মদ বিক্রি করে ২৩৩ কোটি টাকা আয়, উৎপাদন বাড়াচ্ছে কেরু

নিউজ ডেস্ক:

 

দেশের রাষ্ট্রীয় মালিকানাধীন অ্যালকোহল বিক্রির প্রতিষ্ঠান ‘কেরু অ্যান্ড কোম্পানি’। গত বছরের জুলাই থেকে ডিসেম্বর, এ ৬ মাসে অ্যালকোহল বিক্রি করে আয় করেছে ২৩২ কোটি ৯৬ লাখ টাকা। এমনটাই জানা গেছে কোম্পানিটির একটি অভ্যন্তরীণ অডিট রিপোর্ট থেকে।

 

কোম্পানিটির কর্মকর্তারা বলছেন, চলতি মৌসুমে এই আয় আরও বাড়বে। কারণ প্রতিষ্ঠানটি উৎপাদন বৃদ্ধির সাথে সাথে দেশজুড়ে বিক্রয় ও বিক্রয় কেন্দ্র বাড়িয়েছে।

 

কোম্পানির তথ্য মতে, ২০২২-২৩ অর্থবছরের প্রথম ৬ মাসে জুলাই থেকে ডিসেম্বর পর্যন্ত অ্যালকোহল বিক্রি থেকে আয় হয়েছে ২৩২ কোটি ৯৬ লাখ টাকা। ২০২১-২২ অর্থবছরের জুলাই থেকে ডিসেম্বর পর্যন্ত আয় হয়েছিল ১৯২ কোটি ৩৮ লাখ টাকা। অর্থাৎ আগের বছরের তুলনায় ৪০ কোটি ৫৮ লাখ টাকা বেশি আয় হয়েছে। আয় বেড়েছে ২১ শতাংশ।

 

এর আগে ২০২১-২২ অর্থবছরে পুরো সময়ে সর্বোচ্চ বিক্রির রেকর্ড ছিল কোম্পানিটির। সেই সময় কোম্পানিটি আয় করে ৪২৯ কোটি ৩৫ লাখ টাকা। ওই বছর রাজস্ব আদায় ও কোম্পানি পরিচালনাসহ সব খরচ বাদে কোম্পানি প্রকৃত মুনাফা করে ৪৯ কোটি ১৭ লাখ টাকা। তার আগের ২০২০-২১ পুরো অর্থবছরে অ্যালকোহল বিক্রি করে আয় হয়েছিল ৩১৪ কোটি ৮৭ লাখ টাকা। এর মধ্যে প্রকৃত মুনাফা হয়েছিল ১৪ কোটি ৬৩ লাখ টাকা।

 

দেশে রাষ্ট্রীয় মালিকানার ৮৪ বছরের পুরনো একমাত্র অ্যালকোহল উৎপাদনকারী কেরু মোট ৯টি ব্যান্ডের অ্যালকোহল উৎপাদন করে।

 

কোম্পানিটির হিসাব অনুযায়ী, প্রতিমাসে প্রায় ২১ হাজার কেসেরও বেশি অ্যালকোহল বিক্রি করছে কেরু। প্রতিষ্ঠানটি ১৭৫ মিলিলিটার, ৩৭৫ মিলিলিটার ও ৭৫০ মিলিলিটারের বোতলে অ্যালকোহল বাজারজাত করে। একটি কেসে ৭৫০ মিলিলিটারের ১২টি, ৩৭৫ মিলিলিটারের ২৪টি এবং ১৭৫ মিলিলিটারের ৪৮টি বোতল থাকে।

 

এ ছাড়া রূপপুর ও কুয়াকাটায় ১টি করে বিক্রয় কেন্দ্র এবং রাজশাহী ও রামুতে ১টি করে ওয়্যারহাউস নির্মাণের মাধ্যমে বাজার সম্প্রসারণের পরিকল্পনাও করেছে কেরু।

 

কেরুর কর্মকর্তারা বলছেন, চুয়াডাঙার দর্শনায় অবস্থিত কারখানা আরও বেশি উৎপাদনে সক্ষম। বর্তমানে উৎপাদন সক্ষমতার মাত্র ৫০ শতাংশ ব্যবহৃত হচ্ছে। স্বয়ংক্রিয় পদ্ধতি অবলম্বনের মাধ্যমে উৎপাদন দ্বিগুণ করার পরিকল্পনা হাতে নিয়েছে। এ নিয়ে ১০২ কোটি টাকা ব্যয়ে একটি প্রকল্পের কাজ চলমান।অ্যালকোহলের পাশাপাশি ভিনেগার, হ্যান্ড স্যানিটাইজার, সার, চিনি ও গুড়ের মতো অন্যান্য পণ্যও উৎপাদন করে থাকে এ প্রতিষ্ঠানটি।

 

কেরুর ব্যবস্থাপনা পরিচালক মোশাররফ হোসেন জানান, কেরুর উৎপাদন আন্তর্জাতিক মানের। দেশিয় বাজারে চাহিদা বাড়ছে। এটির আরও আধুনিকায়ন এখন সময়ের দাবি।

 

কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, কেরুর উৎপাদিত অ্যালকোহল বিক্রির পরিমাণও বেড়েছে। গত বছর কোম্পানি প্রতি মাসে গড়ে ১২ থেকে ১৩ হাজার কেস বিক্রি করেছিল। বিগত ৬ মাসে গড়ে ১৪ থেকে ১৫ হাজার বিক্রি অব্যাহত রয়েছে। সারা দেশে কেরুর ১৩টি ওয়্যারহাউস ও ৩টি বিক্রয়কেন্দ্র ছিল। বর্তমানে কক্সবাজারে একটি নতুন বিক্রয় কেন্দ্র চালু হয়েছে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *