ফেসবুকে প্রেম করে ৩ বিয়ে, চতুর্থ নারীর সঙ্গে দেখা করতে এসে পুলিশের ফাঁদে ধরা

বগুড়া প্রতিনিধি :

 

শিশুকন্যার বয়স যখন চার বছর তখন অসৎ চরিত্রের অপবাদ দিয়ে প্রথম স্ত্রীকে ডিভোর্স। ডিভোর্সের পরপরই দ্বিতীয় বিয়ে। এরপর দ্বিতীয় স্ত্রীকে ডিভোর্স না দিয়ে শুধুমাত্র সম্পর্ক ছিন্ন করে নাম পরিচয় গোপন রেখে ভুয়া পরিচয়ে তৃতীয় বিয়ে। আর এই বিয়েগুলো হয়েছিল সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে পরিচয়ের সূত্র ধরে। অবশেষে চতুর্থ নারীর সঙ্গে দেখা করতে এসে পুলিশের ফাঁদে ধরা খেলেন আবু রায়হান মনির (২৭) নামে এক যুবক।

 

আবু রায়হান মনির বগুড়া সদরের আকাশতারা গ্রামের অবসরপ্রাপ্ত সেনাসদস্য আব্দুর রহমানের ছেলে। মনির বাংলাদেশ ইন্সটিটিউট অফ ইনফরমেশন টেকনোলজি (বিট) বগুড়া থেকে কম্পিউটার ইঞ্জিনিয়ার পাস করার একটি কসমেটিকস কম্পানির সেলসম্যান হিসেবে কর্মরত।

 

তৃতীয় স্ত্রীর দায়ের করা প্রতারণা মামলায় গ্রেপ্তারের পর আবু রায়হান মনিরকে শনিবার দুপুরে আদালতের মাধ্যমে জেলহাজতে পাঠিয়েছে শাজাহানপুর থানা পুলিশ।

 

থানা পুলিশ সূত্রে জানা যায়, আবু রায়হান মনির সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে বগুড়ার শাজাহানপুর উপজেলার টেকুরগাড়ী গ্রামের অনার্স চতুর্থ বর্ষের এক ছাত্রীর সাথে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে তোলে। এরপর মনির তার আসল নাম পরিচয় গোপন করে ভুয়া পরিচয়ে ২০২০ সালে জুন মাসে ওই ছাত্রীকে বিয়ে করে। এ বছরের ফেব্রুয়ারি মাসে কৌশলে শাশুড়ির কাছ থেকে দেড় লাখ টাকা নিয়ে উধাও হয়ে যায় মনির। এরপর মনিরের সাথে যোগাযোগ করতে না পেরে থানা পুলিশের নারী ও শিশু ডেক্সের সহায়তা চায় মেয়েটি। নানা কৌশল অবলম্বন করে অবশেষে হোয়াটসঅ্যাপে নারী সেজে প্রেমের অভিনয় করে ফাঁদে ফেলে শুক্রবার মনিরকে বগুড়া সাতমাথা এলাকা থেকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ।

 

থানা পুলিশের নারী ও শিশু ডেক্সের কর্মকর্তা এসআই জেবুন্নেছা জানান, আবু রায়হান মনিরকে গ্রেপ্তারের পর বেরিয়ে আসে তার প্রতারণার নানা তথ্য। মনির ২০১২ সালে বগুড়ার গাবতলী উপজেলার নিশি আকতার নামে এক নারীকে প্রথম বিয়ে করে। সংসার জীবনে তাদের একটি কন্যা সন্তান রয়েছে। শিশুকন্যার বয়স যখন চার বছর তখন অসৎ চরিত্রের অপবাদ দিয়ে স্ত্রীকে তালাক দেয় মনির। এরপর ২০১৭ সালে বগুড়া সদরের পীরগাছা এলাকার সানজিদা নামে আরেক নারীকে প্রেমের ফাঁদে ফেলে দ্বিতীয় বিয়ে করে সে। এই সংসারও স্থায়ী হয়নি বেশী দিন। স্বার্থ ফুরিয়ে গেলে তাকে তালাক না দিয়ে শুধুমাত্র সম্পর্ক ছিন্ন করে তৃতীয় বিয়ের পিঁড়িতে বসে মনির। তৃতীয় স্ত্রীর সঙ্গে প্রতারণা করায় তার বিরুদ্ধে অভিযোগ আসে। তাকে ধরতে চতুর্থ নারী হিসেবে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম হোয়াটসঅ্যাপে এক নারীকে প্রেমিকা সাজিয়ে দেখা করার জন্য ডেকে এনে মনিরকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।

 

শাজাহানপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আব্দুল্লাহ আল মামুন জানান, গ্রেপ্তারকৃত আবু রায়হান মনির একজন প্রতারক শ্রেণীর যুবক। মামলা দায়েরের পর তাকে আদালতের মাধ্যমে জেল হাজতে পাঠিয়ে দেওয়া হয়েছে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *