
জয়পুরহাট প্রতিনিধি :
অভাবী ও ঋণগ্রস্ত মানুষদের অর্থের প্রলোভন দেখিয়ে তাদের কিডনি বিক্রি করতে বাধ্য করা দালাল চক্রের আরও ২ জন সদস্যকে গ্রেফতার করেছে গোয়েন্দা পুলিশ। জয়পুরহাটের কালাই উপজেলার ওই দালালদের ঢাকার বিভিন্ন স্থান থেকে গ্রেফতার করা হয়। মঙ্গলবার দুপুরে সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানান পুলিশ সুপার মাছুম আহম্মদ ভূঞা।
গ্রেফতার দালালরা হলেন-কালাই উপজেলার টাকাহুত গ্রামের মৃত বেলায়েত হোসেন সরকারের ছেলে আব্দুল গোফফার সরকার (৪৫) ও জয়পুর-বহুতি গ্রামের আব্দুস সাত্তারের ছেলে নূর আফতাব (৪২)।
সংবাদ সম্মেলনে পুলিশ সুপার মাছুম আহম্মদ ভূঞা সাংবাদিকদের জানান, গ্রেফতার দালালরা দীর্ঘদিন ধরে জয়পুরহাট জেলাসহ পার্শ্ববর্তী নওগাঁ, গাইবান্ধা, দিনাজপুর এলাকার নিরীহ, ঋণগ্রস্ত ও হত দরিদ্র নারী এবং পুরুষদের মোটা অংকের টাকার লোভ দেখিয়ে তাদের কিডনি বিক্রি করতে বাধ্য করে আসছিলেন।
এসব নিরীহ মানুষরা জীবনের ঝুঁকি নিয়ে দালালদের খপ্পরে পরে ৪/৫ লাখ টাকায় চুক্তিতে তাদের মূল্যবান কিডনি বিক্রি করে দেন। ভারত ও দুবাইসহ বিভিন্ন দেশে গিয়ে তাদের কিডনি দিয়ে নামমাত্র চিকিৎসা নিয়ে যখন দেশে ফিরেন, তখন দালালরা বিমানবন্দরেই তাদের হাতে ১/২ লাখ টাকা হাতে ধরে দিয়ে বিদায় করেন। কিডনি দাতারা নিজের অঙ্গ বিক্রি করে ঝুঁকি নিয়ে জীবন অতিবাহিত করলেও লাভবান হচ্ছেন এসব দালালরা। আবার নিজের কিডনি বিক্রি করে প্রতারিত হয়ে নতুন করে দালাল বনে যাচ্ছেন এসব কিডনি দাতারা।
চলতি মাসের ১৪ মে জেলার কালাই ও পাঁচবিবি উপজেলার বিভিন্ন গ্রাম থেকে দালাল চক্রের ৭ সদস্যকে গ্রেফতার করা হয়। এই ধারাবাহিকতায় তথ্য-প্রযুক্তি ও গোয়েন্দা তথ্যের ভিত্তিতে আরও দুই দালালকে গ্রেফতার করা হয়। অল্প সময়ের মধ্যে অবৈধভাবে কিডনি বিক্রি শতভাগ বন্ধ করা না গেলেও অনেকটাই বন্ধ করা সম্ভব হবে বলেও আশাবাদী পুলিশ সুপার।
সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (ক্রাইম অ্যান্ড অপস) ফারজানা হোসেন, সদর সার্কেল মোসফেকুর রহমান ও পাঁচবিবি সার্কেল ইশতিয়াক আলমসহ পুলিশের বিভিন্ন কর্মকর্তা।