কুষ্টিয়া খোকসায় নিম্নমানের ভেজাল আখের গুড় তৈরির কারখানার ৩ ব্যবসায়ী আটক

কুষ্টিয়া জেলা প্রতিনিধি : কুষ্টিয়ার খোকসায় নিম্নমানের ভেজাল আখের গুড়ের গাদ, চিনি ও কেমিক্যাল মিশিয়ে আখের গুড় তৈরি, সংরক্ষন ও বাজারজাতকরনের অভিযোগে তিনজনকে আটক করেছে খোকসা থানা পুলিশ।

এই ভেজাল আখের গুড় মানবদেহের জন্য অত্যন্ত ক্ষতিকর। সোমবার দিবাগত গভীর রাতে খোকসা উপজেলার কালীবাড়ীপাড়া এলাকায় অভিযান পরিচালনা করে পুলিশ। এ অভিযানকালে সেখান থেকে বিপুল পরিমান ভেজাল গুড়ের গাদ, চিনিসহ কেমিক্যাল উদ্ধার করা হয়। ঘটনাস্থল থেকে ভেজাল গুড় তৈরীর অভিযোগে তিনজনকে আটক করা হয়। আটককৃতরা হলেন কুষ্টিয়ার খোকসা উপজেলার কালীবাড়ী পাড়া এলাকার মৃত সত্যরঞ্জন বিশ্বাসের ছেলে দিলিপ কুমার বিশ্বাস ওরফে ষষ্ঠী (৪৫), একই এলাকার মৃত কালীপদ বিশ্বাসের ছেলে নিত্য গোপাল বিশ্বাস(৬৫) এবং মানিকগঞ্জ সদর উপজেলার হাটিপাড়া গ্রামের মৃত শেখ আছির উদ্দিনের ছেলে শেখ আলমাস(৪৮)।

খোকসা থানার সম্মানিত ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা জহুরুল আলম জানান, দীর্ঘদিন ধরে এই তিন ব্যক্তি নিম্নমানের আখের গুড়ের গাদ, চিনি ও কেমিক্যাল মিশিয়ে আখের গুড় তৈরি, সংরক্ষন ও বাজারজাতকরন করে আসছিলো। এমন অভিযোগের প্রেক্ষিতে আমাদের পুলিশ সুপার এস এম তানভীর আরাফাত স্যারের নির্দেশনায় আমরা ভেজাল গুড়ের কারখানায় অভিযান পরিচালনা করি এবং সেখান থেকে বিপুল পরিমান ভেজালগুড়সহ চিনি ও কেমিক্যাল উদ্ধার করা হয়। পাশাপাশি এই কাজের সাথে জড়িত থাকার অভিযোগে ৩জনকে আটক করা হয়েছে এবং আটককৃতদের আদালতের মাধ্যমে জেল হাজতে প্রেরন করা হয়েছে। আমরা তাদের তৈরীকৃত গুড়ের নমুনা সংগ্রহ করে বিএসটিআইয়ে পাঠাবো। এইগুড়গুলো খাবারের যোগ্য কি না যাচাই বাছাই শেষে পরবর্তী আইনগত ব্যবস্থা গ্রহন করবো। ইতিমধ্যে বিশেষ ক্ষমতা আইন ১৯৭৪ এর ২৫ গ ১(ক) (খ) ধারা মোতাবেক একটি মামলা দায়ের হয়েছে। মামলা নং-১২, তারিখ- ২৮/০৪/২০২০ ইং।

কুষ্টিয়ার পুলিশ সুপার এসএম তানভীর আরাফাত জানান, আটককৃত ৩ ব্যক্তি যে প্রক্রিয়ায় গুড় তৈরী, সংরক্ষন এবং বিক্রি করছে আপাত দৃষ্টিতে মনে হচ্ছে এগুলো খাবারের অনুপোযোগী। আমরা গুড়ের নমুনা সংগ্রহ করেছি এবং সেগুলো খাবারের উপযোগী কি না তা পরীক্ষার জন্য বিএসটিআইয়ে পাঠাবো। পুলিশ সুপার আরো জানান, তারা দীর্ঘদিন ধরে এইভাবে গুড় তৈরী ও বিক্রি করে আসছে বলেও অভিযোগ আছে। আমরা সবকিছু যাচাই বাচাই শেষে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহন করবো। স্থানীয়রা জনগণ জানান, এই তিন ব্যবসায়ী বেশি লাভের জন্য মূলত আখের গুড় সংগ্রহ করে তার সাথে চিনি, নিম্ন মানের আখের গুড়ের গাদ, হাইড্রোস ও বিভিন্ন রাসায়নিক মিশিয়ে আখের গুড় তৈরী ও বিক্রি করতো। স্থানীয়ভাবে যা দোজালি নামে পরিচিত। এই গুড় মানবদেহের জন্য অত্যন্ত ক্ষতিকর। দীর্ঘদিন এই তিন ব্যবসায়ী প্রকাশ্যে এই ব্যবসা করে আসলেও বার বার ধরাছোয়ার বাইরে থেকে গেছে। পুলিশের এই ধরনের অভিযান ও ব্যবস্থা গ্রহনের জন্য কুষ্টিয়ার পুলিশ সুপার ও স্থানীয় পুলিশ প্রশাসনকে ধন্যবাদ জানিয়েছেন স্থানীয়রা।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *