

অনলাইন ডেস্ক :
আন্তর্জাতিক ফুটবলকে ঘিরে আবার শুরু হচ্ছে ফুটবলপ্রেমীদের উন্মাদনা। বিশ্বকাপ থেকে খুব বেশি পিছিয়ে না থাকা এই প্রতিযোগিতাকে ঘিরে ফুটবলপ্রেমীদের আগ্রহের শেষ নেই। অপেক্ষার পালা শেষে আজ (শুক্রবার) বাংলাদেশ সময় দিবাগত রাতে পর্দা উঠছে ফুটবল বিশ্বের অন্যতম বড় আসর ইউরো চ্যাম্পিয়নশিপের। জার্মানিতে শুরু হচ্ছে ইউরো কাপ। মিউনিখে প্রথম ম্যাচে মুখোমুখি জার্মানি এবং স্কটল্যান্ড। জার্মানির ১০ ভেন্যুতে বসবে এবারের জমজমাট আসর। ২৪ দলের অংশগ্রহণে ১৭তম ইউরো চলবে আগামী ১৪ জুলাই পর্যন্ত।
ক্রিশ্চিয়ানো রোনালদোর পর্তুগাল, কিলিয়ান এমবাপ্পের ফ্রান্স, হ্যারি কেনের ইংল্যান্ড বা তিন বারের বিজয়ী স্পেন, ইউরো কাপে নজর কাড়ার মতো দেশের অভাব নেই। ফেভারিট সব দল শিরোপা জয়ের জন্য প্রস্তুত। তবে এই প্রতিযোগিতা বরাবরই চমকে দিতে অভ্যস্ত। ২০০৪ সালে সবাইকে চমকে দিয়ে ট্রফি জিতেছিল গ্রিস। শেষ মুহূর্তে সুযোগ পাওয়া ডেনমার্ক অবাক করেছিল ১৯৯২ সালের ইউরো জিতে। এ বারও যে কোনও দেশ চমকে দিতে পারে।
২০০৬ সালে বিশ্বকাপ আয়োজন করা জার্মানি এ বার ইউরো কাপের আয়োজক। ১৮ বছর আগের সেই অভিজ্ঞতাই ফিরিয়ে আনতে চাইছে তারা। তবে এ বার ইউরোপের রাজনৈতিক প্রেক্ষাপট আলাদা। রাশিয়ার ইউক্রেন আক্রমণের পর প্রথম বার ইউরো হচ্ছে।
জার্মানি ইউক্রেন দলকে ভাল ভাবেই স্বাগত জানিয়েছে। যুদ্ধের পর থেকে তারা জার্মানিতেই নিজেদের ‘হোম’ ম্যাচ খেলেছে। কিন্তু থাকছে না রাশিয়া। উয়েফা তাদের নির্বাসিত করেছে।
গত বার রানার্স হওয়া ইংল্যান্ড এ বার ট্রফির দাবিদার হিসাবেই নামবে। তিন বছর আগে ইতালির বিরুদ্ধে অল্পের জন্য পেনাল্টি শুটআউটে মন ভেঙেছিল তাদের। ১৯৬৬ সালের পর ফুটবলে প্রথম বার কোনও বড় ট্রফি জিততে মরিয়া তারা। কোচ গ্যারেথ সাউথগেটের অধীনে ইংল্যান্ড দলের অনেকটাই উন্নতি হয়েছে। জুড বেলিংহ্যাম, ফিল ফোডেনরা তারকা হয়ে উঠেছেন। সঙ্গে হ্যারি কেন তো রয়েছেনই। গত বছর থেকে বায়ার্ন মিউনিখের হয়ে খেলছেন হ্যারি কেন। ৪৭টি ম্যাচে ৪৪টি গোলও করেছেন।
বিশ্বকাপ ফাইনালে ফ্রান্স হারলেও ইউরোতে নতুন উদ্যমে নামছে তারা। কিলিয়ান এমবাপ্পে বিশ্বকাপ, নেশন্স লিগ জিতলেও ইউরো কাপ জেতেননি। দলে এ বার অঁরেলিয়ে চুয়ামেনি, এডুয়ার্ডো কামাভিঙ্গার মতো তরুণ তারকা রয়েছেন।
সৌদি আরবে ক্লাবজীবন শুরু করার পর এই প্রথম বড় কোনও প্রতিযোগিতায় খেলতে নামছেন রোনালদো। ৩৯ বছরেও তাঁর ফর্ম দেখে বোঝার উপায় নেই। পর্তুগালের যোগ্যতা অর্জন পর্বে ১০টি গোল করেছেন। প্রস্তুতি ম্যাচেও গোল পেয়েছেন রোনালদো।
সাম্প্রতিক বড় প্রতিযোগিতাগুলিতে জার্মানি হতাশ করলেও দেশের মাটিতে ইউরোয় তাদের পিছিয়ে রাখা যাবে না। ইউরোর প্রস্তুতি ম্যাচে ফ্রান্স এবং নেদারল্যান্ডসের বিরুদ্ধে জিতেছে জার্মানরা। গোটা দেশ আবার আশা দেখতে শুরু করেছে। এ দিকে, ইউরোপ সেরার খেতাব ধরে রাখতে নামবে ইতালিও।
এক মাসের ফুটবল যুদ্ধ শেষে কে জিতবে, তা আগে থেকে বলা কঠিন। তবে বিশ্বের ফুটবলপ্রেমীরা আনন্দ উপভোগ করতে অপেক্ষায় রয়েছেন।
লম্বা বাছাইপর্ব শেষে মোট ২৪ দল সুযোগ পেয়েছে প্রতিযোগিতাটির মূল পর্বে। ২৪টি দেশকে মোট ৬টি গ্রুপে ভাগ করা হয়েছে। প্রতি গ্রুপে রয়েছে ৪টি করে দেশ। প্রতিটি গ্রুপ থেকে সরাসরি ২টি করে দল যাবে রাউন্ড অব সিক্সটিনে, তৃতীয় স্থানে থাকা দলেরও নকআউটে যাওয়ার সুযোগ রয়েছে। সেক্ষেত্রে ৬ গ্রুপের তৃতীয় স্থানে থাকা ৬টি দলের মধ্যে শীর্ষ চার ধরে রাখতে হবে।
গ্রুপ এ: জার্মানি, স্কটল্যান্ড, হাঙ্গেরি, সুইজারল্যান্ড
গ্রুপ বি: স্পেন, ক্রোয়েশিয়া, ইতালি, আলবেনিয়া
গ্রুপ সি: স্লোভেনিয়া, ডেনমার্ক, সার্বিয়া, ইংল্যান্ড
গ্রুপ ডি: পোল্যান্ড, নেদারল্যান্ডস, অস্ট্রিয়া, ফ্রান্স
গ্রুপ ই: বেলজিয়াম, স্লোভাকিয়া, রোমানিয়া, ইউক্রেন
গ্রুপ এফ: তুরস্ক, জর্জিয়া, পর্তুগাল, চেক প্রজাতন্ত্র
ভেন্যু
জার্মানির ১০টি ভেন্যুতে হবে এবারের ইউরো। এই ১০টি ভেন্যুর ৯টিই (বার্লিনের অলিম্পিয়াস্টেডিয়ন, মিউনিখের আলিয়াঞ্জ অ্যারেনা, ডর্টমুন্ডের ওয়েস্টফেলেনস্টেডিয়ন, স্টুটগার্টের এমএইচপি অ্যারেনা, গেলসেনকিরচেনের অফ-শালকে, ফ্রাঙ্কফুর্টের ওয়ালস্টেডিয়ন, হামবুর্গের ভল্কসপার্কস্টেডিয়ন, কলোনের এনার্জি স্টেডিয়ন ও লেইপজিগের রেড বুল অ্যারেনা) ২০০৬ সালের বিশ্বকাপে ব্যবহৃত হয়েছিল, শুধু ডুসেলডর্ফের মার্কুর স্পিয়েল অ্যারেনা ২০০৬ বিশ্বকাপে ব্যবহৃত হয়নি, তবে এটিতে ১৯৭৪ সালের বিশ্বকাপ ও ১৯৮৮ ইউরোর ম্যাচ অনুষ্ঠিত হয়েছিল।













