৭ মার্চের ঘোষণাই ছিল আমাদের স্বাধীনতার ডাক : মাহবুবউল আলম হানিফ

কুষ্টিয়া প্রতিনিধি :

 

 আজকে একটা উৎসবমুখর পরিবেশে এখানে জনসভা হবে- সে উদ্দেশ্যে আমি রওনা দিয়েছিলাম প্রিয় ভাই ও বোনেরা আমার। কিন্তু পথিমধ্যে শুনতে পেলাম আমাদের এখানে একটা গ্রামে পানের বরজে আগুন লেগে ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। প্রায় ৬-৭ কিলোমিটার আগুনে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। খুব স্বাভাবিক কারণেই মনের মধ্যে উৎসবের আমেজটা আনতে পারছি না। আমি দ্রুত সভা শেষ করে ঘটনাস্থলে যাব। সেই কারণে আমি সংক্ষেপে কথা বলে শেষ করে দিতে চাই। অনুষ্ঠান শেষ করে আমি ক্ষতিগ্রস্ত এলাকা দেখতে যাব।

 

যার জন্য আমরা এখানে উপস্থিত হয়েছি- মিরপুর থানা থেকে নব-নির্বাচিত সংসদ সদস্য আমাদের সকলের প্রিয় কামারুল আরেফিনসহ উপজেলা আওয়ামী লীগের নেতৃবৃন্দ, জেলা আওয়ামী লীগের নেতৃবৃন্দ, আমার সামনে উপস্থিত এই থানা-উপজেলার বিভিন্ন ইউনিট থেকে আগত নেতাকর্মী, সহযোগী-ভ্রাতৃপ্রতীম সংগঠনের ভাই ও বোনেরা সবাইকে জানাই মহান স্বাধীনতা যুদ্ধে ত্রিশলক্ষ শহিদ ও দুইলক্ষ মা-বোন- যাদের আত্মত্যাগের বিনিময়ে অর্জন হয়েছিল আমাদের এই স্বাধীনতা।

 

৭০ এর নির্বাচনে বিজয়ী হওয়ার পর ৭১ এর ৭ মার্চ ঐতিহাসিক সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে স্বাধীনতার ঘোষণা দিয়েছিলেন জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান। ৭ মার্চের ঘোষণাই ছিল মূলত আমাদের স্বাধীনতার ডাক। এর মধ্যেই একদিকে ছিল পাকিস্তানি শাসক গোষ্ঠীর অত্যাচার-নির্যাতন-শোষণ-নিপিড়নের ঘটনা, আরেকদিকে ছিল আন্দোলন-সংগ্রামের বর্ণনা। পাশাপাশি পাকিস্তানি শাসকগোষ্ঠীর বিরুদ্ধে যুদ্ধ করার পরিস্কার দিক নির্দেশনা। যারই ধারাবাহিকতায় ৭১ এর ২৫ মার্চ অর্থাৎ ২৬ মার্চ প্রথম প্রহরে অপারেশন সার্চলাইট শুরু হওয়ার পরেই বঙ্গবন্ধু আরেকবার স্বাধীনতার ঘোষণা দিয়েছিলেন। এবং আপনারা সকলে যুদ্ধে ঝাঁপিয়ে পরে নয় মাস যুদ্ধ করে স্বাধীনতা ছিনিয়ে এনেছিলেন।

 

বঙ্গবন্ধু যে স্বপ্ন দেখিয়ে এদেশ স্বাধীন করেছিলেন- একটি ক্ষুধামুক্ত, দারিদ্রমুক্ত এবং সকল ধর্ম-বর্ণের মানুষের একটি উন্নত দেশ গড়ার। সেই দেশ গড়ার আগেই ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট বঙ্গবন্ধুকে হত্যার মধ্যদিয়ে স্বপ্নকে ধূলিসাৎ করা হয়েছিল। আজকে তারই কন্যা জননেত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বাঙালি জাতি সেই স্বপ্ন নতুন করে দেখছে।

 

টানা ১৫ বছরের ধারাবাহিক উন্নয়ন, মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর চতুর্থবার টানা এবং পঞ্চমবার প্রধানমন্ত্রীর দায়িত্ব নেওয়ার পর এই বাংলাদেশ এখন উন্নয়নশীল রাষ্ট্রে পরিণত হয়েছে। আমরা ২০৩১ সালের মধ্যেই মধ্যম আয়ের দেশ এবং ২০৪১ সালের মধ্যে উন্নত-স্মার্ট বাংলাদেশ গড়ার পথে এগিয়ে যাচ্ছি। আশা করছি মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বাংলাদেশ কাঙ্ক্ষিত সেই স্বপ্নের লক্ষ্যে পৌঁছে যাবে।

 

বাংলাদেশ এগিয়ে যাচ্ছে। সব দিক দিয়েই এগিয়েছে। সেই তুলনায় আমার কুষ্টিয়া, আমাদের অবহেলিত কুষ্টিয়া, পিছিয়ে পরা কুষ্টিয়া- আমরা কিন্তু সেইভাবে এগিয়ে যেতে পারি নাই। আমরা চেষ্টা করছি আমাদের পিছিয়ে পরা কুষ্টিয়া জেলাকে উন্নয়নের দিকে এগিয়ে নেয়ার জন্য। আমাদের এই মিরপুর-ভেড়ামারার মানুষের মধ্যে অনেক কষ্ট যে, তারা আমাদের সঙ্গে হয় তো তাল মিলিয়ে যেতে পারেন নাই। আমি শুধু আপনাদেরকে এটুকু আশ্বস্ত করতে চাই- আমাদের মাননীয় প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনা প্রত্যেকটি এলাকার উন্নয়নের দেখভাল করেন। তার নির্দেশনা আছে, আপনাদের যে নবনির্বাচিত সংসদ সদস্য কামারুল আরেফিন, যিনি মাটি ও মানুষের নেতা। মাঠ থেকে রাজনীতি করে উঠে এসেছেন। সবসময় জনগণের পাশেই থাকেন, জনগণের কথায় বলেন। সে যখন দায়িত্ব নিয়েছেন, আপা যখন দায়িত্ব দিয়েছেন- আমি আপনাদেরকে এটুকু আশ্বস্ত করতে পারি, এই ভেড়ামারা-মিরপুর উপজেলার মানুষের যে প্রত্যাশা, উন্নয়নের প্রত্যাশা সেটা ইনশাল্লাহ পূরণ হবে। এবং এই প্রত্যাশা পূরণের জন্য আমি আমার পক্ষ থেকে আমার ছোট ভাই কামারুল আরেফিনকে সার্বিক সহায়তা করব।

 

আমি শুধু একটি কথা বলেই শেষ করতে চাই, আপনারা ভরসা রাখবেন, আস্থা রাখবেন জননেত্রী শেখ হাসিনার উপর আর আপনাদের সংসদ সদস্যের উপর। ইনশাআল্লাহ আপনারা আস্থার প্রতিফলন পাবেন।

 

১০ মার্চ, রবিবার ভেড়ামারা পাইলট উচ্চ বিদ্যালয়ে অনুষ্ঠিত ভেড়ামারা উপজেলা আওয়ামী লীগ কর্তৃক আয়োজিত ঐতিহাসিক ৭ মার্চের মহাসমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহবুবউল আলম হানিফ এমপি এসব কথা বলেন।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *