তরুণী বাইকার বড় চাকরি ছেড়ে দেশ-বিদেশ ঘুরে বেড়াচ্ছেন

অনলাইন ডেস্ক : মোটরসাইকেলে বাবার পিছনে বসে ভারতের কর্নাটকের হুবলি থেকে গোয়া প্রায়ই যাতায়াত করতেন ক্যানডিডা। সেই থেকেই তার বাইক চালানোর শখ।

সেই শখে ভর করেই ভাল মাইনের চাকরি ছেড়ে ক্যানডিডা এখন জনপ্রিয় বাইকার। ২০১৮ সালে একা বাইক নিয়ে বেঙ্গালুরু থেকে অস্ট্রেলিয়ার সিডনি যাওয়ার রেকর্ড গড়েছেন তিনি।
কর্নাটকের ছোট শহর হুবলির বাসিন্দা ক্যানডিডা লুইস। ভারতের প্রায় সব রাজ্যই বাইকে করে ঘুরে দেখা হয়ে গেছে তার। টানা ৩৪ হাজার কিলোমিটার বাইক চালানোর অভিজ্ঞতা রয়েছে তার। ইতোমধ্যে বিশ্বের ৭টা দেশও ঘুরে দেখা হয়ে গেছে ক্যানডিডার।

কিন্তু ৫-৬ বছর আগে তার মধ্যে আজকের ক্যানডিডা লুইস হয়ে ওঠার লক্ষণ ছিল না। অতি সাধারণ ঘরের মেয়ে ক্যানডিডা একটি বহুজাতিক সংস্থায় চাকরি পেয়ে বেঙ্গালুরু চলে যান।

অফিসে চার দেওয়ালের মধ্যে কিছুতেই ভাল লাগত না তার। সারাদিন জানালা দিয়ে বাইরে তাকিয়ে থাকতেন আর ভাবতেন, তিনি কবে মুক্ত পাখির মতো সারা বিশ্ব ঘুরে বেড়াতে পারবেন!

বেশির ভাগ মানুষই যখন চাকরি এবং ঝুঁকিপূর্ণ প্যাশনের মধ্যে চাকরিটাকেই বেছে নেন, ক্যানডিডা করেছেন ঠিক উল্টো।

একদিন বাবা-মার কাছে গিয়ে জানিয়ে দেন নিজের ইচ্ছার কথা। এত ভাল চাকরি ছেড়ে বাইক চালানোটাই পেশা করতে চাইছে মেয়ে! হতবাক হয়েছিলেন তারা।

কিন্তু মেয়ের ইচ্ছার সামনে অন্তরায় হয়ে দাঁড়াননি। ২০১৬ সালে তার বাবা-ই জন্মদিনে তাকে একটি বাইক উপহার দেন। ২০১৮ সালে বাইকে চেপে বেঙ্গালুরু থেকে সিডনি যাওয়ার রেকর্ড করে ফেলেন তিনি।

শুরুতে অবশ্য বেশ সমস্যা ছিল। চাকরি জীবনে নিজের সঞ্চিত সব টাকাই বাইকের নেশার পিছনে খরচ হয়ে যায়। তার উপর প্রথমে স্পনসর পাওয়াটাও বেশ সমস্যার ছিল।

পরে ভারতের মধ্যে বেশ কিছু সোলো ট্যুর করার পর ক্রমে স্পনসর আসতে শুরু করে। এখন নারী বাইকার হিসেবে জনপ্রিয়তাও বেড়েছে ক্যানডিডার। স্পনসর পাওয়াটাও অনেক সহজ হয়েছে।

এই জার্নিতে ক্যানডিডার স্মরণীয় স্মৃতি কী? টুকরে টুকরো অনেক স্মৃতি রয়েছে বলে জানান তিনি। তার মধ্যে একটি, একবার অনেকটা রাস্তা জঙ্গলের মধ্যে দিয়ে যেতে হয়েছিল তাকে। সে সময়টা তিনি পুরোপুরি একা ছিলেন। রাত হয়ে গিয়েছিল। ক্যামেরাতেও খুব একটা চার্জ ছিল না।

ক্যানডিডা এই মুহূর্তটাকে স্মরণীয় করে রাখার জন্য জঙ্গলের মধ্যে কয়েকটা সেলফি তুলেছিলেন। পরে হোটেলে পৌঁছে তিনি ক্যামেরা চার্জ দিয়ে ছবিগুলো দেখার সময় চমকে যান। তার ঠিক পাশেই অদ্ভুত একটা ছায়ার ছবি উঠেছিল। ঠিক যেন কোনও মানুষের ছায়া। কিন্তু জঙ্গলে তিনি একাই ছিলেন!

তার পরবর্তী পরিকল্পনা কী? ছোটবেলায় বাবার বাইকে চেপে ঘুরে বেড়িয়েছেন তিনি। এবার বাবাকে বাইকে চাপিয়ে ইন্দোনেশিয়ার বালিতে নিয়ে যেতে চান তিনি। এছাড়াও ব্রিটেন এবং আফ্রিকার বিভিন্ন দেশে যাওয়ার পরিকল্পনাও রয়েছে তার। সূত্র: আনন্দবাজার

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *