আজ মীর মশাররফ হোসেনের ১৭৮তম জন্মবার্ষিকী

নিজস্ব প্রতিবেদক, কুষ্টিয়া :

 

প্রখ্যাত সাহিত্যিক মীর মশাররফ হোসেনের আজ ১৭৮তম জন্মবার্ষিকী।১৮৪৭ সালের ১৩ই নভেম্বর কুষ্টিয়ার কুমারখালীর গৌর নদীর তীরে লাহিনীপাড়ায় জন্মগ্রহণ করেন মীর মশাররফ হোসেন।

তার বাবার নাম সৈয়দ মীর মুয়াজ্জম হোসেন ও মায়ের নাম দৌলতন নেছা।

বাঙালি মুসলিম সমাজের প্রথম প্রবাদপ্রতিম ও জনপ্রিয় এই লেখক গল্প, উপন্যাস, নাটক, কবিতা, আত্মজীবনী, প্রবন্ধ ও ধর্মবিষয়ক ৩৭টি গ্রন্থ রচনা করেছেন। তার রচনাসমগ্রর মধ্যে বিষাদ সিন্ধু, জমিদার দর্পণ, রত্নাবতী, গৌরি সেতু, বসন্ত কুমারী, সংগীত লহরী, উদাসীন পথিকের মনের কথা, মদিনার গৌরব, গো-জীবন, বেহুলা গীতাভিনয়, গাজী মিয়ার বোস্তানী ও বৃহৎ হীরক খনি উল্লেখযোগ্য।কারবালার যুদ্ধকে উপজীব্য করে রচিত বিষাদ সিন্ধু তার সবচেয়ে জনপ্রিয় সাহিত্যকর্ম।

তার জন্মবার্ষিকী উপলক্ষ্যে তেমন কোনো আয়োজন নেই। শুধু ফুলেল শ্রদ্ধায় নীরবেই শেষ হবে বিষাদ সিন্ধুর রচয়িতা মীর মশাররফ হোসেনের জন্মবার্ষিকী।

মীর মশাররফ হোসেনের ‘আমার জীবনী গ্রন্থ’ থেকে জানা যায়, কুমারখালীর কাঙ্গাল হরিনাথ মজুমদার ছিলেন তার সাহিত্যগুরু। হরিনাথ মজুমদারের সম্পাদনায় প্রকাশিত ‘গ্রামবার্তা প্রকাশিকা’ ও ইশ্বরচন্দ্র গুপ্তের ‘সংবাদ প্রভাকর’ নামক পত্রিকা দুটিতে মশাররফ হোসেনের সাহিত্যচর্চা শুরু হয়। গ্রামবার্তা পত্রিকায় মীর মশাররফ সাহিত্য, দর্শন বিজ্ঞানসহ বিভিন্ন বিষয়ে প্রবন্ধ প্রকাশের পাশাপাশি অত্যন্ত সাহসিকতার সঙ্গে জমিদার ও ব্রিটিশ নীলকরদের অত্যাচারের কাহিনি প্রকাশ করেন। নীল বিদ্রোহের ওপরে ‘জমিদার দর্পণ’ সহ প্রায় ২৫টি গদ্য গ্রন্থ রচনা করে মীর মশাররফ হোসেন বাংলা সাহিত্যের ইতিহাসে প্রথম আধুনিক মুসলিম গদ্য শিল্পীর মর্যাদা লাভ করেন। তার সম্পাদিত ‘হিতকরী’ পত্রিকায় বাউল শিরোমনি লালন ফকিরের ওপর প্রথম লালন জীবন দর্শন মহাত্মা লালন ফকির প্রকাশিত হয়।
কালজয়ী সাহিত্যিক মীর মশাররফ হোসেন ১৮৪৭ সালের আজকের দিনে কুষ্টিয়া জেলার কুমারখালী উপজেলা লাহিনীপাড়া গ্রামে মামার বাড়িতে জন্ম গ্রহণ করেন। কুষ্টিয়ায় জন্ম হলেও মীর মশাররফ হোসেনের শৈশব, কৈশোর, যৌবন সবই কেটেছে রাজবাড়ীর বালিয়াকান্দি উপজেলার নবাবপুর ইউনিয়নের পদমদীতে। জীবনের শেষ দিনগুলোও পদমদীতেই অতিবাহিত করেন তিনি। তার সহধর্মিণী বিবি কুলসুমও এখানে মারা যান। তার পিতা মীর মোয়াজ্জেম হোসেনসহ পরিবারের অন্য সদস্যদেরও পদমদীর নবাব বাড়ির পারিবারিক কবরস্থানে সমাহিত করা হয়। ১৯১১ সালের ১৯শে ডিসেম্বর তিনি মৃত্যবরণ করলে তাকে রাজবাড়ী জেলার বালিযাকান্দির নবাবপুর ইউনিয়নের পদমদী গ্রামে সমাহিত করা হয়।
তার লেখা উপন্যাস “উদাসী পথিকের মনের কথা” (১৮৯০), “গাজী মিয়ার বস্তানী”, “জমিদার দর্পণ” “জমিদার দর্পণ” (১৮৭৩), আত্মকাহিনীমূলক রচনাবলী “আমার জীবনী”, “বিবি কুলসুম” (১৯১০) সহ তার লেখা বিভিন্ন গল্প, উপন্যাস, নাটক, কবিতা, প্রবন্ধ ও ধর্মবিষয়ক ৩৭ টি বই বাংলা সাহিত্যের অমর সৃষ্টি।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *