কুমারখালী হাসপাতালে গৃহবধূর লাশ ফেলে পালালেন শাশুড়ি

কুমারখালী (কুষ্টিয়া) প্রতিনিধি :

 

কুষ্টিয়ার কুমারখালীতে বিনা খাতুন (২২) নামে এক গৃহবধূরর লাশ হাসপাতালে রেখে পালিয়ে যাওয়ার অভিযোগ উঠেছে শাশুড়ি ও ননদের বিরুদ্ধে। বুধবার (১৫ মে) দুপুর ২টার দিকে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ঘটনাটি ঘটে। মরদেহটি ময়নাতদন্তের জন্য কুষ্টিয়া জেনারেল হাসপাতালের মর্গে পাঠিয়েছে পুলিশ।

 

মারা যাওয়া বিনা খাতুন উপজেলার নন্দলালপুর ইউনিয়নের নন্দলালপুর গ্রামের মাঠপাড়া এলাকার আমিন হোসেনের স্ত্রী। তিনি যদুবয়রা ইউনিয়নের উত্তরচাঁদপুর গ্রামের বিল্লাল শেখের মেয়ে।

 

স্বজনদের দাবি, শাশুড়ি শিল্পী খাতুন (৪৫) ও ননদ মুক্তা খাতুন (২৫) মিলে বিনা খাতুনকে মারধরের পর শ্বাসরোধে হত্যা করেছেন। পুলিশের কাছ থেকে বাঁচতে হাসপাতালে লাশ রেখেই পালিয়ে গেছেন তারা।

জানা গেছে, প্রায় ২ বছর আগে পারিবারিকভাবে নন্দলালপুর গ্রামের মোফাজ্জেল হোসেনের ছেলে আমিনের সাথে বিয়ে হয় বিনা খাতুনের। বিয়ের পর থেকেই শ্বশুর বাড়ির লোকজন যৌতুকের টাকার জন্য বিনা খাতুনকে মারধর করতেন। মারধর সইতে না পেরে বিয়ের পরেও প্রায় এক বছর বাবার বাড়িতে ছিলেন বিনা খাতুন। এই নিয়ে দুই পরিবারের মধ্যে একাধিকবার বৈঠক হয়। গত শুক্রবার বাবার বাড়ি থেকে শ্বশুর বাড়িতে যান বিনা খাতুন। আজ বুধবার দুপুরে শাশুড়ি শিল্পী ও ননদ মুক্তা খাতুন মিলে বিনা খাতুনের লাশ হাসপাতালে রেখে পালিয়ে যান।

 

নিহতের বাবা বিল্লাল শেখ বলেন, বিয়ের পর থেকে শাশুড়ি শিল্পী ও ননদ মুক্তা ১০ লাখ টাকা ও একটি মোটরসাইকেলের জন্য নির্যাতন করতো মেয়েকে। আমি গরিব বলে টাকা দিতে পারিনি। মেয়ে নির্যাতন সইতে না পেরে প্রায় এক বছর আমার বাড়িতেই ছিল। গত শুক্রবার ২৫ হাজার টাকাসহ ওকে শ্বশুর বাড়িতে পাঠিয়েছিলাম। আজ শাশুড়ি আর ননদ মিলে আমার মেয়েকে হত্যা করে হাসপাতালে লাশ রেখে পালিয়েছেন। আমি সুষ্ঠু তদন্তের মাধ্যমে আমার মেয়ে হত্যার বিচার চাই।

 

নামপ্রকাশে না করার শর্তে এক প্রতিবেশী জানান, আজ সকাল ১১টার দিকে গৃহবধূ বিনা খাতুনকে বাড়ির বাইরে বসে কাঁদতে দেখেন। তিনি বিনা খাতুনের কাছে কান্না করার বিষয়ে জিজ্ঞেস করেন। তখন বিনা খাতুন বলেন, শাশুড়ি-ননদ মিলে তাকে মারধর করেছেন।

 

নামপ্রকাশে অনিচ্ছুক আরেক নারী জানান, দুপুরে ভ্যানে করে বিনাকে হাসপাতালের দিকে নিয়ে গিয়েছিল শ্বাশুড়ি আর ননদ। কিন্তু তারা আর ফিরে আসেনি। এরপর কি হয়েছে তা তিনি জানেন না।

 

কুমারখালী থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) দিবাকর হালদার বলেন, মরদেহটি ময়নাতদন্তের জন্য কুষ্টিয়া জেনারেল হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হয়েছে। প্রতিবেদন পেলেই হত্যা না আত্মহত্যা নিশ্চিত হওয়া যাবে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *