অনলাইন ডেস্ক :
ভারতের রাজধানী দিল্লির বর্তমান পরিস্থিতি একেবারেই করুণ। শ্মশানে জায়গা না-পেয়ে বাড়িতে মরদেহ ফিরিয়ে এনে পচন আটকাতে বরফ-চাপা দেওয়াটা দিল্লির বিভিন্ন প্রান্তে নিত্য-নৈমিত্তিক ঘটনা।
একাকী যারা মারা গেছেন, তাদের কারো কারো সৎকার হচ্ছে স্বেচ্ছাসেবী সংস্থার হাতে। অক্সিজেন নিয়ে হাহাকার অব্যাহত রয়েছে এবং শ্মশানে চিতার সারি। গড়ে প্রতি ঘণ্টায় ১০ থেকে ১৫ জন করোনা রোগীর মরদেহ দাহ হচ্ছে শ্মশানে।
করোনা মহামারির শুরু থেকে এখন পর্যন্ত দিল্লিতে করোনায় মৃতের সংখ্যা ১৫ হাজারের বেশি। গত তিন-চার সপ্তাহে শুধু নথিভুক্ত মরদেহ ৩৯৮২ জনের।
অনেকের দাবি, প্রকৃত সংখ্যা আরো অনেক বেশি। কারণ নথিভুক্ত না করেই বহু মরদেহ দাহ হয়ে যাচ্ছে।
১১ বছর ধরে দিল্লির দয়ানন্দ মুক্তিধাম শ্মশানে কাজ করছেন রামপাল। তিনি বরাবরই লোকজনকে বলছেন, এখানে আসবেন না। জায়গা নেই।
কিন্তু তার কথায় কাজ হচ্ছে না। রামপাল বলেন, এখানে প্রতিদিন ৩০ জনের দেহ দাহ করা সম্ভব। সেখানে গত পাঁচ দিনে রোজ ৪০ থেকে ৫০ জনের দেহ দাহ করতে হয়েছে। সরকারের কাছে আবেদন জানাচ্ছি, যমুনার তীরে দাহকার্যের ব্যবস্থা করুন। তাহলে অন্তত পারস্পরিক দূরত্ব বজায় রেখে কাজ করা যাবে। এখানে তা সম্ভব হচ্ছে না। একজনের দেহ দাহ করতে অন্তত ৩০০ কেজি কাঠ লাগে। এত কাঠই বা কে জোগায়? এখন তো কাঠের থেকে শবের সংখ্যা বেশি!
এদিকে ভারতে এখন পর্যন্ত করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হিসেবে শনাক্ত হয়েছে এক কোটি ৮৭ লাখ ৫৪ হাজার ৯৮৪ জন এবং মারা গেছে দুই লাখ আট হাজার ৩৮৩ জন।
দেশটিতে গত ২৪ ঘণ্টায় করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হিসেবে শনাক্ত হয়েছে তিন লাখ ৮৬ হাজার ৮৮৮ জন এবং মারা গেছে তিন হাজার ৫০১ জন। এর আগের দিন ২৮ এপ্রিল করোনায় আক্রান্ত হয়েছে তিন লাখ ৭৯ হাজার ৪৫৯ জন এবং মারা গেছে তিন হাজার ৬৪৭ জন।
দেশটিতে করোনায় আক্রান্তদের মধ্যে সুস্থ হয়েছে এক কোটি ৫৩ লাখ ৭৩ হাজার ৭৬৫ জন এবং বর্তমানে আক্রান্ত অবস্থায় রয়েছে ৩১ লাখ ৭২ হাজার ৯০৬ জন।
ভারতে করোনায় আক্রান্তদের মধ্যে সুস্থ হওয়ার হার ৯৯ শতাংশ এবং মারা যাওয়ার হার এক শতাংশ। সে দেশে বর্তমানে করোনায় আক্রান্তদের মধ্যে গুরুতর অবস্থায় রয়েছে আট হাজার ৯৪৪ জন এবং বাকিদের অবস্থা স্থিতিশীল।
সূত্র : আনন্দবাজার, ওয়ার্ল্ডোমিটার।