এবিএস রনি, যশোর প্রতিনিধি : লিবিয়ায় মানব পাচারকারী চক্র নির্মম নিষ্ঠুরভাবে ২৬ বাংলাদেশীকে হত্যা করে। তাদেরই মধ্যে একজন যশোর জেলার ঝিকরগাছা উপজেলার রাকিবুল ইসলাম রাকিব (১৮)। সুখের আশায় গত ১৩ই ফেব্রুয়ারী পাড়ি জমিয়েছিল লিবিয়ায়। কিন্তু মানব পাচারকারী চক্র তাকে লিবিয়ায় আটক রেখে মুক্তিপণ আদায়ের জন্য নির্মম-নির্দয়ভাবে নির্যাতন ও গুলি করে হত্যা করে।
নিহতের পারিবারিক সূত্রে জানা যায়, রাকিবুল যশোর সরকারী সিটি কলেজের অর্থনীতি বিভাগের ১ম বর্ষের ছাত্র ছিল এবং চার ভাই-বোনের মধ্যে রাকিবুল সবার ছোট। অর্থনৈতিক স্বচ্ছলতা ও ভাগ্য বদলের আশায় পৈতৃক জমি বিক্রি ও জমানো টাকা সহ মোট সাড়ে চার লাখ টাকা খরচ করে গত ১৩ই ফেব্রুয়ারী রাকিবুলকে লিবিয়ায় পাঠানো হয়েছিল।
লিবিয়া প্রবাসী রাকিবুলের এক চাচাতো ভাই লিবিয়া প্রবাসী এক বাংলাদেশী দালালের মাধ্যমে তাকে সেখানে পাঠায়। কিন্তু দালাল চক্র লিবিয়ায় একটি শহরে তাকে আটক রেখে নির্যাতন শুরু করে এবং পরিবারের কাছে গত ১৭ই মে মোবাইলে ১০ লাখ টাকা মুক্তিপণ দাবী করে। পরিবারের লোকজন ১লা জুন পর্যন্ত সময় চেয়ে দালালদের মুক্তিপণের টাকা দিতে রাজি হয়। দালাল চক্র দুবাই থেকে উক্ত মুক্তিপণের টাকা নিতে চেয়েছিল। এরই মধ্যে রাকিবুলের সেই প্রবাসী চাচাতো ভাই ফোন করে জানায়, “মানব পাচারকারী চক্র লিবিয়ার দক্ষিণাঞ্চলীয় শহর মিজদাহে (ত্রিপলি হতে ১৮০ কিঃমিঃ দক্ষিণে) বর্বোরোচিত ভাবে ২৬ বাংলাদেশী সহ ৩০ জন অভিবাসীকে হত্যা করেছে। তাদের মধ্যে রাকিবুল আছে। তার মরদেহ কবে এবং কিভাবে দেশে পাঠানো যাবে সেটা এখন বলা যাচ্ছেনা।” অকালে সন্তান হারানোর শোকে এখন দিশেহারা রাকিবের পরিবারের সদস্যরা ও আত্মীয়-স্বজন। তার এমন দুর্ভাগ্যজনক অকাল মৃত্যুতে ঝিকরগাছার খাটবাড়িয়া গ্রাম সহ অত্র এলাকায় শোকের ছায়া নেমে এসেছে।
এই ব্যাপারে ঝিকরগাছার শংকরপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান নিছার উদ্দীন বলেন, লিবিয়ায় মানবপাচারকারী চক্রের হাতে যে ২৬ জন বাংলাদেশী নিহত হয়েছে। তার মধ্যে খাটবাড়িয়া গ্রামের রাকিবুল নামে এক যুবক আছে। বিষয়টি খুবই দুঃখজনক। তার মরদেহ সরকারের মাধ্যমে দেশে আনার জন্য আমরা সর্বাত্মক ভাবে চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছি।