ভারতে ৮৭ হাজার স্বাস্থ্যকর্মী করোনাভাইরাসে আক্রান্ত

অনলাইন ডেস্ক : ভারতে গত কয়েক মাসে ৮৭ হাজারের বেশি স্বাস্থ্যকর্মী করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছেন। এর মধ্যে করোনায় প্রাণ হারিয়েছেন ৫৭৩ জন স্বাস্থ্যকর্মী। খবর এই সময়ের।

প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, করোনায় আক্রান্ত স্বাস্থ্যকর্মীদের অধিকাংশ মাত্র ছয় রাজ্যে। মহারাষ্ট্র, কর্নাটক, তামিলনাড়ু, পশ্চিমবঙ্গ ও গুজরাটে। এখন পর্যন্ত যত স্বাস্থ্যকর্মী করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন, তার প্রায় তিন-চতুর্থাংশই ছয় রাজ্যে। শতাংশের হিসেবে ৭৪ শতাংশ। আবার স্বাস্থ্যকর্মীদের মোট মৃত্যুর ৮৬ শতাংশ ঘটেছে এসব রাজ্যে।
মহারাষ্ট্রে এ পর্যন্ত করোনায় আক্রান্তের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ৭.৩ লাখেরও বেশি। পুরো দেশে যতজন স্বাস্থ্যকর্মী আক্রান্ত, তার ২৮ শতাংশ মহারাষ্ট্রে। আবার করোনার বিরুদ্ধে লড়াইয়ে নেমে যত স্বাস্থ্যকর্মী মারা গেছেন, তার ৫০ শতাংশের বেশি ঘটনা ঘটেছে এই রাজ্যে।

মহারাষ্ট্র, কর্নাটক ও তামিলনাড়ু মিলিয়ে গতকাল শুক্রবার পর্যন্ত ১ লাখের ওপর স্বাস্থ্যকর্মীর করোনাভাইরাস টেস্ট হয়েছে। এর মধ্যে কর্নাটকে মাত্র ১২ হাজার ২৬০ জন স্বাস্থ্যকর্মীর কোভিড টেস্ট রিপোর্ট পজিটিভ এসেছে। সংক্রমণের সংখ্যাটা মহারাষ্ট্রে-এর প্রায় দ্বিগুণ। চিকিৎ‌সক-নার্সসহ তামিলনাড়ুতে ১১ হাজার ১৬৯ জন স্বাস্থ্যকর্মী আক্রান্ত। কোভিড আক্রান্ত ৫৫ শতাংশ স্বাস্থ্যকর্মীই এই তিন রাজ্যে।

কেন্দ্রের রিপোর্ট অনুযায়ী, মহারাষ্ট্রে ২৯২ জন স্বাস্থ্যকর্মী মারা গেছেন। কর্নাটক ও তামিলনাড়ুতে মৃত্যু হয়েছে যথাক্রমে ৪৬ ও ৪৯ জন স্বাস্থ্যকর্মীর।

গোটা দেশে ৮৭ হাজারের উপর স্বাস্থ্যকর্মীর করোনা সংক্রমণ কেন্দ্রের দুশ্চিন্তার কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। মন্ত্রিসভার সচিবের নেতৃত্বে বৃহস্পতিবারের বৈঠকে বিষয়টি পর্যালোচনা করা হয়।

মনে করা হচ্ছে, হাসপাতালগুলোতে সংক্রমণ যথাযথভাবে নিয়ন্ত্রণ করা হচ্ছে না। ফাঁক থেকে যাচ্ছে। যার জেরে সামনের সারি থেকে লড়াই করা স্বাস্থ্যকর্মীদের মধ্যে ভাইরাস সংক্রমণ ঘটছে। চিকিত্‍ৎসক, নার্স, আশাকর্মীসহ স্বাস্থ্যকর্মীদের সুরক্ষা নিশ্চিত করতে রাজ্যগুলোকে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নিতে বলা হয়েছে।

কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের রিপোর্টে আরও জানা গেছে, ৫৭৩ জন স্বাস্থ্যকর্মী মারা গেলেও গত এপ্রিল থেকে এ পর্যন্ত মাত্র ১৪৩টি ইনস্যুরেন্স ক্লেম জমা পড়েছে। কেন্দ্রের তরফে স্বাস্থ্যকর্মীদের জন্য ৫০ লাখ টাকা করে কোভিড-১৯ বিমা করে দেওয়া হয়েছিল। কোনো কারণে হয়তো তারা বিমার আওতায় আসেননি। তাই মৃত্যুর সঙ্গে বিমার আবেদনের সংখ্যায় ফারাক থেকে গেছে।

স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞদের ধারণা, উপসর্গহীন রোগীদের থেকেই সংক্রামিত হওয়ার ঝুঁকি থেকে যায় স্বাস্থ্যকর্মীদের। পিপিই, কিট ঠিকমতো ব্যবহার করা হচ্ছে না বলেও তাদের অভিমত। যার জেরে এই পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *