‘দেশে ২ মাসে করোনাভাইরাস সংক্রান্ত হটলাইনগুলোতে ৪৯ লাখ ফোনকল’

অনলাইন ডেস্ক : সরকারি হিসেবে করোনা বাংলাদেশে প্রথম হানা দেয় ৮ মার্চ। দেশে যাতে এ ভাইরাসের প্রকোপ রোধে বিভিন্ন পদক্ষেপ নিয়েছে সরকার। চালু করেছে হটলাইনের মাধ্যমে স্বাস্থ্য সেবা। স্বাস্থ্য অধিদপ্তর ও সরকারের রোগতত্ত্ব, রোগ নিয়ন্ত্রণ ও গবেষণা ইনস্টিটিউটের (আইইডিসিআর) হটলাইনগুলোতে গত ২৪ ঘণ্টায় ১ লাখ ৩৫ হাজার ১৮টি ফোনকল এসেছে। এ পর্যন্ত এসব হটলাইনে গত দুই মাসে ৪৯ লাখের বেশি কল এসেছে বলে জানিয়েছে কর্তৃপক্ষ।

মঙ্গলবার দুপুরে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের অতিরিক্ত মহাপরিচালক (প্রশাসন) অধ্যাপক ডা. নাসিমা সুলতানা এ তথ্য জানান। তিনি বলেন, স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের অনলাইন মুক্তপাঠে চিকিৎসা সেবা দিতে যুক্ত আছেন আমাদের প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত ১৫ হাজার ৭২১ চিকিৎসক। এছাড়া স্বেচ্ছা ভিত্তিতে ফোনের মাধ্যমে স্বাস্থ্য সেবা দিয়ে যাচ্ছেন আরও ৪ হাজার ৭০ জন চিকিৎসক।
হটলাইনে নিয়োজিত জনবল প্রসঙ্গে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের হেলথ এমার্জেন্সি অপারেশন সেন্টার ও কন্ট্রোল রুমের সহকারী পরিচালক ডা. আয়শা আক্তার গণমাধ্যমকে বলেন, আমাদের হেলথ এমার্জেন্সি অপারেশন সেন্টার ও কন্ট্রোল রুম, সমন্বিত কন্ট্রোল রুম, আইইডিসিআরের হটলাইনের নম্বরগুলোতে বর্তমানে ২শ’রও বেশি মানুষ রোস্টার ভিত্তিতে কাজ করছেন।

স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের সমন্বিত নিয়ন্ত্রণ কক্ষ থেকে জানা যায়, স্বাস্থ্য অধিদপ্তর ও আইইডিসিআরের হটলাইনে কলের সংখ্যা দিন দিন বৃদ্ধি পাচ্ছে। এ জন্য হটলাইনে মোবাইল নম্বরের সংখ্যাও বাড়ানো হচ্ছে। হটলাইনে স্বাস্থ্যসেবা জনপ্রিয় হওয়ায় দিন দিন ফোনকলের সংখ্যা বাড়ছে বলে অভিমত তাদের। প্রথমদিকে ফোনকলের সংখ্যা কম থাকলেও বর্তমানে দৈনিক তা লাখেরও বেশি বলে জানায় তারা।

সন্দেহজনক করোনা সংক্রমণের বিষয় সেবা পেতে স্বাস্থ্য বাতায়নের ১৬২৬৩, ৩৩৩, আইইডিসিআর-এর হটলাইন ০১৯৪৪৩৩৩২২২, ০১৬৫৫ এবং স্থানীয় হাসপাতালগুলোতে কল করতে অনুরোধ করা হচ্ছে।

স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের হিসাব মতে, গত ২৪ ঘণ্টায় আইইডিসিআর-এর হট লাইনের ১০৬৫৬ ও ০১৯৪৪৩৩৩২২২ নম্বরে ২ হাজার ৫৯০টি কল এসেছে। এ নিয়ে আইইডিসিআরে গত ২ মাসে মোট কল এসেছে ২ লাখ ৫ হাজার ৯৮৮টি। স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের স্বাস্থ্য বাতায়নের ১৬২৬৩ নম্বরে শেষ ২৪ ঘণ্টায় কল এসেছে ৪৬ হাজার ৯৫৯টি। এ পর্যন্ত এ নম্বরে মোট ৩ লাখ ২২ হাজার ৭৭৫টি কল এসেছে। এছাড়া ৩৩৩ নম্বরে গত ২৪ ঘণ্টায় কল এসেছে ৮৫ হাজার ৪৬৯টি। এ নম্বরে এখন পর্যন্ত মোট কল এসেছে ১৪ লাখ ৯৯ হাজার ৭৬৭টি।

এদিকে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর হটলাইনে সেবা দেওয়ার ব্যাপারে গুরুত্ব আরোপ করলেও এ ধরনের স্বাস্থ্যসেবার সমালোচনা করে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বিএমএসএসইউ) সাবেক উপাচার্য অধ্যাপক ডা. মো. নজরুল ইসলাম গণমাধ্যমকে বলেন, স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের হটলাইনে দৈনিক যদি ১ লাখ মানুষ ফোন করেন, তাদের সঙ্গে এক মিনিট করে কথা বললেও এ অধিদপ্তরের যে জনবল আছে কুলাবে না। তাদের সবার সব কর্মঘণ্টা ব্যয় করেও এ চাপ সামাল দেওয়া যাবে না। স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের বরং উচিত ফোনকলের পেছনে সময় ব্যয় না করে সার্বিক স্বাস্থ্যসেবা খাতের দিকে নজর দেওয়া। তাছাড়া ফোনকলে ভুক্তভোগীদের সাময়িক সমস্যার সমাধান হলেও সার্বিকভাবে সব সমস্যার সমাধান সম্ভব নয়।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *