রাজবাড়ীতে গৃহবধূকে হত্যার দায়ে একজনের মৃত্যুদণ্ড

রাজবাড়ী প্রতিনিধি :

 

প্রেমের ফাঁদে ফেলে গৃহবধূকে শ্বাসরোধ করে হত্যার দায়ে আব্দুর রহিম মণ্ডল (৫৬) নামের একজনকে মৃত্যুদণ্ড দিয়েছেন আদালত। একইসঙ্গে তাকে ৫০ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়।

 

বৃহস্পতিবার (২৪ অক্টোবর) দুপুরে রাজবাড়ী জেলার সিনিয়র দায়রা জজ মোসাম্মাৎ জাকিয়া পারভীন এ রায় দেন। রায়ের সময় আসামি আদালতে উপস্থিত ছিলেন।

 

দণ্ডপ্রাপ্ত আব্দুর রহিম রাজবাড়ীর কালুখালী উপজেলার জাগিরকয়া গ্রামের মৃত তাছের আলী মণ্ডলের ছেলে।

 

নিহত ফাহিমা ফরিদপুরের ভাঙ্গা উপজেলার তুজারপুর গ্রামের সেকেন ফকিরের মেয়ে।

 

মামলা সূত্রে জানা গেছে, ফাহিমা ও অভিযুক্ত রহিম মণ্ডল কাতারে থাকতেন। বছর তিনেক আগে তাঁরা দেশে আসেন। কাতার থাকাকালে আবদুর রহিমের কাছ থেকে ২ লাখ ১০ হাজার টাকা ধার নেন ফাহিমা। একটি ঝামেলার কারণে রহিম দেশে চলে আসতে বাধ্য হন। তখনও ফাহিমা কাতারে ছিলেন।

 

পরে করোনার সময় ফাহিমাও দেশে চলে আসেন। দেশে আসার পরও ফাহিমা ধারের টাকা ফেরত দিচ্ছিলেন না। টাকা চাইলে নানা রকম টালবাহানা করতেন। একদিন টাকা আনতে রহিম ভাঙ্গায় যান। কিন্তু সেখানে ফাহিমা আগে থেকেই কয়েকজনকে দিয়ে রহিম শায়েস্তা করার উদ্যোগ নিয়েছিলেন। বুঝতে পেরে বাড়িতে ফিরে আসেন তিনি। এ ঘটনায় ফাহিমার ওপর ক্ষুব্ধ হন আব্দুর রহিম। তাঁকে হত্যার পরিকল্পনা করেন।

 

হত্যার পরিকল্পনার অংশ হিসেবে ফাহিমার সঙ্গে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে তোলেন তিনি। তাঁকে বিয়ের প্রলোভন দেখান। বিয়ে করলে পাওনা টাকা ফেরত দিতে হবে না শর্তে ফাহিমা রাজি হন। রহিমকে বিয়ে করার জন্য ২০২৩ সালের ৩০ সেপ্টেম্বর ফাহিমা বাড়ি থেকে বের হন। ফাহিমাকে ভাঙ্গা থেকে ডেকে নিয়ে আসেন তিনি। ওই দিন রাত ৯টার দিকে ফাহিমা মৃগী বাজারে আসেন। এরপর তারা (ফাহিমা ও রহিম) হাঁটতে থাকেন। রাত সাড়ে ৯টার দিকে পেছন থেকে গলায় গামছা পেঁচিয়ে ফাহিমাকে হত্যা করেন রহিম। এরপর তাঁর লাশ রাজবাড়ীর কালুখালী উপজেলার কাওয়াখোলা গ্রামে একটি ধানক্ষেতে এনে ফেলে রাখেন।

 

গত ৫ অক্টোবর ধানক্ষেত থেকে পুলিশ লাশ উদ্ধার করে থানায় নিয়ে আসে। গত ৭ অক্টোবর অজ্ঞাতনামা ব্যক্তিদের আসামি করে কালুখালী থানায় মামলা করে পুলিশ। এ ঘটনায় জড়িত সন্দেহে আবদুর রহিমকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ।

 

নিহত ফাহিমারের মেয়ে মাকসুদা আক্তার বলেন, তার মাকে বিয়ের প্রলোভন দেখিয়ে রাজবাড়ীতে এনে নগদ টাকা পয়সা ও স্বর্ণালংকার নিয়ে হত‌্যা করা হয়েছে। হত্যাকারীর ফাঁসির আদেশ হওয়ায় আমরা খুশি।

 

আদালতের অতিরিক্ত পিপি আহম্মেদ আলী মৃধা বলেন, সাক্ষ্যপ্রমাণ শেষে আদালত আব্দুর রহিম মণ্ডলকে মৃত্যুদণ্ড দিয়েছেন।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *