

রাজবাড়ী প্রতিনিধি :
আজ বুধবার (১৪ ফেব্রুয়ারি) রাত ১০টায় রাজবাড়ী রেলস্টেশন থেকে ২৪টি বগি সংবলিত ট্রেনটি ভারতের উদ্দেশে যাত্রা শুরু করবে এবং ওরস শেষে ট্রেনটি ফিরে আগামী ১৯ ফেব্রুয়ারি।
বাংলাদেশ-ভারত সরকার যৌথভাবে ১৯০২ সাল থেকে এই ওরস স্পেশাল ট্রেনটি চলাচলের ব্যবস্থা করে আসছে। তবে করোনার কারণে ২০২১ ও ২০২২ সালে ওরস স্পেশাল ট্রেন যায়নি।
ওরস স্পেশাল ট্রেনটি ছেড়ে যাওয়াকে কেন্দ্র করে রেলওয়ে স্টেশন এলাকায় প্রায় ৩০ থেকে ৪০ হাজার লোকের সমাগম ঘটে। রেললাইনের পাশ দিয়ে মুখরোচক খাবারসহ হরেক রকমের পসরার দোকান সাজিয়ে বসে দোকানিরা। এ সময় কেউ আসে ট্রেন দেখতে, কেউ বা আসে ঘুরতে, আবার কেউ আসে ট্রেনে চুম্বন ও সালাম করতে।
স্থানীয় মেহেদী হাসান জানান, তার বুঝ-জ্ঞান হওয়ার পর থেকেই দেখে আসছেন প্রতিবছর ১৪ ফেব্রুয়ারি রাতে রাজবাড়ী থেকে মেদেনীপুরে ওরসের একটি স্পেশাল ট্রেন যায়। এই ট্রেন দেখতে আসে প্রায় অর্ধলক্ষ মানুষ। এতে স্টেশন এলাকা মিলন মেলায় পরিণত হয়।
মেদেনীপুরের মুরিদান রেজাউল হোসেন খান, গোলাই মন্ডল জানান, আগামী ৪ ফাল্গুন (১৪ ফেব্রয়ারি) রাজবাড়ী থেকে ভারতের মেদেনীপুরে ওরসে একটি ট্রেন যাবে। সে ট্রেনে অনেকে বিভিন্ন কারণে যেতে পারে না। ফলে ভারতের মেদেনীপুরের সঙ্গে মিল রেখে রাজবাড়ী বড় মসজিদ খানকা শরিফেও ওরস করা হয়। ওরস উপলক্ষে গেট নির্মাণ, মসজিদ রংসহ নানা কাজ হচ্ছে। এখানেও হাজার হাজার মানুষ হয়।
রাজবাড়ী আঞ্জুমান-ই-কাদেরীয়ার সাধারণ সম্পাদক মো. আব্দুল আজিজ কাদেরী খোকন বলেন, ভারতের পশ্চিমবঙ্গের মেদিনীপুরের জোড়া মসজিদে আল মেদিনীপুরী (আ.) মশহুর নাম ‘মওলাপাক’-এর ১২৩তম ওরস শরিফ উপলক্ষে রাজবাড়ী আঞ্জুমান-ই-কাদেরীয়া দুই হাজার দুই শর বেশি ওরস যাত্রীর ভিসাসহ প্রায় সকল কার্যক্রম সম্পন্ন করেছে। এখন তারা যাত্রা শুরুর অপেক্ষা আছে। ১৪ ফেব্রুয়ারি রাতে ট্রেনটি ছেড়ে যাবে এবং ওরস শেষে ফিরে আসবে ১৯ ফেব্রুয়ারি রাতে। মেদেনীপুরের সঙ্গে মিল রেখে রাজবাড়ীর বড় মসজিদ খানকা শরিফে অনুষ্ঠিত হবে।
তিনি আরো বলেন, ওরস শরিফে যাওয়ার জন্য হাজার হাজার ভক্ত ও মুরিদান আবেদন করে। কিন্তু ব্যবস্থা না থাকায় সবাইকে নিতে পারছেন না। যে কারণে লটারির মাধ্যমে নির্বাচিত করে পাসপোর্ট নিয়ে ভিসা সম্পন্ন করেন। তবে অনেকে সড়কপথসহ অন্যান্যভাবে মেদেনীপুরের ওরস শরিফে যায়।
রাজবাড়ী রেলওয়ে থানার ওসি সোমনাথ বসু বলেন, ওরস স্পেশাল ট্রেনটি ছেড়ে যাওয়াকে কেন্দ্র করে স্টেশন এলাকায় ওরস যাত্রীসহ প্রায় ১৫ থেকে ২০ হাজার মানুষের সমাগম ঘটে। যাত্রী ও জনগণের জানমাল রক্ষায় তাঁরা সর্বোচ্চ নিরাপত্তা দেবেন। এ ছাড়া স্টেশন এলাকা সিসিটিভির আওতায় থাববে।
রাজবাড়ী রেলওয়ে স্টেশন মাস্টার তন্ময় কুমার দত্ত বলেন, ১৯০২ সাল থেকে আঞ্জুমান-ই-কাদেরীয়ার উদ্যোগে রাজবাড়ী থেকে ভারতের মেদেনীপুরে একটি ওরস স্পেশাল ট্রেন যায়। আগামী বুধবারও রাত ১০টায় ২৪টি বগি সংবলিত ওরস স্পেশাল ট্রেন রাজবাড়ী থেকে ভারতের মেদেনীপুরের উদ্দেশে ছেড়ে যাবে। ট্রেনটিতে দুই হাজারের বেশি ওরস যাত্রী থাকবে এবং ট্রেনটি ভারতীয় কোচ দ্বারা চলবে।