অনলাইন ডেস্ক : করোনাভাইরাসের টিকা আবিষ্কারে মরিয়া গোটা বিশ্ব। এরই মধ্যে বিশ্বের বাঘাবাঘা বিজ্ঞানীরা উঠেপড়ে লেগেছেন এই টিকা আবিষ্কারের গবেষণায়। অনেকেই আশার বাণী শোনালেও এখনও শতভাগ কার্যকর টিকা তৈরির সফলতা কেউ দেখাতে পারেনি। সারাবিশ্বে টিকা আবিষ্কারে প্রায় ১০০টি প্রকল্প নিয়ে কাজ করছেন বিজ্ঞানীরা। তবে এগুলোর মধ্যে ৬টি প্রকল্পকে শীর্ষে রাখা হয়েছে।
এতো সব খবরের মধ্যেও সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ হিসেবে দেখা হচ্ছে টিকা বাজারজাতকরণ নিয়ে। কেননা, বিশ্বে ৪৬ লাখ মানুষ করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন। সামনে আরও আক্রান্ত হবেন। এক্ষেত্রে টিকার মিলিয়ন মিলিয়ন ডোজ উৎপাদন ও বাজারজাতের বিষয়টিও ভাবাচ্ছে গবেষকদের।
আসুন জেনে নিই করোনার শীর্ষ ৬টি টিকা সম্পর্কে
মর্ডানা-নোভাভ্যাক্স:
গত সপ্তাহে আমেরিকার মডার্না এবং নোভাভ্যাক্স ওষুধ কোম্পানি যে টিকা নিয়ে কাজ করছে, তারা সেটা মানবদেহে পরীক্ষামূলকভাবে প্রয়োগের দ্বিতীয় পর্যায়ে রয়েছে। এতে সফল হওয়ার বিষয়ে অনেক আশাবাদী বলে দাবি করছে তারা।
অক্সফোর্ড ও এনআইএইচ:
যুক্তরাজ্যের অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয় এবং মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের জাতীয় স্বাস্থ্য ইনস্টিটিউট (এনআইএইচ) যৌথভাবে একটি টিকা নিয়ে কাজ করছে। এটি ছয়টি রেসাস ম্যাকাক্যুয়িসের (বানর) প্রয়োগ করে দেখা গেছে তাদের দেহে যে এন্টিবডি তৈরি হয়েছে, তা করোনার বিরুদ্ধে লড়তে সক্ষম। টিকাটি নিউমোনিয়া থেকে সুরক্ষা দেয়।
বৃটিশ-আমেরিকা টোবাকো:
বিশ্বের দ্বিতীয় বৃহত্তর সিগারেট উৎপাদনকারী ব্রিটিশ-আমেরিকান টোবাকো সম্প্রতি জানিয়েছে, তাদের তামাক পাতা ভিত্তিক টিকাটি মানবদেহে পরীক্ষামূলকভাবে প্রয়োগের জন্য প্রস্তুত। ইতিমধ্যে আমেরিকার খাদ্য ও ওষুধ প্রশাসন সে অনুমতিও দিয়েছে
কোম্পানির তরফ থেকে জানানো হয়েছে, তাদের টিকাটি করোনা প্রতিরোধ সক্ষম হিসেবে প্রাথমিক প্রমাণ পাওয়া গেছে।
অক্সফোর্ড প্রকল্প:
অক্সফোর্ডের প্রকল্পটি বেশ আলোচনা হচ্ছে দুনিয়া জুড়ে। ChAdOx1 CoV-19 নামের টিকাটি নিয়ে যৌথভাবে এস্ট্রোজেনেকার সঙ্গে কাজ করছে অক্সফোর্ড। যার নেতৃত্ব দিচ্ছেন সারাহ গিলবার্ট। তিনি ইতিমধ্যে বলেছেন, সেপ্টেম্বরের মধ্যে তারা কয়েক মিলিয়ন ডোজ টিকা উৎপাদন করতে চান। ইতিমধ্যে উৎপাদন শুরুও হয়ে গেছে।
টিকাটি ব্যয়বহুল হবে না। সিঙ্গেল ডোজের টিকা হবে এটি। এটা পৃথিবীব্যাপী সরবরাহ করা হবে বলে জানিয়েছে অক্সফোর্ড জেনার ইনস্টিটিউটের পরিচালক এড্রিয়ান হিল।
ইনোভিও ফার্মা:
মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ভিত্তিক ইনোভিও ফার্মাও টিকা নিয়ে কাজ করছে। মানবদেহে পরীক্ষামূলকভাবে প্রয়োগ তারা শুরু করেছে। ফলাফল জুনে আসবে। তাদের টিকাটি ভাল এন্টিবডি তৈরি করতে সক্ষম। একই সঙ্গে সুনির্দিষ্ট প্রতিরোধ ক্ষমতা গড়ে তুলতে পারে বলে দাবি ইনোভিও ফার্মার। এই প্রকল্পের জন্য এরা ১৭ মিলিয়ন ডলার ব্যয় করছে।
ক্যানসিনো বায়োলজিকস:
চিনা ভিত্তিক ক্যানসিনো বায়োলজিকস কানাডার জাতীয় গবেষণা কাউন্সিলের সঙ্গে একটি টিকা নিয়ে কাজ করছে। যার নাম দেওয়া হয়েছে Ad5-nCoV। মানবদেহে পরীক্ষামূলকভাবে প্রয়োগের দিক থেকে এটি বর্তমানে দ্বিতীয় পর্যায়ে আছে। এই কোম্পানিটি এর আগে ইবোলা ভাইরাসের টিকা উৎপাদনের অনুমোদন পেয়েছিল।