকরিপ্রত্যাশী যুবকদের কাছ থেকে লক্ষ লক্ষ টাকা হাতিয়ে নিতেন। এক্ষেত্রে প্রতারক মনিরুল জাল-জালিয়াতির মাধ্যমে ভুয়া নিয়োগপত্র তৈরি করে চাকরি প্রার্থীদের হাতে তুলে দিতেন। নিয়োগপত্রে উল্লেখিত তারিখে সংশ্লিষ্ট অফিসে যোগদানের জন্য যাওয়ার পর প্রতারিক ব্যক্তি বুঝতে পারতেন যে নিয়োগপত্রটি ভুয়া। এভাবে প্রতারক মনিরুল ওরফে রাজু ভুয়া নিয়োগপত্র তৈরি করে চাকরিপ্রত্যাশী বেকার যুবকদের কাছ থেকে প্রচুর টাকা হাতিয়ে নিয়েছেন। এছাড়া মনিরুল জাতীয় পরিচয়পত্রের নাম পরিবর্তন করে মোহাম্মদ মন্ডল পরিচয় ব্যবহার করেন।

 

কম্পানি কমান্ডার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মো. ফরহাদ হোসেন জানান, জিজ্ঞাসাবাদে মনিরুল ইসলাম ওরফে রাজু জাল-জালিয়াতির মাধ্যমে দেশের বিভিন্ন জেলা হতে প্রায় ৬০ থেকে ৭০ জন চাকরিপ্রত্যাশীর কাছ থেকে লাখ লাখ টাকা হাতিয়ে নেয়ার কথা স্বীকার করেছেন।

 

র‍্যাব ক্যাম্পে আসা প্রতারণার শিকার ঠাকুরগাঁও জেলার বড়ুয়াল গ্রামের নাসিম জানান, তার কাছ থেকে ৩ লাখ টাকা নিয়ে অফিস সহায়ক পদে চাকরির ভুয়া নিয়োগপত্র দিয়েছিলেন। সিএমএইচ এর ভেতরে তার এক কাকার মাধ্যমে এই টাকা লেনদেন হয়। পরে যোগদানের তারিখে তিনি জানতে পারেন যে সবকিছু ভুয়া। নাসিম জানান, তিনি একজন রিকসা ভ্যানচালক। অনেক কষ্ট করে তাকে টাকা জোগাড় করে দিয়েছেন। পরে তিনি জানতে পারেন তিনি প্রতারণার শিকার হয়েছেন। এ বিষয়ে বাগাতিপাড়া থানায় একটি মামলা দায়েরের প্রক্রিয়া চলছে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *