অসহায় বৃদ্ধা মায়ের আশ্রয় হয়েছে মুরগী রাখার খোপে

ডিপি ডেস্ক :

পটুয়াখালী সদর উপজেলার লাউকাঠি গ্রামে একটি মুরগির খোপ এখন শতবর্ষী লালবড়ু বেগমের একমাত্র আশ্রয়। বয়সের ভারে নুয়ে পড়া এই বৃদ্ধা মায়ের জীবনের গল্প শুনলে চোখে পানি চলে আসে।

যে মা এক সময় বাড়ি বাড়ি ভিক্ষা করে সন্তানদের মানুষ করেছেন, সেই মা নুরজাহান বেগম এখন আশ্রয় নিয়েছেন একটি পুরনো মুরগির খোপে। বছরের পর বছর ধরে স্যাতস্যাতে ও অস্বাস্থ্যকর পরিবেশে বসবাস করছেন এই জনমদুঃখিনী মা।

মুরগি রাখার ওই খোপটিতে নেই কোনো কাঁথা, বালিশ বা বাতাস চলাচলের ব্যবস্থা। সেখানে কোনোরকমে বসে থাকেন নুরজাহান বেগম। মাঝে মাঝে খাবারের আশায় চিৎকার করলেও, কেউ তাঁর ডাকে সাড়া দেন না।

স্থানীয়রা জানান, বৃদ্ধা মাকে প্রতিদিন সকালে মুরগির খোপে রেখে সন্তান ও পুত্রবধূরা কাজে চলে যান। ঘরটি তালাবদ্ধ করে তারা দিনভর অনুপস্থিত থাকেন। সারাদিন নিরুপায় নুরজাহান বেগম খাবারের আশায় বাড়ি থেকে বাড়ি ছুটে বেড়ান নড়বড়ে শরীর নিয়ে।

সম্প্রতি পড়ে গিয়ে মাথা ফেটে যায় এবং হাত ভেঙে যায় তাঁর। সারা দিন ধরে যন্ত্রণায় ছটফট করছেন তিনি। একটু পানি চাওয়ার জন্য তীব্র আর্তনাদ করলেও, শোনার মতো কেউ নেই পাশে।

বর্তমানে বন্যা পরিস্থিতির কারণে তাঁর থাকার জায়গার চারপাশে জমে আছে জোয়ারের পানি। এতে তাঁর মধ্যে কাজ করছে অজানা আতঙ্ক।

দশ মাস দশ দিনের যন্ত্রণা, সন্তানদের না খেয়ে খাইয়ে বড় করা, তাদের শখ-আহ্লাদ পূরণ করে বড় করে তোলার পরও শেষ বয়সে এমন নির্মম পরিণতি! মানবিকতার এই চরম অবক্ষয়ের ঘটনায় নুরজাহান বেগমের দুই সন্তানের কাছে জানতে চাইলেও তারা কারো নাগালে পাওয়া যায়নি।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *