মহাকাশযান যাত্রীবাহী প্রেরণ মিশন ব্যর্থ হলো

অনলাইন ডেস্ক : যুক্তরাষ্ট্রের বিমান নির্মাতা প্রতিষ্ঠান বোয়িংয়ের নতুন মহাকাশ যান উৎক্ষেপণের পর তা নির্ধারিত গন্তব্যে পৌঁছাতে ব্যর্থ হয়েছে। শুক্রবার সকালে যুক্তরাষ্ট্রে ফ্লোরিডা থেকে দ্য স্টারলাইনার নামের মহাকাশ যানটি রকেটে করে সফলভাবেই উৎক্ষেপণ করা হয়েছিলো। কিন্তু ৩০ মিনিট পরই এতে যান্ত্রিক গোলাযোগ দেখা দিলে এটি সঠিক পথ থেকে ছিটকে পড়ে এবং থেমে যায়। ফলে সেটি আর আন্তর্জাতিক মহাকাশ স্টেশনে পৌঁছাতে পারেনি।

নাসা জানিয়েছে, স্টারলাইনার এর উৎক্ষেপণকারী রকেট থেকে আলাদা হওয়ার পর নিজের ইঞ্জিন চালু করতে গিয়ে খুব বেশি জ্বালানি পুড়িয়ে ফেলেছে। ফলে নির্ধারিত গন্তব্যে পৌঁছানোর মতো জ্বালানি অবশিষ্ট নেই তার।

স্টারলাইনার এখন তার মিশন অসম্পূর্ণ রেখেই পৃথিবীতে ফিরে আসবে বলে জানিয়েছের নাসার প্রশাসক জিম ব্রিডেনস্টাইন।

তিনি আরো বলেন, মহাকাশযানটিতে বিজ্ঞানীরা থাকলে হয়তো তারা সমস্যার সমাধান করতে পারতেন এবং মিশন সম্পূর্ণ করতে পারতেন। কিন্তু পরীক্ষামূলক এই উৎক্ষেপণে মহাকাশযানটিকে খালিই পাঠানো হয়েছিলো। এবং পৃথিবী থেকে সেটিকে নিয়ন্ত্রণ করা হচ্ছিলো। সেটিকে এখন পৃথিবীতে ফিরিয়ে আনা হবে।

পরীক্ষামূলক এ মহাকাশ যাত্রায় শুরুতেই যাওয়ার কথা রয়েছে বিজ্ঞানীদের। তবে পরবর্তীতে স্পেস ট্রাভেলের বাণিজ্যিক কার্যক্রম শুরু করার পরিকল্পনার কথা জানিয়েছে বোয়িং কর্তৃপক্ষ।

চলতি সপ্তাহেই সেভেন থ্রি সেভেন ম্যাক্স মডেলের বিমান তৈরি বন্ধের ঘোষণা দিয়েছে বোয়িং কর্তৃপক্ষ। দুটি ভয়াবহ দুর্ঘটনার পর এ সিদ্ধান্ত নিয়েছে বোয়িং। ঘোষণাটি হতাশার হলেও এর একই সপ্তাহে এসেছে আশার খবর। মহাকাশে উৎক্ষেপণের জন্য পুরোপুরি প্রস্তুত প্রতিষ্ঠানটির ‘সিএসটি-হান্ড্রেড’ স্টারলাইনার নামের মহাকাশযানটি।

আগামী বছরই ক্রুসহ স্পেস ক্রাফটটি ফের মহাকাশে পাঠানোর পরিকল্পনা রয়েছে।

নাসা বাণিজ্যিক ক্রু প্রোগ্রামের ম্যানেজার ক্যাথি লডারাস বলেন, যখন কোনো পরিকল্পনায় অক্লান্ত শ্রম দেয়া হয়, এটা আর স্বপ্ন থাকে না। বাস্তবে ধরা দেয়। আমাদের সব ধরনের প্রস্তুতি শেষ। আর কয়েকটি ধাপ আছে, যেগুলো শেষ হলেই এ মহাকাশযান মহাকাশের উদ্দেশে রওনা হতে পারবে।

বাণিজ্যিকভাবে মহাকাশে যান পাঠানোর পরিকল্পনা করা প্রতিষ্ঠানগুলোকে ৬৮০ কোটি ডলার দিচ্ছে যুক্তরাষ্ট্রের ন্যাশনাল এরোনোটিক্স অ্যান্ড স্পেশ অ্যাডমিনিস্ট্রেশন। যেন প্রতিষ্ঠানগুলো রকেট এবং ক্যাপসুল সিস্টেম বানাতে পারে। তাহলে যুক্তরাষ্ট্রে তৈরি স্পেস ক্রাফট দিয়ে মানুষকে মহাকাশ অভিযানে নিয়ে যেতে পারবে নাসা। স্পেসএক্স এখনো মানুষ নিয়ে মহাকাশে যেতে সক্ষম হয়নি। আর ২০১১ সালেই শাটল প্রকল্প বন্ধ করে দেয় নাসা। বর্তমানে রাশিয়া এ সেবা দিলেও মহাকাশ যাত্রায় প্রতি সিটে গুণতে হবে ৮ কোটি ডলার।

সূত্র: বিবিসি, রয়টার্স

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *