ভারতে নতুন নাগরিকত্ব আইনে স্থগিতাদেশ দিলেন না সুপ্রিম কোর্ট

অনলাইন ডেস্ক :

 

ভারতে সংশোধিত নাগরিকত্ব আইনে (সিএএ) মঙ্গলবার স্থগিতাদেশ দিলেন না দেশটির সুপ্রিম কোর্ট। তবে সিএএতে স্থগিতাদেশ চেয়ে শীর্ষ আদালতে যে মামলাগুলো হয়েছিল, সেগুলোর প্রেক্ষিতে কেন্দ্রীয় সরকারকে তিন সপ্তাহের মধ্যে জবাব দিতে বলা হয়েছে, যার সময়সীমা শেষ হবে ৮ এপ্রিল। এই মামলার পরবর্তী শুনানির দিন ধার্য করা হয়েছে ৯ এপ্রিল। ভারতীয় গণমাধ্যম আনন্দবাজার পত্রিকার এক প্রতিবেদন থেকে এ তথ্য জানা গেছে।

 

প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, সিএএর বিরোধিতা করে যে মামলাগুলো দায়ের হয়েছিল, এদিন সেগুলো একত্র করে শুনানি শুরু হয়। মামলাগুলো শোনেন প্রধান বিচারপতি ডি ওয়াই চন্দ্রচূড়ের নেতৃত্বাধীন তিন বিচারপতির বেঞ্চ। প্রধান বিচারপতি ছাড়াও বেঞ্চে ছিলেন বিচারপতি জেবি পরদিওয়ালা ও মনোজ মিশ্র।
এদিন সরকারপক্ষের কৌঁসুলি হিসেবে আদালতে উপস্থিত ছিলেন কেন্দ্রীয় সরকারের সলিসিটর জেনারেল তুষার মেটা।

সিএএর সাংবিধানিক বৈধতাকে চ্যালেঞ্জ করে ও আইনটির বলবৎ হওয়া বিধিতে স্থগিতাদেশ চেয়ে যে ২০টি মামলা হয়, তার প্রেক্ষিতে জবাব দেওয়ার জন্য আদালতের কাছে চার সপ্তাহ সময় চান তিনি। সলিসিটর জেনারেল আদালতে বলেন, ‘সিএএতে কারো নাগরিকত্ব যাবে না।
সংশোধিত নাগরিকত্ব আইনের (সিএএ) বিরোধিতা করে গত এক সপ্তাহের মধ্যে একাধিক মামলা দায়ের হয়েছে দেশটির সুপ্রিম কোর্টে। সর্বশেষ মামলাটি দায়ের করেছিল কেরালা রাজ্য সরকার।

রবিবার তারা সিএএর সাংবিধানিক বৈধতাকে চ্যালেঞ্জ করে শীর্ষ আদালতে যায়। পিনারাই বিজয়নের সরকার আগেই ঘোষণা করেছিল, তারা রাজ্যে সিএএ কার্যকর করতে দেবে না। এ ছাড়া শনিবার সিএএ কার্যকরে স্থগিতাদেশ চেয়ে সুপ্রিম কোর্টের দ্বারস্থ হন অল ইন্ডিয়া মজলিস-ই-ইত্তেহাদুল মুসলিমিন (মিম) দলের প্রধান তথা হায়দরাবাদের সংসদ সদস্য আসাদউদ্দিন ওয়েইসি। সেই সঙ্গে কংগ্রেসের জয়রাম রমেশ, তৃণমূলের মহুয়া মৈত্র, সিপিএমের যুব সংগঠন ডিওয়াইএফআই, কেরালার আঞ্চলিক দল আইইউএমএলের পক্ষ থেকেও এ বিষয়ে মামলা দায়ের করা হয়েছিল। সুপ্রিম কোর্ট সূত্রের বরাত দিয়ে গণমাধ্যমটি বলেছে, সিএএর বিরুদ্ধে দায়ের হওয়া মোট মামলার সংখ্যা ২৩৭।
আনন্দবাজারের তথ্য অনুসারে, দ্বিতীয়বার ক্ষমতায় আসার পর ২০১৯ সালের ১১ ডিসেম্বর সিএএ পাস করিয়েছিল নরেন্দ্র মোদির কেন্দ্রীয় সরকার। ওই আইন অনুযায়ী, বাংলাদেশ, পাকিস্তান ও আফগানিস্তানের মতো মুসলিম ধর্মাবলম্বী দেশ থেকে যদি সে দেশের ধর্মীয় সংখ্যালঘুরা ধর্মীয় উৎপীড়নের কারণে ভারতে আশ্রয় চায়, তাহলে তা দেবে ভারত। কিন্তু সিএএতে হিন্দু, শিখ, জৈন, বৌদ্ধ, পার্সি ও খ্রিস্টান শরণার্থীদের নাগরিকত্ব দেওয়ার কথা বলা হলেও সেখানে মুসলিমদের কথা উল্লেখ করা হয়নি। এই ‘বৈষম্য’ কেন, তা নিয়ে প্রশ্ন তোলে বিরোধী দলগুলো।

 

প্রায় সাড়ে চার বছর আগে সংসদের উভয় কক্ষে পাস হওয়ার পর দেশটির তৎকালীন রাষ্ট্রপতি রামনাথ কোবিন্দও অনুমোদন দিয়েছিলেন সিএএ বিলে। কিন্তু প্রায় সাড়ে চার বছর ধরে সিএএ কার্যকর করা নিয়ে কোনো বিজ্ঞপ্তি জারি করা হয়নি। গত ১১ মার্চ কেন্দ্রীয় সরকারের পক্ষ থেকে বিবৃতি দিয়ে সারা দেশে সিএএ বিধি কার্যকর করার কথা জানানো হয়।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *