অনলাইন ডেস্ক : বিশ্বজুড়ে করোনাভাইরাসের সংক্রমণ ছড়িয়ে পড়ার পর এখন সবার দৃষ্টি এর প্রতিষেধক এবং ওষুধের দিকে। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা বলেছে, এই সংক্রমণের কার্যকর ওষুধ বা প্রতিষেধক এখন পর্যন্ত উদ্ভাবিত হয়নি। তবে আশার কথা এটাই যে- যুক্তরাষ্ট্র, চীন, হংকং, অস্ট্রেলিয়া, ইজরায়েল এমনকি ভারতেও এই মারণ ভাইরাসকে প্রতিরোধ করার উপায় আবিষ্কারের চেষ্টা করছেন বিজ্ঞানী-গবেষকরা। কাজও এগোচ্ছে তরতরিয়ে। এরই মধ্যে যুক্তরাষ্ট্র ও চীনে মানবদেহে করোনা প্রতিষেধক টিকার পরীক্ষামূলক প্রয়োগ করা হয়েছে। এবার পোলিশ বিজ্ঞানীদের একটি দল করোনাভাইরাসকে মেরে ফেলার ফর্মূলা পেয়ে গেছেন বলে জানিয়েছেন। তাদের এই দাবি যদি সঠিক হয় তাহলে করোনার প্রতিষেধক আবিষ্কারে এটা মাইলফলক হবে।
পোলিশ বিজ্ঞানীরা এমন একটি এনজাইম বিশ্লেষণ করেছেন যা কোভিড-১৯ এর বিরুদ্ধে নিরাময়ের চাবিকাঠি হতে পারে। দেশটির রোকা ইউনিভার্সিটি অফ টেকনোলজির প্রফেসর মার্সিন দ্র্যাগের দলটি বলেছে যে, তারা এমন একটি এনজাইম সনাক্ত করতে সক্ষম হয়েছেন যেটা নষ্ট হয়ে গেলে সার্স-সিওভি -২ এমপ্রো প্রোটেস ভাইরাসের প্রোটিন আচ্ছাদন ভেঙে যায় এবং ভাইরাসটি তাৎক্ষণিকভাবে মারা যায়। এটা সত্য হলে করোনার প্রতিরোধ এখন সময়ের ব্যাপার মাত্র।
অধ্যাপক দ্র্যাগে পিএপিকে বলেছিলেন, ‘এটি খুব চমৎকার একটি আবিষ্কার। আমরা মানুষের জীবন বাঁচতে সক্ষম হব,যদি এই এনজাইমটি প্রতিরোধ করা হয় তবে ভাইরাসটি তাৎক্ষণিকভাবে মারা যাবে। যদি আমরা এমন কোনও ওষুধ তৈরি করি যা এই এনজাইমকে প্রতিরোধ করে, তবে আমরা সত্যিই ভাইরাসটিকে হত্যা করতে পারবো।
তিনি আরও বলেন, পূর্ববর্তী করোনভাইরাস মহামারি সার্স থেকে আমরা এটা জানতে পারি। যদি আমরা এই এনজাইমটিকে একটি লক হিসাবে বিবেচনা করি তাহলে আমরা এটাকে হত্যা করার চাবিটিও পেয়ে যাবো। যদিও এনজাইমটি এরই মধ্যে সনাক্ত করা হয়েছে, তবে এটির সম্ভাব্য লক্ষ লক্ষ কম্বিনেশন আছে। সেখান থেকে সঠিকটা খুজে বের করতে হবে।
বিজ্ঞানীরা বলছেন যে, তারা এখন করোনার এনজাইমের সাথে মেলে এমন একটি চাবিকাঠি খুঁজছেন। এই চাবি হল সেই তথ্যটি যা অ্যামিনো অ্যাসিডকে এনজাইমের সঙ্গে আবদ্ধ করতে পারে।
অধ্যাপক দ্র্যাগে বলেছেন, আমরা বলতে পারি যে এগুলি বড়, ছোট, হাইড্রোফোবিক বা ক্ষারীয় অ্যামিনো অ্যাসিড। আমরা এনজাইমের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ অংশগুলিও ম্যাপও তৈরি করেছি এবং এটি এরই মধ্যে বাজারে থাকা ওষুধের সাথে মেলাতে পারি। কারণ এনজাইমটি অনন্য যেহেতু এটি কার্যত মানুষের মধ্যে ঘটে না, তাই আশা করা যায় যে এর বিরুদ্ধে কাজ করা ওষুধগুলি কেবল ভাইরাসের ক্ষতি করবে এবং বাহকটির পক্ষে কম বিষাক্ত হবে।
এই বছরের ফেব্রুয়ারিতে জার্মানির ল্যাবেক বিশ্ববিদ্যালয়ের বিজ্ঞানীরা করোকাভাইরাস সার্স-সিওভি -২ প্রোটেসকে রোকা-তে প্রেরণ করার পরে এই আবিষ্কার করা সম্ভব হয়েছে। অধ্যাপক দ্র্যাগে এবং তার দল সেই থেকে এটি নিয়ে বিশ্লেষণ করে চলেছেন।
তিনি বলেছিলেন, ‘আমরা বেশ কয়েক বছর ধরে জার্মানির ল্যাবেক বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রফেসর রল্ফ হিলজেনফিল্ডের গ্রুপের সাথে কাজ করছি। জিকা ভাইরাসের মহামারী চলাকালীন আমি তার সাথে একটি প্রবন্ধ প্রকাশ করেছি এবং সম্প্রতি ওয়েস্ট নীল ডেঙ্গু ভাইরাস সম্পর্কে একটি প্রকাশনা প্রকাশ করেছি। অধ্যাপক হিলজেনফিল্ড পূর্ববর্তী সার্স মহামারির বিলুপ্তিতে ব্যাপক ভুমিকা রেখেছিলেন।